নিজেদের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ফাতাহ’র সঙ্গে বৈঠক করেছে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাস। মিসরের উদ্যোগ ও মধ্যস্থতায় গতকাল বৃহস্পতিবার কায়রোতে এ বৈঠক হয়েছি বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে এএফপি।
বৈঠকের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্রের বরাত দিয়ে এএফপি জানিয়েছে, গাজার বর্তমান পরিস্থিতি এবং সেখানে যুদ্ধবিরতির সম্ভাব্য দ্বিতীয় পর্যায় নিয়ে বৈঠক হয়েছে হামাস ও ফাতাহ নেতাদের মধ্যে। সেই সঙ্গে ফিলিস্তিনের জাতীয় স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিয়ে ভবিষ্যতে এমন আরও বৈঠক করার ব্যাপারে ঐকমত্যে পৌঁছেছেন দুই গোষ্ঠীর নেতারা।
মিসরের সংবাদমাধ্যম আল কাহেরা নিউজের প্রতিবেদনে এই বৈঠক সম্পর্কে বলা হয়েছে, গাজায় যুদ্ধবিরতির মধ্যে দিয়ে স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবি নতুন মাত্রা পেয়েছে। সেই দাবি অর্জনের লক্ষ্যে রাজনৈতিকভাবে অগ্রসর হওয়ার প্রারম্ভিক প্রস্তুতি হিসেবে এ বৈঠক করেছেন ফাতাহ ও হামাসের নেতারা।
এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার যখন হামাস ও ফাতাহ-এর মধ্যে বৈঠক চলছিল, সে সময় ফিলিস্তিনের অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করেছেন মিসরের রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান হাসান রাশাদ।
হাসান রাশাদের সঙ্গে বৈঠকে অন্যান্য ফিলিস্তিনি দলের পাশাপাশি হামাসের মিত্র সশস্ত্র গোষ্ঠী প্যালেস্টাইনিয়ান ইসলামিক জিহাদ এবং পশ্চিম তীরে ক্ষমতাসীন জোট ফিলিস্তিনি কৃর্তৃপক্ষের (প্যালেস্টাইনিয়ান অথরিটি-পিএ) অন্তর্ভুক্ত সশস্ত্র দল ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট ফর লিবারেশন অব প্যালেস্টাইন এবং পপুলার ফ্রন্ট ফর দ্য লিবারেশন অব প্যালেস্টাইনের প্রতিনিধিরাও ছিলেন।
২০০৬ সালের আগ পর্যন্ত গাজা এবং পশ্চিম তীর— উভয় অঞ্চল পিএ জোটের অধীনে ছিল। এই জোটের সবচেয়ে বড় শরিক ফিলিস্তিনি রাজনৈতিক দল ফাতাহ। ফিলিস্তিনের বর্তমান প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস ফাতাহের বর্তমান শীর্ষ নেতা।
২০০৬ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়ে গাজা উপত্যকায় সরকার গঠন করে হামাস এবং উপত্যকা থেকে ফাতাহ পিএ জোটকে উৎখাত করে। সেই থেকে দীর্ঘদিন পর্যন্ত ফাতাহ এবং পিএ এবং হামাসের মধ্যকার সম্পর্ক ছিল চরম বৈরী।
তবে গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর গত ২ বছরের ভয়াবহ সামরিক অভিযান এবং সম্প্রতি বিশ্বজুড়ে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের দাবি শক্তিশালী হতে থাকায় নিজেদের মধ্যকার অতীত শত্রুতা ভুলে কাছাকাছি আসার চেষ্টা করছে গাজার রাজনৈতিক দলগুলো। মিসরের বৈঠকে তার আভাস পাওয়া যাচ্ছে।
এর আগে ২০২৪ সালে চীনের মধ্যস্থতায় বেইজিংয়ে বৈঠক করেছিলেন হামাস এবং ফাতাহের নেতারা। তবে শেষ পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই সেই বৈঠক শেষ হয়।
সূত্র : এএফপি
এসএন