অস্তিত্ব টিকাতে দৌড়াদৌড়িতে এনসিপি : মোস্তফা ফিরোজ

সিনিয়র সাংবাদিক মোস্তফা ফিরোজ বলেছেন, ‘জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে দুই বড় দলের একটি বেছে নিতে হবে। নতুবা দলটির অস্তিত্ব সংকট রয়েছে।’    

তিনি বলেছেন, ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাচনের বিষয়ে সবাই একমত। কিভাবে হবে, কেমনে হবে পদ্ধতি নিয়ে বিতর্ক চলছে।

সে বিতর্ক হয়তো শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে নির্বাচনটা কেমনে হবে? কিভাবে হবে? বিএনপি চেষ্টা করছে জোট গড়ার, আবার জামায়াতও জোট গড়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু তরুণদের যে দল এক বছর আগে যারা সফলভাবে একটা অভ্যুত্থান করল, তারা কী করবে। এনসিপি আছে একটা মহাবিপাকের মধ্যে।

তারা না যেতে পারছে বিএনপিতে, না যেতে পারছে জামায়াতে। এনসিপির অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে দুইটা বড় দলের যেকোনো একটা দলকে তাদের বেছে নিতে হবে।

রবিবার (১২ অক্টোবর) নিজের ইউটিউব চ্যানেলে মোস্তফা ফিরোজ এসব কথা বলেন।

মোস্তফা ফিরোজ বলেন, তারা যদি বিএনপি অথবা জামায়াতে জোট গড়ে আসলেই কি তাদের অস্তিত্ব টিকে থাকবে, সে নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে।

এই দুটির কোনো একটি দলের সঙ্গে যদি তারা জোটবদ্ধ হয়, তা নিয়েও কিন্তু তারা শঙ্কার মধ্যে আছে। যেমন তারা মনে করছে যে বিএনপির সঙ্গে যদি জোট বাঁধে তাহলে মোটামুটি তাদের যে একটা মধ্যপন্থা চরিত্র আছে, এটা ঠিক থাকবে। কিন্তু সমস্যা হলো বিএনপির প্রার্থী তো এক না, একাধিক। ধানের শীষের নমিনেশন না পেলে স্বতন্ত্র দাঁড়াবে। সেখানে যদি এনসিপির জন্য ছাড়ও দেওয়া হয় তারপরও সেখান থেকে এনসিপি প্রার্থীর জিতে আসা কঠিন।

আবার নির্বাচন কমিশন বলছে, যার যার দলীয় প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করতে হবে। তাহলে অবস্থাটা কি দাঁড়াবে?

মোস্তফা ফিরোজ বলেন, জামায়াতের সঙ্গে জোট বা সমঝোতায় গেলে এনসিপির গায়ে একটি নির্দিষ্ট মতাদর্শের ট্যাগ লাগবে। এই যে ট্যাগটা, এটাও তারা চায় না। কারণ তারা ইতিমধ্যেই বলেছে তারা মধ্যপন্থী দল। তারা কোনো উগ্রবাদী মতাদর্শের লোক না। জামায়াত যেহেতু একটা ধর্মীয় দল।

সুতরাং ওই ধর্মীয় দলের কোনো ট্যাগ তারা লাগাতে চায় না। এ নিয়ে তাদের দলের মধ্যেই নানা বিভক্তি। একপক্ষ ছুটছে জামায়াতের পেছনে, আরেক পক্ষ ছুটছে বিএনপির পেছনে। আবার আরেক পক্ষ ছুটছে এর বাইরে তৃতীয় কোনো জোট করা যায় কি না। এ জন্য গণতন্ত্র মঞ্চসহ নানা দলের সঙ্গে তারা ইতিমধ্যে কথাও বলেছে। কিন্তু বিষয়টা এখনো নিশ্চিত হয়নি। তৃতীয় যে জোট সেই জোটটা এখনো ভাসাভাসা অবস্থার মধ্যে আছে। তারা সংগঠিত না। আর সেখানে যদি তারা যুক্ত হয় তাহলে কি জিতে আসতে পারবে। এই নিয়ে তারা আলাপ-আলোচনা করছে এবং এখনো পর্যন্ত তার কিন্তু সুরাহা হয়নি।

