দীর্ঘ ৮ বছর পর স্বামী শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবর জিয়ারত করলেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। কোনো আড়ম্বর ছাড়াই বুধবার (৮ অক্টোবর) রাত ১১টায় তিনি সমাধিস্থলে যান। এসময় তার সঙ্গে ছিলেন কেবল বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন ও ডা. সাহাবুদ্দিন।
দীর্ঘদিন পর শেরে বাংলা নগরে স্বামীর কবরের পাশে এসে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। সেখানে তিনি বেশ কিছুক্ষণ সময় কাটান। দুহাত তুলে দোয়া করেন।
সঙ্গে থাকা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন ও ডা. সাহাবুদ্দিনও দোয়া করেন। বিএনপি নেত্রীর নিরাপত্তার বিষয়টি চিন্তা করে দলীয় নেতাকর্মীরা সমাধিস্থলের বাইরে থেকেই দোয়ায় অংশ নেন।
আগে থেকে জানানো না হলেও তাৎক্ষনিক খবর পেয়ে বেগম জিয়াকে একনজর দেখার জন্য শেরে বাংলা নগরে নেতাকর্মীদের ঢল নামে।
কবর জিয়ারতের পর ডা. জাহিদ হোসেন বলেন, এটা যেহেতু ব্যক্তিগত প্রোগ্রাম। উনি কাউকে জানাতে চাননি। তারপরেও আমাদের যেসব নেতাকর্মী খবর পেয়েছেন তারা অনেকেই এসেছেন।
এটা একান্ত ব্যক্তিগত এবং পারিবারিক কর্মসূচি। উনি (বেগম খালেদা জিয়া) তাৎক্ষণিকভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যাতে দেশের মানুষের কষ্ট না হয়, রাস্তায় চলাচলকারী মানুষের কষ্ট না হয় সেজন্য তিনি গভীর রাতটাকে বেছে নিয়েছেন। উনার কারণে মানুষের কষ্ট হোক সেটা উনি চান না।
ডা. জাহিদ জানান, বেগম জিয়া সেখানে কোরআন তেলাওয়াত করেছেন, আল্লাহর দরবারে দোয়া করেছেন, দরুদ পড়েছেন, ফাতেহা পাঠ করেছেন।
জিয়াউর রহমানের কবর জিয়ারত শেষে বেরিয়ে যাওয়ার সময় নেতাকর্মীরা বেগম জিয়াকে অভিবাদন জানান।
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাগারে যাওয়ার আগে স্বামীর সমাধিস্থলে এসেছিলেন বেগম খালেদা জিয়া। এরপর এটাই প্রথম তার সেখানে যাওয়া।
বিএনপি নেত্রী দুই বছরের বেশি সময় কারাগারে ছিলেন। ২০২০ সালের ২৫ মার্চ শর্ত সাপেক্ষে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার তাকে ৬ মাসের জামিনে মুক্তি দেয়। এরপর বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত বেগম জিয়াকে বহুবার হাসপাতালে যেতে হয়। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতন হলে সম্পূর্ণ মুক্ত হন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। এরপরে তিনি সুচিকিৎসার জন্য গত ৭ জানুয়ারি লন্ডনে যান। পাঁচ মাস চিকিৎসার পর গত ৬ মে দেশে ফেরেন।
ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, বেগম জিয়া রাজনীতি থেকে অবসর নেননি। তিনি ও তার ছেলে তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপি পরিচালিত হচ্ছে।
কেএন/টিকে