ফি দিতে না পেরে, ভারতে মেঝেতে বসেই পরীক্ষা দিতে হলো ১ শিক্ষার্থীকে!

ফি দিতে না পারায় ভারতীয় এক স্কুল কর্তৃপক্ষ এক ছাত্রকে মেঝেতে বসিয়ে পরীক্ষা দিতে বাধ্য করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে মহারাষ্ট্রের ভিওয়ান্ডির সালাহউদ্দিন আইয়ুবি মেমোরিয়াল উর্দু উচ্চ বিদ্যালয়ে।
অপমানের শিকার হওয়া ওই ছাত্রের নাম ফাহাদ ফয়েজ খান। গত ৩রা অক্টোবর রাতে কাজ থেকে বাড়ি ফিরে ফাহাদের বাবা ফয়েজ খান ছেলেকে কাঁদতে দেখেন। কান্না থামিয়ে ফাহাদ বাবাকে জিজ্ঞেস করে, "বাবা, ফি কবে দেবে?" সেদিনের স্কুলে পাওয়া অপমানের জেরেই সে বাবাকে এই প্রশ্নটি করেছিল।

অভিভাবক স্কুলের প্রথম সেমিস্টারের পরীক্ষার ফি দিতে পারেননি। এর জেরেই স্কুল কর্তৃপক্ষ ফাহাদকে ক্লাসের বাকি ছাত্রদের থেকে আলাদা করে মেঝেতে বসে পরীক্ষা দিতে বাধ্য করে। ছাত্রটির বাবা ফয়েজ খান জানান, এটি ছিল ফাহাদের প্রথম সেমিস্টারের প্রথম পরীক্ষা। শুধুমাত্র পরীক্ষার ফি বকেয়া থাকার কারণে তাকে অন্য ছাত্রদের থেকে দূরে মেঝেতে বসিয়ে পরীক্ষা দিতে হয়েছিল। ফয়েজ তার ছেলেকে সান্ত্বনা দেন এবং পরের দিন বিষয়টি সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাকে স্কুলে যেতে বলেন।

পরের দিন, অর্থাৎ, ৪ অক্টোবর, ফয়েজ স্কুলে গিয়ে ছেলের খোঁজ করেন। ফয়েজ বলেন, স্কুল কর্তৃপক্ষ তাকে জানায় ফাহাদ তৃতীয় তলায় বসে আছে, কিন্তু তাকে উপরে যেতে দেওয়া হয়নি। কোনোমতে জোর করে তিনি উপরে উঠে যান এবং সেখানে গিয়ে দেখেন, তার ছেলে ফাহাদ মেঝেতে একটি খবরের কাগজের ওপর বসে পরীক্ষা দিচ্ছে। তিনি পরীক্ষার পরিদর্শকের কাছে এর কারণ জানতে চাইলে তাকে অধ্যক্ষের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেওয়া হয়। এরপর ফয়েজ তার ছেলেকে সেখান থেকে নিয়ে আসেন। এরপর ফয়েজ ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে সরাসরি থানায় যান এবং পুরো ঘটনাটি জানান। সব শুনে পুলিশ দ্রুত অধ্যক্ষ ও সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। একই সঙ্গে পুলিশ শিশুটিকে স্কুলে ফেরত পাঠায়, যাতে সে বাকি পরীক্ষা শেষ করতে পারে।

ফয়েজ খানের দাবি, ফাহাদের মোট স্কুল ফি ২,৫০০ টাকা, যার মধ্যে তিনি ১,২০০ টাকা দিয়ে দিয়েছেন। বকেয়া মাত্র ১,৩০০ টাকার জন্য তাঁর ছেলেকে এভাবে সকলের সামনে অপমান করা হলো। পরিবারটি অভিযোগ করেছে, স্কুল প্রশাসনের এই আচরণ ছাত্রটির আত্মসম্মান এবং অধিকারের স্পষ্ট লঙ্ঘন, যার ফলে তাদের ছেলে অত্যন্ত অপমানিত বোধ করেছে।

এবি/এসএন

Share this news on:

সর্বশেষ

img
গোপালগঞ্জে ছাত্রদল নেতা বহিষ্কার Oct 10, 2025
img
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে কাজ করছে সরকার: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা Oct 10, 2025
img
এস্তেভোঁ ও রদ্রিগোর জোড়া গোল, দক্ষিণ কোরিয়াকে ৫-০ গোলে হারাল ব্রাজিল Oct 10, 2025
img
প্রতীক নিয়ে এনসিপির আপত্তি জনগণ ভালোভাবে নেবে না : হাবিব-উন-নবী সোহেল Oct 10, 2025
img
সাভারে কোটি টাকার বিষ্ণু মূর্তি উদ্ধার, আটক ১ Oct 10, 2025
img
শিক্ষার্থীর পুষ্টিতে স্কুল ফিডিংয়ে ডিম যুক্তের তাগিদ উপদেষ্টা ফরিদার Oct 10, 2025
img
বিশ্ববাজারে কমলো জ্বালানি তেলের দাম Oct 10, 2025
img
রাজনৈতিক ঐক্য রক্ষায় কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে ড. ইউনূস: মোস্তফা ফিরোজ Oct 10, 2025
img
জয়সওয়ালের দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতে প্রথম দিন ভারতের Oct 10, 2025
img
খামেনি ও নেতানিয়াহু’র দেশের মধ্যে মধ্যস্থতার ভূমিকায় আছে রাশিয়া, দাবি পুতিনের Oct 10, 2025
img
শুধু হাসিনা বললে সম্মান দেওয়া হবে, তাকে মনস্টার হাসিনা বলতে হবে: মির্জা ফখরুল Oct 10, 2025
img
‘নোয়াখালী বিভাগ চাই’ স্লোগান দিয়ে শাহবাগে বিক্ষোভ Oct 10, 2025
img
পুরুষরা ৮ ঘণ্টা ধরে কাজ করে যাচ্ছে, আমি মেয়ে বলেই দ্বিচারিতা: দীপিকা Oct 10, 2025
img
কুমিল্লা বিভাগ ঘোষণা না হলে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধের বার্তা দিলেন বিএনপি নেতা Oct 10, 2025
img
‘শরৎ উৎসব’ বাতিল নয়, স্থগিত করা হয়েছে: চারুকলার ডিন Oct 10, 2025
img
ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য নির্বাচিত না করায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ হোয়াইট হাউসের Oct 10, 2025
img
লিবিয়া ফেরত আরও ৩০৯ বাংলাদেশি Oct 10, 2025
img
বিসিএস প্রশ্নে এলো আয়নাঘর, শহীদ আবু সাঈদ ও ঐকমত্য কমিশন Oct 10, 2025
img
বিশ্বকাপ ফুটবলের খেলা শুরু হবে নতুন সময়ে Oct 10, 2025
img
পুলিশের শীর্ষ পদে ব্যাপক রদবদল Oct 10, 2025