তিনি বলেন, ইতিমধ্যে কিন্তু এনসিপি নেতাদের নানা রকম হতাশা বের হয়ে আসছে। যে কারণে তারা বলছে, উপদেষ্টারা কথা রাখেনি। তারা ‘সেফ এক্সিট চাচ্ছে; কেউ কেউ এজন্য বিভিন্ন দলের সঙ্গে তারা লিয়াজোঁ করছে; তারা আখের গোছাচ্ছে’ এসব কথাবার্তা বলছে। উপদেষ্টারাও এখন উত্তর দিতে শুরু করেছে। এগুলো সবই হচ্ছে হতাশার বহিঃপ্রকাশ।

তিনি আরো বলেন, ‘অভ্যুত্থানের মধ্যদিয়ে গড়ে ওঠা দলটি যদি নিজেদের মতো করে শক্তি নিয়ে দাঁড়াত তাহলে অন্য দলগুলো তাদেরকে দলে ভিড়াতে চাইত। কিন্তু এখন এনসিপিকে ছুটতে হচ্ছে, এনসিপির পেছনে কেউ ছুটছে না। এনসিপি ছুটতেছে। ইতিমধ্যে এক বছর পার হতে না হতেই দলের দুর্বলতা ফুটে উঠছে। সব মিলিয়ে কঠিন এক বাস্তবতার মধ্যে আছে। তারা না যেতে পারছে বিএনপিতে, আবার না পারছে জামায়াতের দিকে যেতে। এই অবস্থায় এনসিপি এখন দোদুল্যমান।

এমআর/এসএন 

Share this news on:

সর্বশেষ

img
পাঞ্জাবে ম্যাচ চলাকালে খেলোয়াড়কে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা Dec 18, 2025
img
আবারও চোট শুভমানের, বিশ্বকাপের আগে নতুন উদ্বেগ ভারতের Dec 18, 2025
img
চট্টগ্রামের আলোচিত 'সন্ত্রাসী’ সাজ্জাদ ও তার স্ত্রীর জামিন স্থগিত Dec 18, 2025
img
বিশ্ববাজারে আবারও বাড়ল স্বর্ণের দাম Dec 18, 2025
img
এমবাপের জোড়া গোলে তালাভেরাকে হারিয়ে শেষ ষোলোয় রিয়াল মাদ্রিদ Dec 18, 2025
img
মুস্তাফিজের দুর্দান্ত বোলিং, রোমাঞ্চকর ম্যাচে তবুও হার দুবাই ক্যাপিটালসের Dec 18, 2025
img
টাইব্রেকারে ফ্লামেঙ্গোকে ২-১ গোলে হারিয়ে গ্লোবাল চ্যাম্পিয়ন পিএসজি Dec 18, 2025
img
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে বিকৃত করলে দেশের জনগণ তাদের ক্ষমা করবে না : ইশরাক Dec 18, 2025
img
চাঁপাইনবাবগঞ্জে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি নাহিদ গ্রেপ্তার Dec 18, 2025
img
নিজের প্রতি বিশ্বাসই হলো সবচেয়ে বড় ঢাল: রাণী মুখার্জি Dec 18, 2025
img
তারেক রহমানের ফ্লাইটে দেশে ফিরতে নেতাকর্মীদের হিড়িক, শেষ সব টিকিট Dec 18, 2025
img
নতুন লুকে ভক্তদের চমকে দিলেন মেগাস্টার শাকিব খান Dec 18, 2025
img
মেসির ভিডিওতে উজ্জ্বল কারিনার ছবি, কাকে ধন্যবাদ জানালেন বেবো? Dec 18, 2025
img
‘হাওয়া’র চেয়েও বড় চ্যালেঞ্জ ‘রইদ’, ৬ মাস চুলে শ্যাম্পু দেননি তুষি! Dec 18, 2025
img
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২, ২৪ ঘণ্টায় ডিএমপির হাতে গ্রেপ্তার ৩৯২ Dec 18, 2025
img
ইউরোপের নেতাদের ‘ছোট শূকর’ হিসেবে অভিহিত করলেন পুতিন Dec 18, 2025
img
দেশব্যাপী অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২ অভিযানে একদিনে আটক ১৩৯৮ Dec 18, 2025
img
ওসমান হাদির চিকিৎসা আপাতত সিঙ্গাপুরেই চলবে: ডা. আহাদ   Dec 18, 2025
img
জামিন বাণিজ্যে যারা লিপ্ত আছেন, তাদেরকে বলছি এবার থামুন: আসিফ নজরুল Dec 18, 2025
img
ওসমান হাদির মৃত্যুর সংবাদ সত্য নয়: ইনকিলাব মঞ্চ Dec 18, 2025