জাহেদ উর রহমান

এনসিপি কি ড. ইউনূসের ওপর হতাশার দায় চাপাচ্ছে?

রাজনৈতিক বিশ্লেষক জাহেদ উর রহমান বলেছেন, ‘গণ-অভ্যুত্থানের মুখপাত্র ও এনসিপির ঘনিষ্ঠ মুখ হাসনাত আব্দুল্লাহ সম্প্রতি দুটি ছবি শেয়ার করেছেন। একটি ড. ইউনূস দেশে ফেরার সময়ের যেখানে গণ-অভ্যুত্থানের সামনের সারির তরুণ নেতারা ছিলেন। আর অন্যটি—জুলাই সনদে স্বাক্ষরের মুহূর্ত, যেখানে রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা উপস্থিত। হাসনাতের মতে, ক্ষমতার কাছাকাছি আসার সময় অনেকে থাকেন, কিন্তু রক্ত দিতে হলে তারা সামনে থাকেন।

রবিবার (১৯ অক্টোবর) নিজের ইউটিউব চ্যানেলে জাহেদ উর রহমান এসব কথা বলেন।

জাহেদ উর রহমান বলেন, ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সামনের সারিতে অবশ্যই ছাত্ররা ছিলেন। ছবিতে অনুপস্থিত সেই তরুণ নেতারাও রক্ত দিয়েছেন, ত্যাগ করেছেন। তাদের অবদান অস্বীকার করার সুযোগ নেই।

কিন্তু যে ছবিতে তারা নেই, সেই অনুপস্থিতির দায় কার—এটা এনসিপিকেই ভাবতে হবে। কারণ গণফোরাম যেমন সনদে সই না করেও উপস্থিত ছিল, এনসিপিও অংশ নিতে পারত। এটা না হওয়াটা তাদের রাজনৈতিক ভুল, অন্য কারো নয়। আরেকটি হলো—যারা জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের ছবিতে ছিলেন তারাও রক্ত দিয়েছেন, তাদেরও অনেক মানুষ জুলাই-আগস্টে রক্ত দিয়েছে এবং বছরের পর বছর হাসিনার সময় ক্রমাগত রক্ত দিয়ে গেছেন।

তাদের অবদান ছোট করে দেখার কিছু নেই।’

তিনি বলেন, ‘পুরনো ক্ষমতাকেন্দ্র—সিভিল-মিলিটারি, আমলাতন্ত্র, গণমাধ্যম ও ব্যবসায়ী গোষ্ঠী সব সময় নিজেদের স্বার্থে রাষ্ট্রকে সাজাতে চায়—এটাই বাস্তবতা। কিন্তু এনসিপি যদি নতুন বন্দোবস্তের কথা বলে, তাহলে এই পুরনো কাঠামোর ভেতর থেকেই কিভাবে কাজ করবে, সেটার রূপরেখা তাদেরই তৈরি করতে হবে। পুরনোদের দোষ দেখিয়ে নিজেদের সীমাবদ্ধতা ঢেকে রাখা সমাধান নয়।’

জাহেদ উর রহমান আরো বলেন, ‘গণ-অভ্যুত্থান আর রাজনীতি—এ দুই সম্পূর্ণ ভিন্ন দক্ষতা।

রাজনীতিতে সফল হতে হলে কৌশল, মিত্রতা, প্রতিদ্বন্দ্বী নির্বাচন—সব কিছু ঠাণ্ডা মাথায় বুঝতে হবে। বাংলাদেশে রাজনীতি পশ্চিমা গণতন্ত্রের মতো নয়; এখানে ক্ষমতার বাস্তবতা বুঝে এগোতেই হবে। এনসিপি আজ কেন গুরুত্ব হারাল, সেই কারণ তাদেরই খুঁজে বের করতে হবে। জনগণ সব সময় আন্দোলনে থাকবে না—রাজনৈতিক দলকেই দেখাতে হবে তারা কিভাবে রাষ্ট্রকে নতুন পথে নেবে।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমি চাই এনসিপি শক্তিশালী হোক, বিএনপির প্রধান বিকল্প হয়ে উঠুক। আমি এখনো তাদের প্রতি শুভ কামনা রাখি। তবে সেটার জন্য তাদের বাস্তবতা বুঝে কৌশল নির্ধারণ করতে হবে—এটাই এখন তাদের সবচেয়ে বড় পরীক্ষা।’

এসএন 

Share this news on:

সর্বশেষ

img
বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ সৃষ্টির আভাস Oct 19, 2025
img
চাকসুতে নির্বাচিতদের শপথ গ্রহণের সম্ভাব্য সময় বৃহস্পতিবার! Oct 19, 2025
img
৪৯তম বিশেষ বিসিএসের ফল প্রকাশ, উত্তীর্ণ ১২১৯ জন Oct 19, 2025
img
জয়া আহসান এখন শুধু একটি নাম নয়, ব্র্যান্ড! Oct 19, 2025
img
যুদ্ধবিরতির পর গাজায় ইসরায়েলি হামলায় প্রাণ গেল ৫১ জনের , আহত অন্তত ১৫০ Oct 19, 2025
img
নতুন বাড়িভাড়া গ্রহণ করে শিক্ষকরা ক্লাসে ফিরে যাবেন: প্রত্যাশা শিক্ষা উপদেষ্টার Oct 19, 2025
সকাল বরকত পূর্ণ করার ৫টি উপায় | ইসলামিক টিপস Oct 19, 2025
দীর্ঘ বিরতির পর শূণ্য রানে ফিরলেন কোহলি Oct 19, 2025
পূর্ণিমা সতর্ক করেছেন, সব মানুষ বিশ্বাস করার যোগ্য নয়! Oct 19, 2025
পরীমনির প্রশংসায় পঞ্চমুখ ইমরান! Oct 19, 2025
img
ভোটকেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা স্থাপন থেকে সরে আসায় উদ্বেগ জামায়াতে ইসলামীর Oct 19, 2025
img
দেশে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ৬০ হাজারের কাছাকাছি Oct 19, 2025
img
শাপলা প্রতীক নিয়ে নীলা ইস্রাফিলের ফেসবুক পোস্ট Oct 19, 2025
img
নোয়াখালীতে বিএনপি ও শিবির নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ, আহত ৪০ Oct 19, 2025
img
আলিশান বাড়িতে গৃহপ্রবেশ করলেন রণবীর-আলিয়া দম্পতি Oct 19, 2025
img
‘কহো না প্যায়ার হ্যায়’ থেকে কেন বাদ পড়েছিলেন কারিনা? Oct 19, 2025
img
১৮ বছরের তরুণী বীরা বেদীকে ঘিরে বলিউডে নতুন আলোচনা! Oct 19, 2025
'এই সরকার দিল্লির কথায় চলছে' Oct 19, 2025
জুলাই জাতীয় সনদের দফা সংশোধন নিয়ে যা জানালেন সালাহউদ্দিন Oct 19, 2025
জামায়াত ও তার মিত্ররা পিআর এজেন্ডা হাইজ্যাক করেছে: নাহিদ ইসলাম Oct 19, 2025