অন্তর্বর্তী সরকার নিজেদের সেইফটি নিয়ে চিন্তিত: সারজিস

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, ‘অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ক্লিয়ার না করে যখন তাড়াহুড়ো করে দায়সারা স্বাক্ষর করা হয়, তখন আমাদের মনে হয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জনগণের যে আকাঙ্ক্ষা, সেইফটি না দিয়ে নিজেদের সেইফটির কথা বার বার ভাবছে। কীভাবে দায়সারাভাবে এটা পার করা যায়, নির্বাচনের দিনটাতে যাওয়া যায়, তারা সেটা নিয়ে চিন্তিত।’

আজ শুক্রবার বিকেলে পঞ্চগড় সদর উপজেলার টুনিরহাট শহীদ জিয়াউর রহমান ডিগ্রি কলেজ মাঠে এক ফুটবল টুর্নামেন্টের উদ্বোধন করে গণমাধ্যমকর্মীদের এসব কথা বলেন তিনি।

সারজিস বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের একটা দায়সারা ভাব দেখা গিয়েছে। সেইফ এক্সিট মানে দেশ ছেড়ে পালাতে হবে এমন না। এখানে সেইফ এক্সিট দেখা গিয়েছে কোনো মতে জুলাই সনদ নামকাওয়াস্তে স্বাক্ষর করে নির্বাচনের দিকে যেতে পারলেই হলো। এতে সংস্কার হোক আর না হোক, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি থাকুক আর নাই থাকুক, পরবর্তী নির্বাচিত সরকার তা বাস্তবায়ন করুন, আর না করুক। তাদের কাজ কোনোমতে স্বাক্ষর করে যেতে পারলেই হলো।’

এনসিপি নেতা বলেন, ‘আমরা তো তাদের কাছে নতুন করে কিছু চাইনি। এই সনদে আমরা চেয়েছি প্রধান উপদেষ্টা এটার আদেশ জারি করবেন। আমরা ওই ফ্যাসিস্ট সরকারের রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে জারি এগ্রি করি না। আমাদের আহ্বায়ক অনেক আগে থেকেই বলেছেন, আমরা অনেক ছাড় দিয়েছি, ঘোষণাপত্রেও ছাড় দিয়েছি। ঘোষণাপত্র নামকাওয়াস্তে একটা রিটেন পেপার হয়ে বসে আছে। কোনো কার্যকারিতা আমরা দেখছি না। এরকম যদি সনদের ক্ষেত্রে হয়, তাহলে দেখা যাবে কিছুদিন পর অভ্যুত্থানটাই নাই। আবার কিছুদিন পরে দেখা যাবে এই অভ্যুত্থানে যারা যোদ্ধা ছিল, তাদেরকে বিভিন্নভাবে, বিভিন্ন কায়দায় অভিযুক্ত করে একেকজনকে মামলা দেওয়া হবে। এই বিষয়গুলো স্পষ্ট করতে হবে।’

সারজিস আরও বলেন, ‘যেহেতু অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়সারা ভাব দেখিয়েছে, তাই আমরা জুলাই সনদ সাক্ষরের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করিনি। উপদেষ্টাদের অনেকেই তার জায়গা থেকে কাজ করার চেষ্টা করছেন। অনেক রুটিন ওয়ার্ক করছেন। সার্বিকভাবে যতটুকু প্রত্যাশা ছিল ততটুকু হচ্ছে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘জুলাই সনদ স্বাক্ষরের অনুষ্ঠানে অতিথিদের আসনে থাকার কথা ছিল জুলাইযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারদের। কিন্তু আমরা দেখলাম একটা রাজনৈতিক দলের চুক্তির মিলনমেলা। না এখানে কোনো জুলাইযোদ্ধা বা শহীদ পরিবারের জন্য মর্যাদার আসন আছে, না কোনো ব্যবস্থা আছে।

একটা পরিস্থিতিতে তাদের নিজের একটা ক্ষোভ তৈরি হয়- ওই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ সেখানে দেখিয়েছে। কিন্তু এটাকে অন্তর্বর্তীকালিন সরকার প্রশাসনের মাধ্যমে হোক বলেন বা নিজেরাই বলেন, অন্যভাবে ডিল করতে পারত। কিন্তু তারা যেভাবে সেখানে লাঠিচার্জ করেছে, টিয়ারশেল ছুড়েছে, রাবার বুলেট ছুড়েছে। এগুলো খুবই অপ্রত্যাশিত এবং দুঃখজন। এই কালচারগুলো আমাদের যারা জুলাইয়ের যোদ্ধা ছিল, তাদের সাথে কোনোভাবে মেনে নেওয়া যায় না। এর জবাব কীভাবে অন্তর্বর্তীকালিন সরকার দিবে এবং এর দায় কীভাবে তারা নিবে, এই প্রশ্নের উত্তর তাদের কাছ থেকে নেওয়া উচিত।’



আইকে/টিএ

Share this news on:

সর্বশেষ

img
রুপালি গিটার ছেড়ে যাওয়ার ৭ বছর আজ Oct 18, 2025
img
টি-টোয়েন্টিতে দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড ভারতীয় ব্যাটারের Oct 18, 2025
img
১০১ বছর বয়সী জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর মৃত্যু Oct 18, 2025
img
চীনের ওপর ১০০ শতাংশ শুল্ক টেকসই নয়: ট্রাম্প Oct 18, 2025
img
কার কাছে অস্ত্র জমা দেবো? অস্ত্রসমর্পণ নিয়ে প্রশ্ন ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীর Oct 18, 2025
img
৯ বছরে প্রথম এমন দুর্দশায় পড়ল ব্রাজিল Oct 18, 2025
img
বিয়ে করলেন ‘দঙ্গল’ অভিনেত্রী জায়রা! Oct 18, 2025
img
৯ শীর্ষ জেনারেলকে বরখাস্ত করল চীনের কমিউনিস্ট পার্টি Oct 18, 2025
img
অশালীন ভাষায় ভেনিজুয়েলার প্রেসিডেন্টের সমালোচনা করলেন ট্রাম্প Oct 18, 2025
img
বন্দরে বাড়তি মাশুল আরোপ, ট্রেইলার চলাচল বন্ধ Oct 18, 2025
img
সৌদি আরবকে আব্রাহাম চুক্তিতে যুক্ত করতে চান ট্রাম্প Oct 18, 2025
img
নেশায় আসক্ত হয়ে পড়েছিলেন ববি দেওল, আতঙ্কে থাকত পরিবার Oct 18, 2025
img
দুপুরের মধ্যে ২ জেলায় ঝড়বৃষ্টির আভাস Oct 18, 2025
img
বৈধতার বদলে নতুন বিতর্ক জন্ম দিতে পারে গণভোট : জিল্লুর রহমান Oct 18, 2025
img
জেনে নিন, আজ দেশে কত দামে বিক্রি হচ্ছে স্বর্ণ Oct 18, 2025
img
পাকিস্তানি বিমান বাহিনীর অভিযানে কান্দাহার প্রদেশে নিহত ৪০ Oct 18, 2025
img
শহীদ মিনারে এক সপ্তাহ ধরে এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা, আজ কালো পতাকা মিছিল Oct 18, 2025
img
পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি হামলায় ১১ ফিলিস্তিনি আহত Oct 18, 2025
img
বাংলাদেশ-উইন্ডিজ ওয়ানডে সিরিজ শুরু হচ্ছে আজ Oct 18, 2025
img
এল ক্লাসিকোর আগে সুসংবাদ পেল বার্সেলোনা Oct 18, 2025