তিন ওভারে বাংলাদেশের দরকার ৩৩ রান- এমন সময় ৪৮ বলে ৬১ রানের ইনিংস খেলে ফেরেন তানজিদ হাসান তামিম। বাঁহাতি ওপেনার ফেরার পর বাংলাদেশের সমীকরণ ছিল ১৭ বলে ৩৩ রান, হাতে ছিল ৬ উইকেট। জাকের আলী, শামীম হোসেন পাটোয়ারি, রিশাদ হোসেনের মতো ব্যাটার থাকার পরও শেষ পর্যন্ত ১৪ রান ম্যাচ হেরেছে স্বাগতিকরা। ম্যাচের সঙ্গে সিরিজও হেরেছে বাংলাদেশ। ৬১ রান করেও ম্যাচ জেতাতে না পারায় দায়টা নিজের কাঁধেই নিলেন তানজিদ।
টসের সময় লিটন দাস বলেছিলেন, ‘দেখে মনে হচ্ছে উইকেট ভালো। আমার মনে হয় ১৮০ রান ভালো একটা স্কোর হবে।’
বাংলাদেশের অধিনায়ক ১৮০ রানের আশেপাশে প্রতিপক্ষকে আটকে রাখার পরিকল্পনা করলেও মুস্তাফিজুর রহমান, নাসুম আহমেদ, রিশাদরা ওয়েস্ট ইন্ডিজকে আটকে দিয়েছেন আরও আগেই। একটা সময় দুইশর পথে ছুঁটতে থাকলেও শেষ পর্যন্ত ১৪৯ রান তুলেই থামে সফরকারীরা।
চট্টগ্রামে সিরিজে ফিরতে হলে বাংলাদেশে করতে হতো ১৫০ রান। লিটনের কথার প্রেক্ষিতে স্বাগতিকদের জন্য সহজ লক্ষ্যই হওয়ার কথা। তবে রান তাড়ায় দেখা গেল উল্টো চিত্র। প্রথম ম্যাচের মতো এবারও ব্যর্থ হয়েছেন সাইফ হাসান। ভালো শুরু পাওয়া অধিনায়ক লিটন আউট হয়েছেন ২৩ রানে। সুবিধা করে উঠতে পারেননি তাওহীদ হৃদয়ও। তবে একপ্রান্ত আগলে রেখে বাংলাদেশকে পথ দেখাচ্ছিলেন তানজিদ।
হাফ সেঞ্চুরি পাওয়া বাঁহাতি ওপেনার জীবন পেলেও সেটা কাজে লাগাতে পারেননি পুরোপুরি। তানজিদের ৪৮ বলে ৬১ রানের ইনিংসও বাংলাদেশের জয়ের জন্য যথেষ্ট ছিল না। নিজে ম্যাচ শেষ করতে না পারার আক্ষেপই করলেন তিনি। বাংলাদেশের ওপেনার মনে করেন, তিনি যদি শেষ পর্যন্ত থাকতে পারতেন তাহলে হয়ত ম্যাচটা বের হয়ে যেতো।
তানজিদ বলেন, ‘আসলে ম্যাচ না জেতায় কিছুর ভ্যালু থাকে না। উইকেট যেমন ছিল সেট ব্যাটারদেরই শেষ করতে হয় এখানে। একটু স্কিডি ছিল, আসছিল না ব্যাটে। নতুন ব্যাটারদের জন্য এই উইকেট একটু কঠিন যেয়েই হিটিং করার। আমার কাছে মনে হয় আমি যদি শেষ পর্যন্ত থাকতে পারতাম ম্যাচটা বের হয়ে যেতো।’
আধুনিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে প্রায় দুনিয়ার সব উইকেটেই ১৫০ রান তাড়া করা সম্ভব। পাশাপাশি মারকুটে ব্যাটিংয়ের যুগে হাতে ৬ উইকেট থাকায় ১৭ বলে ৩৩ রান করাও কঠিন কিছু হওয়ার কথা না। অথচ জাকের, শামীমের মতো ফিনিশার থাকার পরও সেটা করে দেখাতে পারেননি তারা। শেষ তিন ওভারে সবাই মিলে ১৮ বলে ১৮ রান করেছেন। তাতেই জয়ের সুযোগ থাকার পরও হারতে হয়েছে বাংলাদেশকে।
তানজিদ জানান, উইকেট একটু স্টিকি হওয়ায় নতুন ব্যাটার গিয়েই চার-ছক্কা মারা একটু কঠিন।
বাঁহাতি এই ওপেনার বলেন, ‘অবশ্যই, আপনাকে যেটা বললাম এই উইকেটে সেট ব্যাটারেই শেষ করতে হয়। কারণ নতুন ব্যাটার গিয়েই হিটিং করাটা খুব কঠিন এই উইকেটে। আপনারাও দেখেছেন উইকেটটা কেমন আচরণ করেছে। ওদেরও একই অবস্থা হয়েছে, মারতে গিয়ে আউট হয়েছে। আমার মনে হয় আমার যেটা দায়িত্ব ছিল...আমি যদি শেষ পর্যন্ত দায়িত্বটা পালন করতে পারতাম তাহলে হয়ত সহজেই ম্যাচটা বের হয়ে আসতো।’
একের পর এক ব্যাখ্যার পর নিজে ম্যাচ শেষ করতে না পারায় দায়টা নিজের কাঁধেই নিয়েছেন তিনি।
তানজিদ বলেন, ‘দেখুন, আপনাকে যেটা বললাম এখানে গিয়েই মারাটা কঠিন এই উইকেটে। আমার মনে হয় এটাই আসল কারণ। ওইখানে আমার দায়িত্বটা একটু বেশি ছিল। আমি আমার দায়িত্বটা পালন করতে পারিনি।’
এমআর