জীবন বদলে দিয়েছে বিশ্বকাপ জয়। কেমন সেই পরিবর্তন? জানিয়েছেন মহিলাদের এক দিনের বিশ্বকাপে সেরা ক্রিকেটারের পুরস্কার পাওয়া দীপ্তি শর্মা। বাংলার প্রাক্তন অলরাউন্ডারের বিশ্বাস, তাঁদের সাফল্য বদলে দেবে ভারতের মহিলা ক্রিকেট।
দেশের ক্রীড়ামহলে পরিচিত নাম ছিলেন দীপ্তি। বিশ্বকাপের তিনি তারকার মর্যাদা পাচ্ছেন। একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে ২৭ বছরের ক্রিকেটার বলেছেন, ‘‘বিশ্বকাপ শেষ হওয়ার পরও স্বপ্নের মতো মনে হচ্ছিল। বাড়ি ফেরার পর অনুভব করতে পেরেছি। বাড়ি ফিরে দেখলাম সকলে আমাদের জয় নিয়ে কথা বলছেন। তখন মনে হল, আমরা সত্যিই বিশ্বকাপ জিতেছি।’’
বিশ্বকাপের সাফল্য জীবন বদলে দিয়েছে দীপ্তির। কেমন সেই বদল? তিনি বলেছেন, ‘‘আগে সব জায়গায় স্বাধীন ভাবে একা ঘুরে বেড়াতাম। শপিং মল বা যে কোনও জায়গায় কাউকে কিছু না বলেই চলে যেতে পারতাম। এখন ব্যাপারটা কঠিন হয়ে গিয়েছে। ইচ্ছে হলেই যে কোনও জায়গায় চলে যেতে পারছি না। মাস্ক পরেও লাভ হচ্ছে না। লোকে চিনে ফেলছে। বিশ্বকাপ আমাদের মহিলা ক্রিকেটারদের কতটা পরিচিতি দিয়েছে, তা এর থেকেই বোঝা যায়।’’ বদলে যাওয়া জীবন নিয়ে আপনি কি বিরক্ত? দীপ্তি বলেছেন, ‘‘না, ভালই লাগছে। উপভোগ করছি। গর্ব হচ্ছে। মানুষ যখন আপনার প্রশংসা করে, আপনাকে চিনতে পারে তখন তো ভাল লাগবেই।’’
আপনাদের সাফল্যে ভারতের মহিলা ক্রিকেট কতটা বদলাতে পারে? দীপ্তি বলেছেন, ‘‘বিশ্বকাপের পর নিশ্চিত ভাবে কিছু ইতিবাচক পরিবর্তন হবে। সকলে এই ট্রফিটার অপেক্ষায় ছিল। আমরা আগে অনেক কিছু জিতেছি। কিন্তু কখনও আইসিসি প্রতিযোগিতায় জিততে পারিনি। অবশেষে আমরা পেরেছি। মহিলাদের ক্রিকেট এ বার শুধু এগিয়ে যাবে।’’ তিনি আরও বলেছেন, ‘‘টেলিভিশনে এখন আরও বেশি মহিলাদের ক্রিকেট দেখা যাবে। আমরা এখন অনেক বেশি ম্যাচ খেলার সুযোগ পাচ্ছি। টেস্ট খেলছি আমরা। মহিলাদের প্রিমিয়ার লিগ ক্রিকেটারদের কেরিয়ার তৈরি করে দিচ্ছে। আমার বিশ্বাস, এ বারের বিশ্বজয় প্রচুর মেয়েকে ক্রিকেট খেলতে উৎসাহিত করবে। একটা প্রভাব তো পড়বেই।’’
বিশ্বকাপে ২১৫ রান করার পাশাপাশি ২২টি উইকেট নেন দীপ্তি। সবচেয়ে বেশি উইকেট তিনিই নিয়েছেন। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ফাইনালে করেন ৫৮ রান। নেন ৫ উইকেটও। মহিলাদের বিশ্বকাপ ফাইনালে এমন কৃতিত্ব আর কারও নেই। দীপ্তি বলেছেন, ‘‘প্রথম মহিলা ক্রিকেটার হিসাবে এমন কীর্তি গড়ে ভাল লাগছে। তবে এ সব ভেবে খেলা যায় না। ৫ রান করি বা ৫০ রান, সেটা আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ নয়। দলের জয়ই আসল। সেটাই লক্ষ্য থাকে।’’
দীপ্তির আশা, কয়েক বছর পর ভারতে মহিলাদের ক্রিকেটের ছবি বদলে যাবে। প্রতিযোগিতা বাড়বে। আখেরে লাভবান হবেন ভবিষ্যতের মহিলা ক্রিকেটারেরা।
এবি/টিকে