বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর চট্টগ্রাম বিভাগের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মীর হেলাল বলেছেন, ‘বাংলাদেশে নারীর ক্ষমতায়নের প্রথম যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছিলেন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। তিনিই প্রথম রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে নারীদের জন্য কর্মসংস্থান, শিক্ষা, এবং নেতৃত্বের সুযোগ সৃষ্টি করে নারী জাগরণের ভিত্তি স্থাপন করেন। আজ সেই ধারাবাহিকতায় তার সুযোগ্য সন্তান, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশনায়ক তারেক রহমান আগামীর বাংলাদেশে নারীদের সর্বোচ্চ মর্যাদা ও ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করবেন।’
শনিবার (১১ অক্টোবর) দুপুরে চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় আয়োজিত ‘নারীর মর্যাদা সুরক্ষা ও ক্ষমতায়ন’ শীর্ষক বিশাল মহিলা সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সমাবেশটি অনুষ্ঠিত হয় দেশনায়ক তারেক রহমান ঘোষিত রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে।
ব্যারিস্টার মীর হেলাল বলেন, ‘‘বিএনপি সরকার গঠন করলে প্রতিটি পরিবারকে ‘ফ্যামিলি কার্ড’-এর আওতায় আনা হবে এবং সেই কার্ডের মালিক হবেন পরিবারের প্রধান মহিলা। এটি হবে নারীর অর্থনৈতিক নিরাপত্তা ও সিদ্ধান্তগ্রহণের একটি বাস্তব প্রতীক। একইসঙ্গে নারীদের জন্য সহজ শর্তে ক্ষুদ্র ঋণের ব্যবস্থা করা হবে, যাতে তারা স্বাবলম্বী হয়ে পরিবার ও সমাজে নেতৃত্ব দিতে পারেন।”
তিনি বলেন, ‘দেশনায়ক তারেক রহমান বিশ্বাস করেন—যে নারীরা সমাজে প্রতিনিধিত্ব করেন, তারাই প্রকৃতপক্ষে রাষ্ট্রের উন্নয়ন ও মানবিক অগ্রগতির চালিকাশক্তি। আগামী বাংলাদেশ হবে এমন একটি রাষ্ট্র যেখানে নারীরা শুধু অংশগ্রহণকারী নন, বরং নীতি-নির্ধারক ও নেতৃত্বদাতা হিসেবেও নিজেদের ভূমিকা রাখবেন।’
মীর হেলাল বলেন, ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান আমাদের একটি মৌলিক শিক্ষা দিয়ে গেছেন— দল-মত, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে আমাদের প্রথম ও প্রধান পরিচয় হচ্ছে আমরা বাংলাদেশি। তিনি এই দেশকে এক অসাম্প্রদায়িক, ঐক্যবদ্ধ জাতি হিসেবে গড়ে তোলার যে স্বপ্ন দেখেছিলেন, সেটিই আজ বিএনপির রাজনৈতিক দর্শনের কেন্দ্রবিন্দু।’
মীর হেলাল বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সব সময় ধর্মকে পুঁজি করে রাজনীতি করেছে, বিভাজন সৃষ্টি করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চেয়েছে। তারা ধর্মের ব্যবসা করেছে, জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। কিন্তু বিএনপি সেই রাজনীতি করে না। বিএনপি বিশ্বাস করে—বাংলাদেশের প্রতিটি দেশপ্রেমিক নাগরিকই বিএনপির শক্তি, আর বিএনপি তাদের শক্তি। আমাদের ভোটব্যাংক কোনো ধর্ম, বর্ণ, বা সম্প্রদায় নয়; আমাদের ভোটব্যাংক ১৮ কোটি দেশপ্রেমিক বাংলাদেশি।’
তিনি আরো বলেন, ‘বিএনপি যদি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জনসমর্থনের ভিত্তিতে বিজয় অর্জন করে সরকার গঠন করে, তাহলে আমরা প্রতিটি নাগরিকের সমান অধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করব। বিশেষ করে নারীদের সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা হবে আমাদের সরকারের প্রধান অগ্রাধিকার। ব্যারিস্টার মীর হেলাল স্মরণ করিয়ে দেন, ‘শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান আমাদের দিয়েছেন জাতীয়তাবাদের পরিচয়—যেটি একটি অসাম্প্রদায়িক, সমষ্টিগত জাতি গঠনের দৃষ্টিভঙ্গি। সেই আদর্শের ধারাবাহিকতায় দেশনায়ক তারেক রহমানও আজ বিএনপির রাজনৈতিক দর্শন ও ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা পরিচালনা করছেন।’
তিনি বলেন, ‘তারেক রহমান কিছুদিন আগে বিবিসি বাংলার এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন—‘সবার আগে বাংলাদেশ। এই তিনটি শব্দই আমাদের রাজনৈতিক অঙ্গীকার এবং ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গঠনের মূলমন্ত্র।’
দেশের সার্বভৌমত্ব ও জনগণের অধিকার রক্ষায় বিএনপি সবসময় কাজ করে আসছে উল্লেখ করে ব্যারিস্টার হেলাল বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, জনগণের শক্তিই রাষ্ট্রের শক্তি। ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে বিএনপি বিপুল বিজয় অর্জন করবে, এবং দেশনায়ক তারেক রহমান বাংলাদেশের নেতৃত্বে নতুন যুগের সূচনা করবেন।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মাস্টার রফিক আহমদ, সরোয়ার হোসেন মাসুদ, জাগির আহমদ, আমিনুল ইসলাম, দিল মোহাম্মদ মনজু, এম মনছুর উদ্দিন, বিএনপি নেতা আবদুল মইয়ুম চৌধুরী ছোটন, রফিক ডিলার, কাশেম, মোজাম্মেল হক, জাহাঙ্গীর, আবু সাদেক,জসিম, জামাল আনছারী, মোস্ততাক আহমেদ, ইউসুফ মাস্টার, আবদুল হক প্রমুখ।
আইকে/টিকে