মাথার ওপর এখনও বিশাল সব ক্রেন ঘুরছে, সংস্কার কাজ যে শেষ হয়নি তাও স্পষ্ট। এরই মাঝে উন্মোচিত হলো বার্সেলোনার ঘরের মাঠ ক্যাম্প ন্যু। দুই বছরেরও বেশি সময় পর নিজেদের ডেরায় অনুশীলন করেছেন লামিনে ইয়ামাল, লেভান্ডফস্কি-রাশফোর্ডরা। নেহাতই পরীক্ষামূলক অনুশীলন, তবুও দীর্ঘ সময় পরের এই প্রত্যাবর্তন দেখতে ২০ হাজারের বেশি দর্শক গ্যালারিতে হাজির হয়েছিলেন।
গতকাল (শুক্রবার) বার্সেলোনার ক্যাম্প ন্যুতে এমনভাবে ফুটবলভক্তরা সদলবলে আসছিলেন, মনে হচ্ছিল বুঝি কাতালানরা বড় কোনো ম্যাচ খেলতে নামছে। তাও আবার প্রখর রোদ উপেক্ষা করে। শুধু তাই নয়, অনুশীলন দেখতে বরাদ্দ ছিল টিকিট। যার জন্য সাধারণ মানুষকে ১০ ইউরো এবং ক্লাব সদস্যদের ৫ ইউরো করে ব্যয় করতে হয়েছে। রোমাঞ্চকর মনোভাব নিয়ে মাঠে আসা ২২ বছর বয়সী শিক্ষার্থী ইসাবেল গার্সিয়া বলেন, ‘আমরা অনেক বেশি রোমাঞ্চিত, কারণ আমরা এই দিনের জন্য দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করেছি। যদিও সংস্কার কাজ শেষ হয়নি, তবুও এখানে আসতে পারা দারুণ ব্যাপার।’
ক্যাম্প ন্যুতে শেষবার বার্সেলোনা খেলেছিল ২০২৩ সালের মার্চে। আগামী মাসে এখানে যখন আবার হ্যান্সি ফ্লিকের দল খেলতে নামবে, সেই দিনটি ‘ঐতিহাসিক’ হবে বলে মনে করেন বার্সার সভাপতি হুয়ান লাপোর্তা। তিনি বলেন, ‘ক্লাবের ইতিহাসে এটি (ক্যাম্প ন্যু’র নতুন রূপদান) সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রজেক্ট। কিউলস বা বার্সা ভক্তদের জন্য এটি সামষ্টিক স্বপ্ন। সেই স্বপ্ন সত্যি হওয়ার দ্বারপ্রান্তে।’
ক্যাম্প ন্যু এখন আরও বিস্তৃত, বেড়েছে প্রায় দর্শক ধারণক্ষমতা এবং রয়েছে অনেক সুযোগ-সুবিধাও। নতুন আঙ্গিকে প্রকাশ হতে যাওয়া এই মাঠে মেসির সম্মানে ম্যাচ আয়োজন করতে চান বলে জানিয়েছেন বার্সা সভাপতি। লাপোর্তা জানিয়েছেন, ‘স্টেডিয়ামভর্তি মানুষের সামনে লিও মেসিকে উৎসর্গ করা হবে পুননির্মিত ক্যাম্প ন্যু’র উদ্বোধনের চমৎকার উপায়। এখানে লিও’র জন্য ম্যাচ আয়োজন করতে পারলে আমি আনন্দিতই হব।’
লাপোর্তার প্রত্যাশা– ৪৫ হাজার দর্শকের সামনে চলতি নভেম্বরেই ক্যাম্প ন্যুতে বার্সার প্রথম ম্যাচ আয়োজন করা হবে। যদিও ঠিক কখন থেকে বার্সা ঘরের মাঠে ফিরতে পারবে সেই নিশ্চয়তা মেলেনি এখনও। লা লিগার চ্যাম্পিয়নরা আপাতত ২৫ হাজার ৯৯১ দর্শক নিয়ে ক্যাম্প ন্যুতে খেলা আয়োজনের অনুমতি পেয়েছে। যদিও তারা ৪৫ হাজার ৪০১ দর্শককে জায়গা দেওয়ার অনুমতি চেয়েছে লিগ কর্তৃপক্ষের কাছে। আশা করছে, আরও কিছু সংস্কারের পর সেই অনুমতি মিলবে। এ ছাড়া স্টেডিয়ামের পুরো কাজ শেষ হলে দর্শক ধারণক্ষমতা দাঁড়াবে ১ লাখ ৫ হাজারে।
ইউরোপের সর্ববৃহৎ ভেন্যুতে পরিণত করার লক্ষ্যে ২০২৩ সালের জুনে ক্যাম্প ন্যু সংস্কারের কাজ শুরু হয়। যেখানে আগে দর্শক ধারণ ক্ষমতা ছিল ৯৯ হাজার। পুননির্মাণের এই ব্যয়বহুল প্রকল্পে বিভিন্ন অংশীদারদের কাছ থেকে ১.৬ বিলিয়ন ডলার ঋণ নিতে হয়েছে বার্সাকে। তারা ২০২৩-২৪ মৌসুম থেকে এখনও অলিম্পিক স্টেডিয়ামকে ঘরের মাঠ হিসেবে ব্যবহার করছে, যেখানে আসনের সংখ্যা ৫৫ হাজার।
এসএস/টিএ