কাতার বিশ্বকাপটা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর জন্য ছিল বিস্মরণযোগ্য। তৎকালীন কোচ ফার্নান্দো সান্তোস তাকে বাদ দিয়েছিলেন প্রথম একাদশে। কোয়ার্টার ফাইনালে মরক্কোর কাছে হেরে বিদায় নেয় পর্তুগাল। বদলি হিসেবে নেমেও দলের হার ঠেকাতে না পেরে কাঁদতে কাঁদতে মাঠ ছেড়েছিলেন পর্তুগালের ইতিহাসের সেরা এই ফুটবলার। অন্যদিকে, তার প্রতিদ্বন্দ্বী লিওনেল মেসি সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে আর্জেন্টিনাকে ৩৬ বছর পর এনে দেন বিশ্বকাপ শিরোপা। আর অনেকের কাছে সেই বিশ্বকাপই “মেসি বনাম রোনালদো” বিতর্কের সমাপ্তি টেনে দিয়েছে।
কাতার বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে যাওয়ার পর রোনালদো ইনস্টাগ্রামে একটা দীর্ঘ পোস্ট দেন, যেখানে তিনি লিখেছিলেন-বিশ্বকাপ জেতাই ছিল তার জীবনের সবচেয়ে বড় ও উচ্চাকাঙ্ক্ষী স্বপ্ন।
তার ভাষায়, 'পর্তুগালের হয়ে বিশ্বকাপ জেতা ছিল আমার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় ও উচ্চাকাঙ্ক্ষী স্বপ্ন। সৌভাগ্যক্রমে, আমি অনেক আন্তর্জাতিক শিরোপা জিতেছি, পর্তুগালের হয়েও জিতেছি, কিন্তু বিশ্বের সর্বোচ্চ পর্যায়ে আমাদের দেশের নাম তোলা - সেটাই ছিল আমার সবচেয়ে বড় স্বপ্ন।'
কিন্তু আরেকটা বিশ্বকাপ যখন কড়া নাড়ছে দুয়ারে, রোনালদো যেন এক ভিন্ন মানুষ। সম্প্রতি পিয়ার্স মর্গানের ইউটিউব চ্যানেলে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রোনালদো উল্টো কথা বলেছেন। এবার তিনি জানান, বিশ্বকাপ জেতা তার কাছে কোনো স্বপ্নই নয়।
ব্রিটিশ সাংবাদিক ও ব্রডকাস্টার মরগানকে দেয়া সাক্ষাৎকারে রোনালদো বলেন, 'আমি বলব, বিশ্বকাপ জেতা আমার জন্য কোনো ‘স্বপ্ন’ নয়।’
রোনালদো আরও প্রশ্ন তোলেন, একটা মাত্র টুর্নামেন্ট দিয়ে কি একজন ফুটবলারের উত্তরাধিকার বা শ্রেষ্ঠত্ব নির্ধারণ করা যায়? তিনি সেই ধারণাকে সম্পূর্ণ অস্বীকার করেন।
তার ভাষায়, ‘কী সংজ্ঞা দিতে? এটা কি প্রমাণ করার জন্য যে আমি ইতিহাসের সেরাদের একজন? একটা প্রতিযোগিতা জিতে-ছয়টা, সাতটা ম্যাচ খেলে -আপনি কি মনে করেন এটা ন্যায্য?’
পিয়ার্স মরগানকে দেয়া রোনালদোর সাক্ষাৎকারের প্রথম পর্ব গতকাল মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) প্রকাশিত হয়েছে। এর আগে গত সোমবার (৩ নভেম্বর) রাতে সাক্ষাৎকারের ছোট্ট একটা ঝলক প্রকাশিত হয়। সেখানে এই পর্তুগিজকে 'সর্বকালের সেরা' নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল। রোনালদো জানান, আর্চ রাইভাল মেসিকে তিনি নিজের চেয়ে সেরা মনে করেন না।
রোনালদো বলেন, ‘মেসি আমার চেয়ে ভালো? আমি সেই মতের সঙ্গে একমত নই। আমি বিনয়ী হতে চাই না।’
পর্তুগালের এই কিংবদন্তি এখন পর্যন্ত পাঁচটি বিশ্বকাপে অংশ নিয়েছেন, কিন্তু ফুটবলের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ আসরে তার সাফল্যের অধ্যায় এখনো অসম্পূর্ণ। ক্লাব ফুটবলে অগণিত রেকর্ড ও ট্রফি জয়ের পরও তিনি বিশ্বকাপ মঞ্চে সেই একই আধিপত্য দেখাতে পারেননি। পর্তুগালও এখনো অপেক্ষায় তাদের প্রথম বিশ্বকাপ শিরোপার জন্য।
পিএ/এসএন