অন্যের বস্তায় আম ভরে জামায়াতের আত্মতৃপ্ত রাজনীতি : রনি

সাবেক সংসদ সদস্য ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক গোলাম মাওলা রনি বলেছেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে জামায়াতে ইসলামী আজ যেন এমন এক শক্তি, যাদের নিজস্ব বস্তা নেই—তবু অন্যের বস্তায় আম ভরেই তারা খুশি। কখনো আওয়ামী লীগের ছায়ায়, কখনো বিএনপির ভরসায়, আবার কখনো রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার মদদে টিকে থাকার চেষ্টা। এই ধারাই যেন তাদের রাজনৈতিক জীবনের চেনা পথ। সাম্প্রতিক জামায়াতের এক নেতার বক্তব্যে সেই বাস্তবতারই প্রতিধ্বনি—‘যদি পিআর না হয়, গণভোট না হয়, তাহলে জামায়াতের আমও যাবে, ছালাও যাবে।

কথাটা শুনতে সরল হলেও এর ভেতরে লুকিয়ে আছে জামায়াতের বর্তমান রাজনৈতিক দুরবস্থা, নির্ভরতার রাজনীতি আর আত্মতৃপ্তির কঠিন সত্য।

বুধবার (১৫ অক্টোবর) নিজের ইউটিউব চ্যানেলে গোলাম মাওলা রনি এসব কথা বলেন।

গোলাম মাওলা রনি বলেন, রাজনীতির ময়দানে এখন ‘ময়ূরের নাচ’ চলছে। চলছে কার্টুন রাজনীতি, কল্পনার রাজনীতি।

এমন সব লোক আজ সংবিধান ও সংসদ নিয়ে কথা বলছেন, যারা জীবনে কখনো ভোট দেননি, পার্লামেন্ট তো দূরের কথা—প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতাও নেই। অথচ তারা বলছেন, সংসদ কেমন হওয়া উচিত, ভোট কেমন হওয়া উচিত, গণতন্ত্র কেমন হওয়া উচিত। গত ১৪ মাসে এমন অনেক নতুন মুখ রাজনৈতিক আলোচনায় উঠে এসেছে যাদের অনেকেরই রাজনীতির সঙ্গে বাস্তব কোনো সম্পর্ক নেই। রাজনীতিতে এখন এক রকমের রুচির দুর্ভিক্ষ চলছে।

জামায়াতের ‘আমছালা’প্রসঙ্গে রনি বলেন, ‘আম’ ও ‘ছালা’—দুটোই সম্পদের প্রতীক। জামায়াতের ‘আম’ কখনো ছিল আওয়ামী লীগের ছায়ায়, কখনো বিএনপির আশ্রয়ে, কখনো জাতীয় পার্টির সঙ্গে, আবার কখনো ইয়াহিয়া বা টিক্কা খানের আশ্রয়ে। নিজেদের আলাদা কোনো ‘বস্তা’ তারা কখনোই গড়তে পারেনি। সবসময় অন্যের বস্তায় নিজের ‘আম’ ভরে আত্মতৃপ্ত হয়েছে। যেন বলছে—‘এই আমাদের আম, এই আমাদের বস্তা।

জামায়াতের আদর্শ প্রসঙ্গে রনি বলেন,তারা বলে—‘আমরা ইসলামভিত্তিক সমাজ গড়তে চাই, ন্যায়নিষ্ঠ সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে চাই, সৎ মানুষের শাসন আনতে চাই।’ তাদের এই কথাগুলো শুনতে ভালো লাগে কিন্তু গত ১৪ মাসের কর্মকাণ্ড বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়—কাজের সঙ্গে কথার কোনো মিল নেই।

তিনি বলেন, জামায়াতের ‘আমছালা’ এখনও গঠিত হয়নি। তাদের ‘আম’ হলো জনসমর্থন বা এনসিপির অনুকম্পা, আর ‘ছালা’ হলো ড. ইউনূসের রাজনৈতিক ফেভার। কিন্তু এগুলো এখন অস্থিতিশীল, ভাসমান অবস্থায় আছে—‘পিআর পদ্ধতি’ বা ‘গণভোট’ যেভাবেই হোক না কেন, সেই ভরসাটাই এখন অনিশ্চিত।


আইকে/টিএ

Share this news on:

সর্বশেষ

img
মিরপুরের আগুন নিয়ে আহমাদুল্লাহর ফেসবুক পোস্ট Oct 15, 2025
img
এনসিপিকে শাপলার 'কলি' দিতে বললেন রাশেদ খান Oct 15, 2025
img
বিদেশি কর্মীদের নিয়ন্ত্রণে আসছে নতুন ভিসানীতি: বিডা চেয়ারম্যান Oct 15, 2025
img
জুলাই সনদের ‘নোট অব ডিসেন্ট’ বিষয়গুলো একটা সংজ্ঞায়ন প্রয়োজন: আখতার Oct 15, 2025
img
ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন করতে হবে, বিকল্প নেই: সালাহউদ্দিন আহমদ Oct 15, 2025
img
নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতেই হবে : প্রধান উপদেষ্টা Oct 15, 2025
img
৯৫ শতাংশ পুরুষ দ্বিতীয় বিয়ে করতে চায়: সাইমা কুরেশি Oct 15, 2025
img
রাজনৈতিক দলে ভিন্নমত থাকলেও ঐক্যমতের ভিত্তিতে ফ্যাসিবাদ মোকাবিলা সম্ভব: আলী রীয়াজ Oct 15, 2025
img
এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ আগামীকাল Oct 15, 2025
img
হতাশাজনক পারফরম্যান্সের পর দেশে ফিরেই দুয়ো শুনলেন মিরাজরা Oct 15, 2025
img
নভেম্বরে প্রথম বিভাগ ক্রিকেট দিয়ে শুরু হবে নতুন ঘরোয়া মৌসুম Oct 15, 2025
img
আমি আয়নাঘরে ছিলাম: আমির হামজা Oct 15, 2025
img
পঙ্কজ ধীরের শেষকৃত্যে আবেগপ্রবণ সালমান! Oct 15, 2025
img
ক্যামেরার সামনে চলছে চাকসু নির্বাচনের ভোট গণনা Oct 15, 2025
img
চট্টগ্রামের নতুন ডিসি হিসেবে দায়িত্ব পেলেন সাইফুল ইসলাম Oct 15, 2025
img
মসজিদ ব্যবস্থাপনা নীতিমালার গেজেট চলতি মাসেই: ধর্ম উপদেষ্টা Oct 15, 2025
img
‘সেদিন কী হয়েছিল’, ঢাকায় এসে মুখ খুললেন রিপন Oct 15, 2025
img
দীর্ঘ কারাভোগ শেষে কাশিমপুর থেকে মুক্তি পেলেন বিডিআরের ১৫ সদস্য Oct 15, 2025
img
বাংলাদেশ সিরিজ জয়ের পর বিশ্রামে গেলেন রশিদ খান Oct 15, 2025
img

নারী ক্রিকেট

হারের পর জরিমানাও গুনলো ভারত Oct 15, 2025