পার্বত্য চট্টগ্রামের দুর্গম ও অরক্ষিত সীমান্ত এলাকা সুরক্ষায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) নতুন করে দুটি ব্যাটালিয়ন গঠনের পরিকল্পনা নিয়েছে। এ দুটি ব্যাটালিয়নের আওতায় নতুন করে স্থাপন করা হবে ৩০টি বর্ডার পোস্ট (বিওপি)। পরিকল্পনাটি বর্তমানে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের চূড়ান্ত অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।
রোববার (৫ অক্টোবর) খাগড়াছড়ির রামগড়ের ৪৩ বিজিবি ব্যাটালিয়নের আওতায় চট্টগ্রামের মীরসরাই উপজেলার করেরহাটের পাহাড় ও বনাঞ্চল বেষ্টিত দুর্গম সীমান্ত এলাকায় স্থাপিত ‘ছোট ফরিংগা বিওপির’ আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনকালে বিজিবি চট্টগ্রাম দক্ষিণ পূর্ব রিজিয়নের রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সোহেল আহমেদ সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের সীমান্ত বাংলাদেশের সমতল জেলার সীমান্ত এলাকার মতো গতানুগতিক নয়। সেখানকার সীমান্ত এলাকা অত্যন্ত দুর্গম। যেমন রাঙ্গামাটির বাঘাইহাট ও মারিশ্যার ব্যাটালিয়নের আওতাধীন এমন দুর্গম এলাকায় বিওপি আছে, যেখানে পায়ে হেটে ৪ দিন লাগে যেতে। ফলে ওই সব এলাকা কভার করা দুরূহ হয়ে পড়ে। দক্ষিণ-পূর্ব রিজিয়নের আওতায় পার্বত্য জেলার দুর্গম ও অরক্ষিত সীমান্ত এলাকায় নতুন দুটি ব্যাটালিয়ন স্থাপিত হলে বিশাল দুর্গম সীমান্ত এলাকা সুরক্ষা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
তিনি আরও বলেন, সীমান্ত সুরক্ষায় সরকারের নেওয়া সিদ্ধান্তের নতুন ৭৩টি বিওপির মধ্যে দেশের বিভিন্ন সীমান্তে ইতোমধ্যে ৬৯টি বিওপি স্থাপিত হয়েছে। খুব সহসা আরও চারটি বিওপি স্থাপনের কাজ সম্পন্ন হবে। তার মধ্যে গত এক বছরে স্থাপিত নতুন ১০টি বিওপির মধ্যে দক্ষিণ-পূর্ব রিজিয়িনের আওতাধীন সীমান্তে স্থাপন করা হয় পাঁচটি। নতুন বিওপি স্থাপনের ফলে সীমান্ত সুরক্ষা, চোরাচালানরোধসহ সব সীমান্ত অপরাধ দমনে বিজিবির সক্ষমতা ও দক্ষতা বেড়েছে।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সোহেল আহমেদ বলেন, রামগড় ৪৩ ব্যাটালিয়নের আওতাধীন ফটিকছড়ির দাঁতমারা ইউনিয়ন ও মীরসরাইয়ের করেরহাট ইউনিয়নের মধ্যবর্তী প্রায় পাঁচ কিলোমিটার সীমান্ত এলাকা পাহাড় ও বনভূমি বেষ্টিত দুর্গম হওয়ায় বিজিবি আভিযানিক তৎপরতা পরিচালনা কষ্টকর ছিল। ছোট ফরিংগা বিওপি স্থাপনের ফলে দীর্ঘদিন অনেকটা অরক্ষিত থাকা বিশাল এ সীমান্ত এলাকা এখন সুরক্ষিত হলো। সীমান্ত এলাকার বাসিন্দাদের নিরাপত্তাসহ বিজিবির আভিযানিক কার্যক্রম আরও গতিশীল হবে।
পার্বত্য চট্টগ্রামে সীমান্ত সুরক্ষার পাশাপাশি শান্তি শৃঙ্খলারক্ষার বিজিবি দায়িত্বওপালন করে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, সীমান্ত সুরক্ষা, চোরাচালানরোধ, সীমান্তবর্তী অধিবাসীদের নিরাপত্তায় বিজিবি এখন আস্থার প্রতীক।
৪৩ বিজিবি ব্যাটালিয়নের ১২তম বিওপি ছোট ফরিংগা উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বিজিবির গুইমারা সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার কর্নেল মো. মিজানুর রহমান ও ৪৩ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. আহসান উল ইসলাম ছিলেন।
এমকে/টিকে