নির্বাচনে যারা পেশিশক্তি দেখাবে, তারাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে উল্লেখ করেছেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ। তিনি বলেন, ‘যারা পেশিশক্তি দেখাবে তারাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কতটুকু ক্ষতিগ্রস্ত হবে জানি না, তবে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবেই। যেসব কর্মকর্তা সামান্যতম পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করার চেষ্টা করবেন, তারাও ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।
আজ রবিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনের সম্মেলনকক্ষে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ইসির দ্বিতীয় দিনের সংলাপে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন মতবিনিময়সভায় সভাপতিত্ব করেন।
ইসি আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, ‘আমাদের নির্বাচনের এই পুরা সংস্কৃতিটাই নষ্ট হয়ে গেছে। দুঃখজনক হলেও সত্য যে মানুষজন নির্বাচন বিমুখ হয়েছে।
নির্বাচনের নামে বিভিন্ন ধরনের অপকর্ম হয়েছে। আমাদের একটা কালচারাল ড্যামেজ হয়ে গেছে। আমরা যদি কালেক্টিভ রেসপন্সিবিলিটি করতে না পারি, তাহলে আমাদের ক্ষতিটা খুব বড় আকারের হয়ে যাবে।’
তিনি রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আপনাদের মাধ্যমে একটা বিনীত অনুরোধ করব চলুন, আমরা একটা ভালো সংস্কৃতির পুনঃপ্রতিষ্ঠায় সবাই সহায়ক ভূমিকা পালন করি।
সেই ক্ষেত্রে কয়েকটা জিনিস খুব দরকার আর তা হলো পরমতসহিষ্ণুতা।’
মো. সানাউল্লাহ বলেন, ‘ন্যূনতম পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সম্মানজনক সহাবস্থানের ব্যাপারটা খুবই জরুরি।’
সানাউল্লাহ বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের ভুলের শেষ নাই। আপনাদের আমরা অ্যাসিউর করতে চাই যে আমরা সচেতনভাবে এই ভুলের যেন আর পুনরাবৃত্তি না হয়, তা নিয়েই কাজ করছি।’
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে রবিবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর পৌনে ১টা পর্যন্ত গণফোরাম, গণফ্রন্ট, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ, ইসলামী ঐক্যজোট, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (বিএসপি) ও বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির সঙ্গে মতবিনিময় করে ইসি।
দুপুর আড়াইটা থেকে শুরু হয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-বাংলাদেশ জাসদ, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ, তৃণমূল বিএনপি, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর সঙ্গে ইসিরকার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের আগামীকাল সোমবার দেশব্যাপী ডাকা লকডাউনের মধ্যে সব ধরনের যানবাহন চলবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন। রবিবার (১৬ নভেম্বর) রাজধানীর মতিঝিলে সংগঠনটির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হুমায়ূন কবির খান এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান।
সংবাদ সম্মেলনে হুমায়ূন কবির খান বলেন, দেশের যোগাযোগব্যবস্থা সচল রাখতে পরিবহন-মালিক ও শ্রমিকরা দায়িত্ব পালন করছেন। কোনো অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটলে, তা প্রতিহত করা হবে।
একই সঙ্গে প্রশাসনিক কর্মকর্তারা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা এবং দেশের কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে নিরলসভাবে কাজ করছেন।
তিনি বলেন, ‘আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়া অন্তর্বর্তী সরকারের কাজ বাধাগ্রস্ত করতে আওয়ামী লীগ লকডাউন ঘোষণা করেছে। ফেডারেশন এসব কর্মসূচি ও নাশকতার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে এবং ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিক-মালিকদের জন্য সরকারের কাছে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়েছে।’
সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন জানায়, গত বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগের ‘ঢাকা লকডাউন’ কর্মসূচির সময় দেশজুড়ে প্রায় ২০টি পরিবহনে আগুন দেওয়া হয়।
ময়মনসিংহে একটি বাসে আগুন দিয়ে চালক জুলহাসকে হত্যা করা হয়। এর প্রতিবাদে সারা দেশে বিক্ষোভ মিছিল করেন পরিবহন শ্রমিকরা।
উল্লেখ্য, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে রায় ঘোষণা করা হবে আগামীকাল। এর প্রতিবাদে সারা দেশে লকডাউন ডেকেছে আওয়ামী লীগ।
সংলাপ।
এ ছাড়া সংলাপের তৃতীয় দিনে, আগামীকাল সোমবার বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীসহ ১২টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বসবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
সোমবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত বাংলাদেশ লেবার পার্টি, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি, বিকল্পধারা বাংলাদেশ, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি ও বাংলাদেশ মুসলিম লীগ-বিএমএল-এর সঙ্গে সংলাপে বসবে ইসি।
এ ছাড়া সোমবার দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, আমার বাংলাদেশ পার্টি-এবি পার্টি, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, খেলাফত মজলিস ও জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি-জাগপার সঙ্গে মতবিনিময় করবে ইসি।
এমকে/এসএন