কেবল জয়ের হিসেব মেলালেই হবে না, খেলতে হবে ভালো ফুটবল, মেলে ধরতে হবে মান- কোচের এমন চাওয়ায় বেশ ভালোভাবেই সাড়া দিল সেলেসাওরা। তারুণ্য ও অভিজ্ঞতার মিশেলে গড়া ব্রাজিলিয়ান আক্রমণভাগ মুহুর্মুহু আক্রমণ শাণাল, কোণঠাসা হয়ে রইল দক্ষিণ কোরিয়া। দাপুটে ফুটবল খেলে, গোল উৎসব করে, বিশ্বকাপের জন্য চূড়ান্ত প্রস্তুতিপর্ব শুরু করল কার্লো আনচেলত্তির দল।
সিউলের ওয়ার্ল্ড কাপ স্টেডিয়ামে শুক্রবার প্রীতি ম্যাচটি ৫-০ গোলে জিতেছে ব্রাজিল। দুটি করে গোল করেছেন এস্তেভোঁ ও রদ্রিগো। একবার জালের দেখা পেয়েছেন ভিনিসিউস জুনিয়র।
এর আগে দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে সবশেষ কাতার বিশ্বকাপে দেখা হয়েছিল ব্রাজিলের। সেই ম্যাচেও অসাধারণ পারফরম্যান্সে ৪-১ গোলে জিতেছিল পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। যদিও পরের ম্যাচেই হেরে কোয়ার্টার-ফাইনাল থেকে ছিটকে পড়েছিল দলটি।
প্রথম ১০ মিনিটে দূর থেকে রদ্রিগো ও ভিনিসিউসের একটি করে লক্ষ্যভ্রষ্ট শটের পর, ত্রয়োদশ মিনিটে চমৎকার গোলে এগিয়ে যায় ব্রাজিল। দারুণ রক্ষণচেরা পাস বাড়ান ব্রুনো গিমারাইস, চোখের পলকে ছুটে গিয়ে ছয় গজ বক্সের মুখে ডান পায়ের শটে বল জালে পাঠান এস্তেভোঁ।
কিছুক্ষণের মধ্যে হেডে আবার জালে বল পাঠান কাসেমিরো। তবে নিজেই অফসাইডে ছিলেন ব্রাজিলিয়ান অধিনায়ক। একের পর এক আক্রমণে একচেটিয়া চাপ ধরে রেখে খেলতে থাকে ব্রাজিল। দারুণ সব সুযোগও পাচ্ছিল তারা; তবে ব্যবধান বাড়ছিল না।
২৭তম মিনিটে মাথেউস কুইয়ার পাস ডি-বক্সে দারুণ পজিশনে পেয়ে অনায়াসে ফ্লিক করতে পারতেন ভিনিসিউস; কিন্তু ব্যাকহিল করে বল হারান তিনি। পরের মিনিটে খুব কাছ থেকে লক্ষ্যভ্রষ্ট হেড করেন এদের মিলিতাও!
৪১তম মিনিটে আরেকটি দর্শনীয় গোলে ব্যবধান দ্বিগুণ হয়। ডি-বক্সের বাঁ দিক থেকে কাটব্যাক করেন ভিনিসিউস, প্রতিপক্ষকে ধোঁকা দিতে রদ্রিগো ডামি করে ছেড়ে দেন বল, এরপর কাসেমিরোর পাস ধরে এই পা ওই পা করে দুই ডিফেন্ডারের পাশ দিয়ে কোনাকুনি শটে ঠিকানা খুঁজে নেন রেয়াল মাদ্রিদ ফরোয়ার্ড।
দ্বিতীয়ার্ধেও একইভাবে আক্রমণাত্মক শুরু করে ব্রাজিল এবং দুই মিনিটের মধ্যে আরও দুটি গোলও পেয়ে যায় তারা।
৪৭তম মিনিটে ডি-বক্সের বাম দিকে ডিফেন্ডার কিম মিন-জে বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে এস্তেভোঁর পায়ে মেরে বসেন। আর বল ধরে ক্ষীপ্রতায় এগিয়ে বাঁ পায়ের শটে নিজের দ্বিতীয় গোলটি করেন চেলসি ফরোয়ার্ড।
আন্তর্জাতিক ফুটবলে আট ম্যাচে তার গোল হলো তিনটি। সেপ্টেম্বরে বিশ্বকাপ বাছাইয়ে চিলির বিপক্ষে জাতীয় দলের হয়ে প্রথম জালের দেখা পান ১৮ বছর বয়সী ফুটবলার।
ওই ধাক্কা সামলে নেওয়ার আগেই চতুর্থ গোলটি হজম করে স্বাগতিকরা। ভিনিসিউসের পাস ডি-বক্সে ফাঁকায় পেয়ে কোনাকুনি শটে গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন রদ্রিগো।
প্রথম ঘণ্টার পুরোটা কোণঠাসা হয়ে থাকা দক্ষিণ কোরিয়া ৬৫তম মিনিটে লক্ষ্যে প্রথম শট নিতে পারে। এতক্ষণ কোনোরকম চ্যালেঞ্জের মুখে না পড়া ব্রাজিল গোলররক্ষক বেন্তো ঝাঁপিয়ে কিম জিনের শটটি ঠেকিয়ে দেন।
৭৭তম মিনিটে স্কোরলাইনে নিজের নাম তোলেন ভিনিসিউস। প্রতি-আক্রমণে মাথেউস কুইয়ার পাস মাঝমাঠে ধরে দ্রুত গতিতে সবাইকে পেছনে ফেলে ছুটে যান রিয়াল মাদ্রিদ তারকা, ডি-বক্সে ঢুকে গতি কমিয়ে দেন তিনি, ছুটে আসা ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে ঠাণ্ডা মাথার শটে পরাস্ত করেন গোলরক্ষককে।
এশিয়া সফরের দ্বিতীয় প্রীতি ম্যাচে আগামী মঙ্গলবার স্বাগতিক জাপানের বিপক্ষে খেলবে ব্রাজিল।
এমআর/টিকে