অ্যাস্টন ভিলার ম্যানেজার হিসেবে তিন বছর পূর্তি উদযাপন করলেন উনাই এমেরি, আর সেই দিনটিতেই তার দল লিখে ফেলল এক অনন্য অধ্যায়। ‘অফ-কালার’ ম্যানচেস্টার সিটিকে ১-০ গোলে হারিয়ে তারা ভেঙে দিল সিটির টানা নয় ম্যাচের অপরাজিত ধারা, আর তুলে নিল প্রিমিয়ার লিগে টানা চতুর্থ জয়।
২০২২ সালে স্টিভেন জেরার্ডের জায়গায় দায়িত্ব নেয়ার পর এমেরির হাত ধরে বদলে গেছে অ্যাস্টন ভিলা। মৌসুমের শুরুটা খারাপ যায় ভিলার। পরবর্তীতে ইউরোপা লিগে গো এহেড ঈগলসের কাছে অপ্রত্যাশিত হার দেখতে হয়। তবে সিটির বিপক্ষে এই জয় ভিলা সমর্থকদের জন্য ছিল দারুণ এক প্রাপ্তি।
ম্যাচের একমাত্র গোলটি আসে ১৯তম মিনিটে। কর্নার থেকে বক্সের প্রান্তে বল পেয়ে বাঁ পায়ের নিখুঁত শটে জাল খুঁজে পান ম্যাটি ক্যাশ। যদিও কর্নারের সিদ্ধান্ত নিয়ে ক্ষুব্ধ ছিল সিটি। তাদের দাবি, লুকাস ডিগনে আগে মাতেউস নুনেসকে ফাউল করেছিলেন।
মাত্র দুই মিনিট পরই সমতায় ফেরার সুযোগ পায় সিটি। ফিল ফোডেনের পাস থেকে আর্লিং হালান্ডের নিচু শট দুর্দান্তভাবে ফিরিয়ে দেন এমিলিয়ানো মার্টিনেজ।
পুরো ম্যাচে সিটি ক্লান্ত ও নিস্তেজ দেখিয়েছে, বিশেষ করে ভিয়ারিয়ালের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়নস লিগ ম্যাচের পর। দ্বিতীয়ার্ধে আরও গোল পেতে পারত ভিলা। জন ম্যাকগিনের ভলিটি ব্লক হয়, আর দোনারুম্মা জাডন স্যাঞ্চোর দুইটি নিশ্চিত গোল বাঁচান।
অন্যদিকে, সিটির একমাত্র উজ্জ্বল মুহূর্ত আসে সাভিনহোর প্রচেষ্টায়, যার ভলিটি গোললাইন থেকে ক্লিয়ার করেন পাও টরেস। শেষ দিকে হালান্ডের এক গোল অফসাইডের কারণে বাতিল হলে হতাশায় ডুবে যায় অতিথিরা।
মৌসুমের প্রথম ছয় ম্যাচে কোনো জয় না পেয়ে মাত্র দুটি গোল করেছিল ভিলা। এরপর থেকে তারা সাত ম্যাচে ছয় জয় তুলে নিয়ে দেখিয়েছে অবিশ্বাস্য প্রত্যাবর্তন। এটি প্রিমিয়ার লিগের ইতিহাসে প্রথম দল যারা টানা পাঁচ ম্যাচে জয় পায়নি, অথচ পরের চার ম্যাচ টানা জিতেছে। ১৯৩৬-৩৭ মৌসুমে প্রেস্টনের পর এমন নজির আর নেই।
ভিয়ারিয়াল থেকে আসার পর এমেরি যেন এক জাদুকর। একসময় অবনমন অঞ্চলের তিন পয়েন্ট ওপরে থাকা দলটিকে তিনি এখন চ্যাম্পিয়নস লিগের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছেন।
এই জয়ে ভিলা গড়েছে আরও এক ইতিহাস। সিটির বিপক্ষে টানা তৃতীয় লিগ জয়, যা তারা সর্বশেষ করেছিল ১৯৬০ ও ১৯৭৫ সালে।
রক্ষণভাগে এজরি কনসা ও পাও টরেস ছিলেন দুর্ভেদ্য প্রাচীর, আর মাঝমাঠে আমাদু ওনানা ছিলেন প্রকৃত ‘এনফোর্সার’। ম্যাচের নায়ক অবশ্যই ম্যাটি ক্যাশ, যার নিখুঁত শটেই নির্ধারিত হয় ম্যাচের ভাগ্য। মৌসুমে এটি ছিল তার দ্বিতীয় গোল, আর সেই শটে দোনারুম্মা ছিলেন সম্পূর্ণ অসহায়।
ভিলা পার্কে তাই উৎসবের আমেজ, এমেরির তিন বছর পূর্তি যেন উদযাপিত হলো এক অনবদ্য জয়ের মাধ্যমে।
ইএ/টিএ