রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে বেনাপোল স্থলবন্দরে।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) থেকে পরিচয়পত্র ছাড়া বন্দরে প্রবেশ বন্ধ করতে তল্লাশি জোরদার করা হয়েছে। বন্দরে মধ্যে ধুমপান, আগুনের ব্যবহার নিষিদ্ধ ও ফায়ার সিস্টেম সচল রাখতে নিয়মিত পরীক্ষা করা হচ্ছে।
 
বন্দরকর্তৃপক্ষ বলছে, যে কোনো ধরনের দুর্ঘটনা বা নাশকতা রোধে পোশাকধারী নিরাপত্তাকর্মীদের পাশাপাশি সাদা পোশাকেও রয়েছে নজরদারি।  
 
বাণিজ্য সংশিষ্টরা জানান, প্রতি বছর বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকার আমদানি ও ৮ হাজার কোটি টাকার রফতানি বাণিজ্য হয়। সব সময় বন্দরটিতে প্রায় ২ লাখ মেট্রিক টন পণ্য মজুত থাকে। যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় এ পথে সবচেয়ে যেমন বেশি বাণিজ্য হয়, তেমনি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাও বেশি ঘটে বন্দরটিতে। প্রতি বছরেই কখনো পণ্যগার কখনো পণ্যবাহী ট্রাকে আগুন লাগতে দেখা যায়। 
গত ১৬ বছরে বেনাপোল বন্দরে বড় ধরনের ১২টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আমদানি পণ্য পুড়ে প্রায় এক হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয় ব্যবসায়ীদের। বন্দরের সুরক্ষা ব্যবস্থা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে বারবার। তবে সাম্প্রতি দেশের বিভিন্ন স্থাপনায় আগুনের ঘটনা ভাবিয়ে তুলেছে বন্দর কর্তৃপক্ষকে। এতে জোরদার করা হয়েছে সুরক্ষা ব্যবস্থা। বন্দর ব্যবহারকারী বাণিজ্যিক সংগঠন ও কাস্টমসের সঙ্গে বৈঠক করে বিভিন্ন দিক নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। অগ্নিনির্বাপণকর্মীদের সচেতন থাকতে বলা হয়েছে। বন্দরে প্রবেশকারীদের সঙ্গে থাকা ব্যাগ তল্লাশি করে ঢোকার অনুমতি মিলছে। 
জানা যায়, বন্দরের পণ্যগারে দির্ঘদিন ধরে মেয়াদোউত্তীর্ণ নিলামযোগ্য পণ্যের পরিমাণ ১২ হাজার ৬৫৯ মেট্রিক টন। এর মধ্যে ৩ হাজার ২৫০ মেট্রিক টন রয়েছে মেয়াদোত্তীর্ণ ঝুঁকিপূর্ণ বিপদজনক রাসয়নিক দ্রব। এসব রাসায়নিক পণ্য অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে।
 
বেনাপোল বন্দরের আমদানিকারক আমিনুল হক বলেন, বন্দরে অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে রাসায়নিক দ্রব। এগুলো দ্রুত নিরসন করা দরকার। এছাড়া বন্দরের ফায়ার স্টেশনে জনবল কম থাকায় কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে দ্রুত সময়ে তারা আগুন নেভাতে পারে না। জনবল বাড়ানো দরকার।
 
বেনাপোল বন্দর ফায়ার স্টেশনের ইন্সেসপেক্টর শাহিনুর রহমান জানান, অগ্নিকাণ্ড রোধে বন্দর কর্তৃপক্ষের সব ধরনের নির্দেশনা তারা পালন করছেন। অগ্নিকাণ্ডের দুর্ঘটনা এড়াতে ফায়ার সিস্টেম নিয়মিত পরীক্ষা করা হচ্ছে। ৯০ একর জায়গায় স্থাপিত বেনাপোল বন্দরে অগ্নিকাণ্ড প্রতিরোধে ২টি ফায়ার স্টেশনে মাত্র ৭ জন জনবল রয়েছে। এটা বাড়ানো হলে আরও বেশি নিরাপত্তা দেয়া সম্ভব।
 
বেনাপোল বন্দর পরিচালক (ট্রাফিক) শামিম হোসেন জানান, অগ্নিকাণ্ড রোধে নিরাপত্তা জেরদার করা হয়েছে। বন্দরে পড়ে থাকা নিলাম ও ধ্বংসযোগ্য ঝুঁকিপূর্ণ পণ্য কাস্টমসকে দ্রুত নিরাপদ স্থানে সরাতে বা ধ্বংস করতে অনুরোধ করা হয়েছে। বন্দরের মধ্যে আগুন ব্যবহার ও কার্ডধারী ছাড়া প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে।
কেএন/এসএন