আফ্রিকার মধ্যাঞ্চলীয় দেশ ক্যামেরুনের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অষ্টমবারের মতো জয় পেয়েছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট পল বিয়া। ৯২ বছর বয়সী পল বিয়া এই মুহূর্তে বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক প্রেসিডেন্ট।
গত ১২ অক্টোবর প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হয়েছে ক্যামেরুনে। নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হয়েছিলেন মোট ১১ জন প্রার্থী। আজ সোমবার ক্যামেরুনের নির্বাচন কমিশন ভোটের ফলাফল প্রকাশ করেছে।
সেই ফলাফল পর্যালোচনা করে দেখা গেছে ৫৩ দশমিক ৬৬ ভোট পেয়ে বিজয় নিশ্চিত করেছেন পল বিয়া। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ইসা তিচিরোমা বাকারি পেয়েছেন ৩৫ দশমিক ২ শতাংশ ভোট। তৃতীয় স্থানে আছেন কাব্রাল লিবি নামের আরেক প্রার্থী; তিনি পেয়েছেন ৩ দশমিক ৪ শতাংশ ভোট। বাকি আটজন প্রার্থীদের সবাই এক শতাংশের কম ভোট পেয়েছেন। অন্যান্য প্রার্থীদের সবাই অবশ্য তাৎক্ষণিকভাবে ভোটের ফলাফল বর্জন করেছেন।
সংবিধান অনুসারে ক্যামেরুনের প্রেসিডেন্টের মেয়াদ ৭ বছরের। সেই হিসেবে গত ৪৯ বছর ধরে প্রেসিডেন্ট পদে থাকা পল বিয়া আরও ৭ বছরের জন্য নিজের ক্ষমতা নিশ্চিত করলেন।
তবে বিরোধী প্রার্থীরা ভোটের ফলাফল বর্জনের পাশাপাশি নির্বাচনের বৈধতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। বিয়া’র নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী এবং তার সরকারের সাবেক মন্ত্রী তিচিরোমা এএফপিকে বলেছেন, “এটা কোনো নির্বাচন নয়, বরং প্রহসন ছিল। প্রকৃত বিজয়ী আমরা। তারা আমাদের ফলাফল ছিনিয়ে নিয়েছে।”
দেশবাসীকে নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলনে নামার আহ্বানও জানিয়েছেন তিচিরোমা।
মূলত ১২ অক্টোবর ভোটের পর থেকেই সড়কে ছিলেন তিচিরোমার সমর্থকরা। গত সপ্তাহ থেকে তারা তিচিরোমোকে বিজয়ী ঘোষণা করার জন্য আন্দোলন শুরু করেন। সেই আন্দোলনে পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে নিহত হয়েছেন অন্তত চার জন।
সোমবার ভোটের ফলাফল ঘোষণার দিন ক্যামেরুনের রাজধানী ইয়াউন্দের অবস্থা ছিল থমথমে। গণ্ডগোল হতে পারে— এমন আশঙ্কায় ইয়াউন্দের বেশিরভাগ দোকান ও পেট্রোলস্টেশন বন্ধ ছিল। নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর তিচিরোমার বাড়ির সামনে জড়ো হতে শুরু করেছিলেন তার সমর্থকরা, কিন্তু সেখানে পুলিশের স্নাইপার শ্যুটারদের গুলিতে ২ জন নিহত হয়েছেন।
দেশের ভিতরে ‘লৌহমানব’ হিসেবে পরিচিত বিয়া। পাশাপাশি কঠোরভাবে বিরোধীদের দমন, অর্থনৈতিক অসাম্য বজায় রাখা এবং ব্যাপকভাবে নিয়ন্ত্রণবাদী শাসক হিসেবেও পরিচিতি রয়েছে তার।
ইউটি/টিএ