কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে আশ্রিতদের মধ্যে প্রথমবারের মতো বৈধ সিম কার্ড বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে ক্যাম্পে অবৈধ সিম ব্যবহারের কারণে অপরাধমূলক কার্যক্রম ও নিরাপত্তা ঝুঁকি বাড়ছিল। এ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সরকার এই উদ্যোগ নিয়েছে।
সোমবার (১০ নভেম্বর) সকালে উখিয়ার ১৮ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আনুষ্ঠানিকভাবে এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মিজানুর রহমান। এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি ইউনাইটেড কাউন্সিল অব রোহাং (ইউসিআর)-এর নবনির্বাচিত সভাপতি ও নির্বাহী সদস্যদের হাতে নির্ধারিত টেলিটক সিম কার্ড তুলে দেন।
মিজানুর রহমান বলেন, দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ সিম ব্যবহারের মাধ্যমে ক্যাম্পে অপরাধমূলক নেটওয়ার্ক গড়ে উঠেছিল, যা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। এখন থেকে শুধুমাত্র বৈধ সিম ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হবে। এটি আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও অপরাধ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তিনি আরও বলেন, এই পদক্ষেপ বাস্তবায়নের পাশাপাশি শিগগিরই লক্ষাধিক অবৈধ সিম বন্ধ করা হবে। অবৈধ সিম বন্ধ করে বৈধ কাঠামোয় আনার মাধ্যমে মানবিক সহায়তা কার্যক্রমের সঙ্গেও সহজে সংযোগ স্থাপন করা সম্ভব হবে।
রোহিঙ্গা প্রতিনিধিরাও এই উদ্যোগকে ইতিবাচকভাবে দেখছেন। ইউসিআরের সংগঠক মাস্টার সৈয়দ উল্লাহ বলেন, বৈধ সিম কার্ড পেলে আমাদের পরিবারগুলোর মধ্যে যোগাযোগ আরও সহজ হবে। আগে অনেকেই অবৈধ সিম কিনতে গিয়ে প্রতারিত হয়েছেন। এখন অনুমোদিত সিম পেলে নিরাপত্তা ও আস্থা দুটোই বাড়বে।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অবৈধ সিম ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল বাংলাদেশ সরকার। কিন্তু এরপরও সিম ব্যবহার বন্ধ হয়নি, ফলে পরিচয় যাচাইয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে।
তবে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন না হওয়া পর্যন্ত নতুন এই উদ্যোগ সফল হলে ক্যাম্পে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা আরও সহজ হবে।
ইউটি/টিএ