সাবেক সংসদ সদস্য ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক গোলাম মাওলা রনি মনে করেন, ‘ড. ইউনূসই হতে পারেন হাসিনাকে ফিরিয়ে আনার মাস্টারমাইন্ড।’ রনি বিশ্লেষণ করেছেন, ‘এই পরিকল্পনা কেবল ব্যক্তিগত উদ্যোগ নয়, বরং রাজনৈতিক শক্তি, জনগণ এবং বিভিন্ন দলের সমন্বয়ের ফলাফল।’ তিনি আরো জানিয়েছেন, ‘ইতিহাসে দেখা গেছে শত্রুতা কখনো বন্ধুত্বে রূপ নিতে পারে এবং বিশ্বাসের বেহিসাবিও ঘটে। ড. ইউনূসের পদক্ষেপ, সম্ভাব্য রাজনৈতিক সহযোগিতা এবং সরকারের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সব মিলিয়ে হাসিনার প্রত্যাবর্তনের চিত্রকে আরো জটিল এবং রহস্যময় করেছে।
মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) নিজের ইউটিউব চ্যানেলে গোলাম মাওলা রনি এসব কথা জানান। গোলাম মাওলা রনি বলেন, ‘ভবিষ্যতে ড. ইউনূসের সঙ্গে হাসিনার কোনো সম্পর্ক হতে পারে কি না সেটি একটি প্রশ্ন। এ ছাড়া হাসিনা যদি বাংলাদেশে আসার চেষ্টা করেন তিনি কি পারবেন?’
রনি মনে করেন, ‘হাসিনা যদি বাংলাদেশে আসতে চান তাহলে কয়েকটি বিষয় ঘটতে হবে। প্রথমত, ভারতের ঝুঁকি নেওয়া প্রয়োজন হতে পারে; প্রয়োজনে তারা তাকে বাংলাদেশে পাঠানোর জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নিতে পারে।
দ্বিতীয়ত, বাংলাদেশের শক্তির বলয় বিশেষ করে আমলাতন্ত্র তাকে আহ্বান জানাতে পারে। তৃতীয়ত, দেশের জনগণ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে শেখ হাসিনার জন্য অপেক্ষা করবে। চতুর্থত, রাজনৈতিক দলগুলো বিশেষ করে বিএনপি ও জামায়াত কোনো একটি কারণে ঐক্যবদ্ধ হয়ে তাকে আনতে পারে। পঞ্চমত, ড. মুহাম্মদ ইউনূস নিজেও মনে করতে পারেন যে শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে আনা উচিত যেমনটা জিয়াউর রহমান করেছিলেন।
সে ক্ষেত্রে সরকার তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।’গোলাম মাওলা রনি বলেন, ‘ড. ইউনূসের সঙ্গে হাসিনার বন্ধুত্ব হওয়া কোনো বিষয় নয়, ইতিহাসে এমন হাজারো ঘটনা ঘটেছে। ড. ইউনূস সেফ এক্সিটের কথা ভাবেন। ড. ইউনূস আশা করেছিলেন তারা ভালো কাজ করবেন, কিন্তু তার উপদেষ্টারা সেই বিশ্বাস পূরণ করেননি। সেই অবস্থায় ড. ইউনূস আশ্রয় চাইতে পারেন।
তিনি চাইবেন তাকে সুরক্ষা দেওয়া হোক।’
তিনি বলেন, ‘ইতিহাস দেখলে বোঝা যায়, সবচেয়ে বড় শত্রুর কাছ থেকেও সবচেয়ে বেশি মিত্রতা হয়েছে আর আপনজনের সঙ্গে কখনো কখনো শত্রুতার কাহিনিও রয়েছে। ড. ইউনূস যাদের বিশ্বাসের যোগ্য বলে মনে করেছিলেন তারা সবাই তার সঙ্গে বেঈমানি করেছেন। প্রত্যেকেই তার বিশ্বাস ভেঙেছেন। এ ছাড়া যারা শুধু টাকা উপার্জনের হিসাব-নিকাশে মনোযোগী তারা সাধারণ মানুষের মতো চিন্তা করেন না। ব্যাংকের লোকরা খুব হিসাবি। সে ক্ষেত্রে ড. ইউনূস বসে বসে প্রতিটি পদক্ষেপ গণনা করছেন কী করলে কী হবে তা হিসাব করছেন।’
গোলাম মাওলা রনি বলেন, ‘অতীতে যদি আমরা বিএনপি এবং আওয়ামী লীগের মধ্যে শত্রুতা দেখি যেমন জিয়াউর রহমান এবং শেখ হাসিনার শত্রুতা অথবা এরশাদ এবং বেগম জিয়ার শত্রুতা। তখন দেখা যায় যে রাজনৈতিক শত্রুতাও কখনো বন্ধুত্বে রূপ নিতে পারে। জিয়াউর রহমানের হত্যাকাণ্ডে এরশাদের সরাসরি জড়িত থাকার কথা বলা হয়, কিন্তু তার পরও বিএনপি এরশাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব স্থাপন করেছেন। রাজনীতিতে এমন ঘটনা বহুবার ঘটেছে। আওয়ামী লীগের সঙ্গে জামায়াতে বন্ধুত্বও ৮৬ এবং ৯৬ সালে হয়েছে। ভবিষ্যতেও এমন হতে পারে।’
এসএস/টিকে