রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু), হল সংসদ ও সিনেটের ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনের প্রচারণা শেষ হচ্ছে আজ মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর)। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী, আজ রাত ১২টা পর্যন্ত প্রার্থীরা প্রচারণা চালাতে পারবেন। ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে আগামী বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর)।
শেষ দিনের প্রচারণা ঘিরে পুরো ক্যাম্পাসে বিরাজ করছে উৎসবমুখর পরিবেশ। প্রার্থীরা ছুটে যাচ্ছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে, জানাচ্ছেন নিজেদের কর্মপরিকল্পনা ও প্রতিশ্রুতি। বিভিন্ন বিভাগের সামনে ও আবাসিক হলগুলোতে চলছে সরাসরি প্রচারণা, পোস্টার ও হ্যান্ডবিল বিতরণ এবং শুভেচ্ছা বিনিময়। বিশেষ করে আমতলা, পরিবহন মার্কেট, বুদ্ধিজীবী চত্বর, শহিদ মিনার, চারুকলা ও কৃষি অনুষদ, পশ্চিম পাড়া এলাকা এবং বিভিন্ন অ্যাকাডেমিক ভবনের সামনে প্রার্থীদের ব্যাপক উপস্থিতি দেখা গেছে।
ড. মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ অ্যাকাডেমিক ভবনের সামনে প্রচারণা চালানোর সময় কথা হয় রাকসুর ইতিহাসে প্রথম নারী ভিপি পদপ্রার্থী তাসিন খানের সঙ্গে। তিনি বলেন, আজ যেহেতু প্রচারণার শেষ দিন, আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি সবার কাছে পৌঁছাতে। তবে আমাদের সীমাবদ্ধতা হলো, স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে এখনো সবার কাছে পুরোপুরি পৌঁছাতে পারিনি। স্বতন্ত্র প্রার্থীদের এক হাতে সবকিছু সামলাতে হয়- এটা বড় একটি চ্যালেঞ্জ।
এ সময় ছাত্রদল সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ নতুন প্রজন্ম’ প্যানেলের ভিপি পদপ্রার্থী শেখ নূর-উদ্দীন আবীর বলেন, আমাদের প্যানেলের বৈচিত্র্যতা নিয়ে শিক্ষার্থীরা ব্যাপক সাড়া দিচ্ছেন। বিশেষ করে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা আমাদের ভালোভাবে গ্রহণ করছেন, কারণ তাদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তির দাবিতে আমরা আন্দোলন করেছিলাম। আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করেছি শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছাতে, আর যারা আমাদের সঙ্গে কথা বলেছেন, তারা ইতিবাচক সাড়া দিয়েছেন।
আমতলায় প্রচারণায় ব্যস্ত ছিলেন ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেলের ভিপি পদপ্রার্থী মোস্তাকুর রহমান জাহিদ। প্রচারণা কেমন চলছে- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, দীর্ঘ ৩৫ বছর পর রাকসু নির্বাচন হতে যাচ্ছে, ফলে ক্যাম্পাসে বাড়তি আমেজ তৈরি হয়েছে। বারবার নির্বাচন পেছানোয় আমরা দীর্ঘ সময় পেয়েছি প্রচারণার জন্য। শিক্ষার্থীদের কাছে কয়েকবার করে যাওয়ার সময় হয়েছে, তারাও আমাদের সানন্দে গ্রহণ করছেন। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আমরা ভালো সাড়া পাচ্ছি।
অনেক বছর পর নির্বাচন হওয়ায় ভোটারদের অংশগ্রহণ নিয়ে কিছুটা অনিশ্চয়তা প্রকাশ করে তিনি আরও বলেন, আশা করি, সবকিছু ঠিক থাকলে অধিকাংশ শিক্ষার্থীই ভোট দিতে আসবে।
প্রসঙ্গত, রাকসু নির্বাচনে ২৩টি পদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ২৪৭ জন প্রার্থী। এর মধ্যে ভিপি পদে ১৮ জন, জিএস পদে ১৩ জন এবং এজিএস পদে ১৬ জন প্রার্থী রয়েছেন। ছাত্রদল ও শিবির সমর্থিত প্যানেলসহ মোট ১১টি প্যানেল ঘোষণা করা হয়েছে।
এছাড়া, সিনেটের ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনের ৫টি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৫৮ জন এবং ১৭টি হলে হল সংসদের ১৫টি পদের বিপরীতে মোট ৫৯৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।রাকসু ও সিনেট নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ২৮ হাজার ৯০১ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার ১১ হাজার ৩০৫ জন এবং পুরুষ ভোটার ১৭ হাজার ৫৯৬ জন। তফসিল অনুযায়ী, আগামী ১৬ অক্টোবর সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ভোট গণনা শেষে সেদিনই ফলাফল ঘোষণা করা হবে।
ইউটি/টিকে