ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সরকার রাজনীতি নয়, রীতিমতো অপরাজনীতি করছে বলে মন্তব্য করেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক ডা. জাহেদ উর রহমান।
তিনি বলেন, ‘এ সরকারের রাজনীতি করার কথা ছিল না। এটা একটা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, নিরপেক্ষ সরকার। কিন্তু ইউনূস সরকার এখন এমন অবস্থান নিয়েছে, যা দেশের জন্য, ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক পরিমণ্ডলের জন্য ঝুঁকি তৈরি করছে।’
বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) জাহেদ উর রহমান তার ইউটিউব চ্যানেলে দেওয়া এক ভিডিওতে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা খেয়াল করছি বিএনপিকে কিছু দাবি মানানোর জন্য একটা জোট তৈরি হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে জোট তৈরি হতেই পারে। জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলনসহ আরো কিছু দলের মধ্যে।
সমস্যা হচ্ছে, এর সঙ্গে ঐকমত্য কমিশন এবং সরকারও জড়িয়ে পড়ছে। এটা ভয়ংকর এবং ঐকমত্য কমিশন মানে, এটার দায় প্রধান উপদেষ্টার।’
তিনি আরো বলেন, ‘কেন অপরাজনীতি বলছি আসলে, বিএনপির প্রতি প্রধান দাবি এখন বিএনপি উচ্চকক্ষের পিআরটা মেনে নিক। আমি বহুবার বলেছি, বিএনপি যেভাবে আপার হাউস করতে চায়, এটা লজিক্যালি সঠিক নয়।
কোনোভাবেই আমি মনে করি না, এটা সঠিক সিদ্ধান্ত হয়েছে। কিন্তু বিএনপি এই সিদ্ধান্তটা নেওয়ায় প্রচুর সমালোচিত হয়েছে, তার পরও সেই সিদ্ধান্তটা নিয়েছে, এখন চাপ তৈরির জন্য নানা কিছু তৈরি করছে সরকার। যাতে দর-কষাকষি করতে পারে। জামায়াতকে মাঠে নামিয়ে দিয়েছে তুমি নিম্নকক্ষে পিআর চাও। তুমি গণভোট নভেম্বরে চাও।
এগুলোতে জামায়াত ছাড় দিলে তারপর বিএনপিকে বলা হবে- আচ্ছা, ঠিক আছে নভেম্বরে না ইলেকশনের দিন গণভোট হবে। নোট অব ডিসেন্ট ছাড়া গণভোটের একটা চাপ তৈরির চেষ্টা আছে, যদি বিএনপি উচ্চকক্ষে পিআর মেনে নেয়; সম্ভবত তখন নোট অব ডিসেন্টসহ গণভোটে যাবে। বিএনপিকে যে পদ্ধতিতে ঠ্যাক দেওয়া হচ্ছে, এটা ভয়ংকর এবং ঠ্যাকটা নতুন নতুন সব কলাকৌশলে হচ্ছে বলেই বলেছি খুবই বাজে অপরাজনীতি করছে সরকার।’
জাহেদ উর রহমান বলেন, ‘আমরা এর আগে নিউজ দেখেছিলাম ন্যাশনাল ইলেকশনের দিন গণভোট হবে- এটা নিয়ে উপদেষ্টা পরিষদ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পত্রপত্রিকায় আমাদের যথেষ্ট সোর্স থাকে, তারা দিয়েছে। এখন গত পরশু একটা নিউজ দেখলাম। সেখানে অন্তত তিনজন উপদেষ্টা বলেন, নির্বাচন কমিশনের সক্ষমতা থাকলে জাতীয় নির্বাচনের আগেও গণভোট করা যেতে পারে। তারা যুক্তি দিয়ে প্রশ্ন তোলেন, গণভোট না হলে সংস্কার কিভাবে বাস্তবায়ন হবে? তারা বলেন, বিশেষ করে পিআর পদ্ধতিতে সংসদের উচ্চকক্ষ গঠনের বিষয়টি সুরাহা করতে নির্বাচনের আগে গণভোট করা প্রয়োজন। ফেব্রুয়ারিতে সংসদ নির্বাচন নিশ্চিত করে, এর আগে গণভোট করা যায় কি না, তা দেখা উচিত।’
রাজনৈতিক এই বিশ্লেষক বলেন, ‘পিআর পদ্ধতিতে যদি উচ্চকক্ষ হয় সেই ক্ষেত্রে গণভোট আগে হওয়া দরকার বলে একটা যুক্তি জামায়াতিদেরও দিতে দেখেছি।’
কেএন/টিএ