সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনি বলেছেন, একটি বিষয় মানুষের মুখে মুখে ফুটছে। সেটি হলো খুব দ্রুতই আওয়ামী লীগের কিছু নেতাকে ফাঁসিতে ঝুলানো হবে। এটা খুব ব্যাপকভাবে আলোচনা হচ্ছে।
গোলাম মাওলা রনি বলেন, ‘যখন কোনো একটা বিষয় জনগণের মুখে মুখে চলে আসে তখন সেটি ঘটে। এই মানুষের মুখে এক সময় বের হয়েছিল যে, শেখ হাসিনা পালিয়ে যাবে। আওয়ামী লীগের পতন হবে। তারা পালানোর রাস্তা পাবে না।
২০২২, ২৩ সালে এই কথা জনগণের মুখ থেকে এত বিস্তৃতি লাভ করল যে, আওয়ামী লীগের নেতারা বলা শুরু করলেন—আমরা পালাই না। আমরা পালাব না। আমরা ভয় পাই না।’
তিনি বলেন, ‘ঠিক এই সময়ে মানুষের মুখ দিয়ে অনেক কথা বের হচ্ছে।
যেমন—কেউ বলছেন, ইউনূস সরকার ভালো করতে পারবে না, সরকার টিকতে পারবে না। আবার কেউ বলছেন, উপদেষ্টাদের পালাতে হবে, তারা পালানোর জায়গা পাবে না। এই কথাগুলো মানুষের মুখে মুখে ফিরছে। এগুলো বন্ধ করবেন কিভাবে?
তিনি আরো বলেন, ‘আবার একইভাবে বলা হচ্ছে, আওয়ামী লীগের যে নেতাদের আটক করা হয়েছে, নির্বাচনের আগে তাদেরকে ফাঁসিতে ঝুলানো হবে। কিভাবে হবে, কবে হবে; আমরা জানি না।
এটা কিভাবে সম্ভব, আইনগতভাবে সম্ভব কি না; এগুলো আলোচনা হচ্ছে না। কিন্তু মানুষের মুখ দিয়ে বের হচ্ছে যে, নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতাকে ফাঁসিতে ঝুলানো হবে। তাদের নামও জনগণের মুখে মুখে চলে এসেছে। সালমান এফ রহমান, আনিসুল হক, রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনু ও পলকের কথা বলছেন কেউ কেউ। কিন্তু কেউ শাজাহান খান, দীপু মনি, কামরুল হাসানদের কথা বলছেন না, তারাও কিন্তু কারাগারে আছেন।’
সাবেক এ সংসদ সদস্য বলেন, ‘আমি বুঝি না, মানুষ কেন ইনু-মেননের নাম বলছেন। রাশেদ খান মেনন কী করেছেন? তিনি তো ভিন্ন একটি দলের প্রধান ছিলেন। তিনি ব্যক্তিগতভাবে দুর্নীতি করেছেন এটা সত্য। কিন্তু তিনি তো বিরক্তিকর ছিলেন না। মাঝে মাঝে অনেক সত্য কথা বলতেন, যা শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে চলে যেত। ফাঁসির তালিকায় কেন তার নাম আসছে আমি বুঝি না। কিন্তু মানুষের মুখে এটা শুনছি। এটা হয়ে থাকলে বাংলাদেশে একটি নতুন অধ্যায় শুরু হবে।’
তিনি বলেন, ‘বেশিরভাগ মানুষ বলছেন নির্বাচন হবে না। ফেব্রুয়ারিতে তো প্রশ্নই আসে না। ড. ইউনূস ভালো নির্বাচন করতে পারবেন না। এটা যেভাবে বলা হচ্ছে, আবার এর সমান্তরালভাবে বলা হচ্ছে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে, বিএনপি যেভাবেই হোক ক্ষমতায় আসবে। একটা গ্রুপ বলছে নির্বাচন হবে না, আর আরেকটা গ্রুপ বলছে নির্বাচন হবে। কেউ কিন্তু বলছে না যে, আওয়ামী লীগ নেতাদের ফাঁসি দেওয়া যাবে না। কিন্তু নির্বাচনের ব্যাপারে দুটি পক্ষ বিতর্ক করছে। যেখানে বিতর্ক আছে সেখানে কিন্তু অস্তিত্ব থাকে। অর্থাৎ, আজ হোক, কাল হোক নির্বাচন হবে।
কিন্তু নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগকে ভয় দেখানোর জন্য এবং জনগণের মধ্যে আওয়ামী বিদ্বেষ ও আওয়ামী ভীতি তৈরি করার জন্য দলটির নেতাদের ফাঁসিতে ঝুলানোর যে কথা মানুষের মুখে মুখে ফুটছে, এটা ভয়ানক লক্ষণ। তাড়াহুড়া করে কোনো সিদ্ধান্ত কার্যকর করা কিংবা টার্গেট করে কোনো কাজ করলে তার পরিণতি ভালো হয় না।’
আইকে/টিকে