যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর আব্দুল মতিন বলেছেন, জুলাই আন্দোলনের কারণে শিক্ষার্থীদের কিছুটা ঘাটতি ছিল। পাশাপাশি এবার শিক্ষার্থীদের খাতার যথার্থ মূল্যায়ন হয়েছে। আমরা অসুস্থ প্রতিযোগিতা থেকে বেড়িয়ে আসার কারণে পাসের হার কমেছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে যশোর শিক্ষাবোর্ডে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, কোচিং সেন্টারের বিষয়ে কড়াকড়ি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। কোচিং সেন্টার বন্ধে জেলা প্রশাসককে চিঠি দেওয়া হবে। বিশেষ করে ক্লাসের টাইমে যেনে কোনো ছেলে-মেয়ে কোচিংয়ে যেতে না পারে সে বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সব শিক্ষার্থীকে ক্লাসে ফেরাতে হবে। ক্লাসের উপস্থিতির হার বাড়াতে হবে। এটা না পারলে কোনোভাবেই শিক্ষার মান উন্নয়ন করা সম্ভব হবে না। শূন্য পাসের কলেজের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি করে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে যশোর শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. আসমা বেগম বলেন, ‘এ বছরের ফলাফলে আমরা সন্তুষ্ট নই। আমাদের আশা ছিল ছেলে-মেয়েরা আরও ভালো রেজাল্ট করবে। আমরা শিক্ষার মান উন্নয়নে চেষ্টা করেছি। ছেলে-মেয়েরা তাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করেছে।
তিনি আরও বলেন, জুলাই আন্দােলনে বেশিরভাগ সময়ে ছেলে-মেয়েরা মাঠে ছিল। সময়মতো পড়ার টেবিলে বসতে পারেনি, এ কারণে তাদের এ রেজাল্ট। এর মধ্যে যারা ভালো করেছে তাদের সাফল্য কামনা করছি এবং যারা ভালো করতে পারেনি তারা নতুন উদ্যোমে, নতুন আগ্রহে চেষ্টা করবে বলে আশা রাখি।
এবার এইচএসসি পরীক্ষায় যশোর বোর্ডে ফলাফল বিপর্যয় হয়েছে। এ বছর যশোর বোর্ডে পাসের হার ৫০ দশমিক ২০ শতাংশ। এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৫ হাজার ৯৯৫ শিক্ষার্থী। এর মধ্যে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩ হাজার ৩৮১, মানবিক বিভাগ থেকে ২ হাজার ১৭৯ এবং ব্যবসায় শিক্ষা শাথা থেকে ৪৩৫ জন শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছে। গত বছরের তুলনায় এ বছর পাসের হার ও জিপিএ-৫ প্রাপ্তির সংখ্যা কমেছে।
যশোর শিক্ষাবোর্ডের তথ্য মতে, ২০২৫ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় এক লাখ ১২ হাজার ৫৭৪ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন। যার মধ্যে পাস করেছে ৫৬ হাজার ৫০৯ জন। বিজ্ঞান বিভাগ থেকে পাস করেছেন ১৫ হাজার ৯৩১ পরীক্ষার্থী। মানবিক বিভাগ থেকে ৩৪ হাজার তিনজন ও বাণিজ্য বিভাগ থেকে ৬ হাজার ৬৭৫ জন পরীক্ষার্থী পাস করেছেন। বিজ্ঞান বিভাগে ছেলেদের মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছেন এক হাজার ৭৭২ জন ও মেয়েদের মধ্যে এক হাজার ৬০৯, মানবিক বিভাগে ছেলে ৫৪৪ জন ও মেয়ে এক হাজার ৬৩৫ এবং বাণিজ্য বিভাগে ছেলে ১৬৪ জন ও মেয়ে ২৭১ জন।
গত বছর গড় পাসের হার ছিল ৬৪.২৮ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছিল ৯ হাজার ৭৪৯ জন। গত বছরের তুলনায় এ বছর পাশের হার ও জিপিএ-৫ প্রাপ্তির সংখ্যা কমেছে। এছাড়া শূন্য পাসের কলেজের সংখ্যাও বেড়েছে। শূন্য পাসের কলেজের সংখ্যা ২০টি।
আইকে/এসএন