সাশ্রয়ী এআই চ্যাটবট সাবস্ক্রিপশনের বাজারে সরাসরি গুগলের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নেমেছে ওপেনএআই।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রতিষ্ঠান ওপেনএআই তাদের সাশ্রয়ী সাবস্ক্রিপশন প্ল্যান ‘চ্যাটজিপিটি গো’ এর সম্প্রসারণ অব্যাহত রেখেছে। নতুন করে এশিয়ার ১৬টি দেশে এই সেবা চালু করেছে, যার মধ্যে বাংলাদেশও রয়েছে। এর মাসিক সাবস্ক্রিপশন ফি ৫ ডলারেরও কম।
যেসব দেশে এই সেবা চালু হয়েছে সেগুলো হলো: বাংলাদেশ, আফগানিস্তান, ভুটান, ব্রুনেই দারুসসালাম, কম্বোডিয়া, লাওস, মালয়েশিয়া, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, নেপাল, পাকিস্তান, ফিলিপাইন, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড, পূর্ব তিমুর এবং ভিয়েতনাম।
তবে মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, ফিলিপাইন ও পাকিস্তানের মতো কয়েকটি দেশের ব্যবহারকারীরা স্থানীয় মুদ্রায় মূল্য পরিশোধের সুযোগ পাবেন। অন্যান্য দেশগুলোর ব্যবহারকারীদের জন্য মার্কিন ডলারে প্রায় ৫ ডলার পরিশোধ করতে হবে। তবে স্থানীয় কর কাঠামোর ওপর ভিত্তি করে চূড়ান্ত মূল্যে কিছুটা পরিবর্তন আসতে পারে।
চ্যাটজিপিটি গো প্ল্যানে ব্যবহারকারীরা দৈনিক বার্তা পাঠানোর সীমা বৃদ্ধি, ছবি তৈরি এবং ফাইল বা ছবি আপলোড করার মতো বাড়তি সুবিধা পাবেন। এতে ফ্রি সংস্করণের চেয়ে দ্বিগুণ মেমরি দেওয়া হয়েছে, যা ব্যবহারকারীদের আরও ব্যক্তিগত ও প্রাসঙ্গিক উত্তর পেতে সাহায্য করবে।
ওপেনএআই জানিয়েছে, দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় তাদের সাপ্তাহিক সক্রিয় ব্যবহারকারীর সংখ্যা সম্প্রতি চার গুণ পর্যন্ত বেড়েছে, যা এই সম্প্রসারণের পেছনে মূল প্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে। এর আগে ভারতে ২০২৪ সালের আগস্টে চ্যাটজিপিটি গো প্রথম চালু হয়েছিল, এরপর ইন্দোনেশিয়ায় সেপ্টেম্বর মাসে। ওপেনএআই আরও জানায়, ভারতে এই প্ল্যান চালুর পর থেকে তাদের পেইড সাবস্ক্রাইবারের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে।
সাশ্রয়ী এআই চ্যাটবট সাবস্ক্রিপশনের বাজারে ওপেনএআই সরাসরি গুগলের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নেমেছে। গুগল তাদের ‘গুগল এআই প্লাস’ নামের একটি প্ল্যান ইন্দোনেশিয়ায় সেপ্টেম্বরে চালু করার পর ৪০টিরও বেশি দেশে সম্প্রসারণ করেছে। এই প্লাস টিয়ারে ব্যবহারকারীরা গুগলের সবচেয়ে উন্নত এআই মডেল ‘জেমিনাই ২.৫ প্রো’ ব্যবহারের সুযোগ পান। এর সঙ্গে রয়েছে ছবি ও ভিডিও তৈরির বিভিন্ন ক্রিয়েটিভ টুলস, যেমন ডিজাইনের জন্য ‘ফ্লো’, ছবি রিমিক্সিংয়ের জন্য ‘হুইস্ক’, এবং ভিডিও তৈরির জন্য ‘ভিও ৩ ফাস্ট’। পাশাপাশি ২০০ গিগাবাইট ক্লাউড স্টোরেজও দেওয়া হয়।
এই সম্প্রসারণ এমন এক সময়ে এলো যখন ওপেনএআইয়ের ব্যবহারকারীর সংখ্যাও বাড়ছে দ্রুতগতিতে। চলতি সপ্তাহে সান ফ্রান্সিসকোতে অনুষ্ঠিত কোম্পানির ‘ডেভডে ২০২৫’ সম্মেলনে প্রধান নির্বাহী স্যাম অল্টম্যান ঘোষণা দেন, চ্যাটজিপিটির সাপ্তাহিক সক্রিয় ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৮০০ মিলিয়নে পৌঁছেছে, যা আগস্টে ছিল ৭০০ মিলিয়ন।
ওই অনুষ্ঠানে ওপেনএআই একটি বড় পরিবর্তনের কথাও জানায়। এখন থেকে চ্যাটজিপিটি শুধু একটি চ্যাটবট না থেকে অ্যাপ চালু করার একটি প্ল্যাটফর্মে রূপান্তরিত হচ্ছে। এটি অনেকটা অ্যাপ স্টোরের মতো একটি ইকোসিস্টেম তৈরি করবে, যেখানে স্পটিফাই, জিলো, কোর্সেরার মতো বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অ্যাপ সরাসরি চ্যাটজিপিটির ভেতরেই ব্যবহার করা যাবে।
চ্যাটজিপিটি বিভাগের প্রধান নিক টারলি টেকক্রাঞ্চকে বলেন, “আগামী কয়েক বছরে আমরা চ্যাটজিপিটিকে এমন এক অবস্থায় নিয়ে যেতে চাই, যেখানে এটি একটি অপারেটিং সিস্টেমের মতো কাজ করবে।”
তিনি আরও যোগ করেন, “আপনি যদি লিখতে চান, তার জন্য অ্যাপ থাকবে; কোড করতে চান, তার জন্য অ্যাপ থাকবে; এমনকি পণ্য বা সেবা নিয়ে কাজ করতে চাইলে, সেখানেও অ্যাপ পাওয়া যাবে।”
আইকে/এসএন