সাবেক সংসদ সদস্য ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক গোলাম মাওলা রনি বলেছেন, ‘উপদেষ্টাদের সেফ এক্সিট নিয়ে কয়েকদিন আগে যে বিতর্কটা শুরু হলো, এরপরে প্রায় সপ্তাহখানেকেরও বেশি সময় চলে গেল। কিন্তু কোনো অবস্থাতেই এই বিতর্ক যেন থামছে না। বরং একটার পর একটা ঘটনা ঘটছে এবং উপদেষ্টাদের মধ্যে অনেকে স্বপ্রণোদিত হয়ে অনেক কথা বলছেন, প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছেন।’
নিজের ইউটিউব চ্যানেলে দেওয়া ভিডিওবার্তায় তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক দলের যে নেতৃবৃন্দ তারাও এই সেফ এক্সিট নিয়ে নানারকম কথাবার্তা বলছেন। ফলে যে সরকার ইতিহাসের একটা সেরা নির্বাচন করবে, যে সরকারটি গঠিত হয়েছিল একটি বিস্ময়কর গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে এবং সেই গণ-অভ্যুত্থানের কারণে আওয়ামী লীগ বনাম গণ-অভ্যুত্থানকারী এ দুটো ভাগে সারা দেশ বিভক্ত হয়ে গিয়েছিল, সেই অবস্থা এখন অনেকটাই নেই।’
‘ফলে প্রথমদিকে মানুষের যে আবেগ, প্রেম ভালোবাসা ছিল; সেটা ধীরে ধীরে কমতে কমতে এখন তলানিতে শুধু নয়, একেবারে রিভার্স হয়ে গেছে। বহু মানুষ বলার চেষ্টা করছে, আগেই ভালো ছিলাম। বহু মানুষ বলার চেষ্টা করছে, এ দেশের জন্য আসলে শেখ হাসিনার মতো আয়রন লেডি দরকার। অথচ ড. ইউনূস ১৪ মাস আগে আমাদের দেশে ছিলেন একেবারে কিংবদন্তি মহাপুরুষ।’
রনি বলেন, ‘ড. ইউনূস ক্ষমতায় এসে তার উপদেষ্টামণ্ডলী গঠন করলেন। এরপর ২০২৪ সালের আগস্ট থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত আমাদের আস্তে আস্তে স্বপ্নভঙ্গ হতে থাকল। তিনি যাদেরকে উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন, তারাও অসম্ভব বাড়াবাড়ি শুরু করলেন। আস্তে আস্তে আমরাও মুখ খুলতে শুরু করলাম।’
‘তিনি যে কয়বারই বিদেশে গিয়েছেন একটা না একটা ফ্যাসাদ তিনি সেখানে করে এসেছেন। রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, কূটনৈতিক কোনো একটি দেশ থেকেই আমরা আজ পর্যন্ত তেমন কিছু পায়নি। অথচ তার ১৪-১৫টি বিদেশ ভ্রমণের ফলে কত হাজার কোটি টাকা আমরা খরচ করেছি এ হিসাব আমাদের নেই, আমরা জানি না। এর ফলে কি হলো? সরকারের যে কর্মকাণ্ড যা নিয়ে মানুষের ভীষণ রকম একটা আবেগ ছিল, উচ্ছ্বাস ছিল; এটা হিতে বিপরীত হয়ে গেল।
এখন মানুষ যাচ্ছেতাই বলছে।’
রনি বলেন, ‘এরই মধ্যে এনসিপি নেতা নাহিদ রীতিমতো বোমা বিস্ফোরণ ঘটালেন। তিনি বলার চেষ্টা করলেন যে, কিছু উপদেষ্টা বা কতিপয় উপদেষ্টা তারা সেফ এক্সিটের জন্য বিভিন্ন মহলের সঙ্গে দেন-দরবার করছেন। আর যাদের সঙ্গে দেন-দরবার করছেন তাদেরকে রাজি-খুশি করার জন্য তারা নানা রকম সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছেন। ফলে পুরো প্রশাসন ব্যবস্থায় একটা অচলাবস্থা শুরু হয়েছে। তার এই বক্তব্যের পর বেশ কয়েকজন উপদেষ্টা সেফ এক্সিট নিয়ে কথা বলেছেন। তবে সবাইকে চমক দেখিয়ে ড. আসিফ নজরুল বললেন, কোনো উপদেষ্টার পালানোর প্রয়োজন নেই, মূলত এই দেশটি এখন বর্তমানে যেখানে আছে, সেখান থেকে এই দেশের সেফ এক্সিট দরকার। কথাটা তিনি ভেবে বলেছেন, নাকি না ভেবে বলেছেন, সেটা জানি না। তবে এই কথাটি যে কতটা ভয়ংকর, সেটা তিনি ভেবে দেখেননি।’
কেএন/টিকে