যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করতে আগামীকাল যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছেন সৌদির ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান। এই সফরকে ওয়াশিংটন এবং রিয়াদের মধ্যকার সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার ইঙ্গিত হিসেবে দেখা হচ্ছে।
এই সফরে ক্রাউন প্রিন্সের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছেন সৌদির প্রায় এক হাজার প্রতিনিধি। যার মধ্যে সৌদি সরকারের বেশিরভাগ মন্ত্রী ক্রাউন প্রিন্সের সঙ্গে থাকবেন।
জানা গেছে, ট্রাম্প ও সালমানের আলোচনায় প্রধানত প্রতিরক্ষা, জ্বালানি, বেসামরিক পারমাণবিক কর্মসূচি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) এবং বিরল খনিজ উপাদান নিয়ে সমঝোতা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এরমধ্যে আলোচনার কেন্দ্রে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান, বিশেষ করে লকহিড মার্টিনের এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান কেনার চুক্তি। মার্কিন কর্মকর্তারা প্রায় ৫০টি যুদ্ধবিমান বিক্রির বিষয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন।
তবে প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক বার্নার্ড হেইকেল মনে করেন, বিমানে থাকা 'নিষ্ক্রিয়করণ ব্যবস্থা' এবং সৌদির এক ঘাঁটি থেকে আরেক ঘাঁটিতে বিমান স্থানান্তরে যুক্তরাষ্ট্রের অনুমতির শর্তের কারণে সৌদি আরব এই চুক্তিতে আগ্রহী নাও হতে পারে। কারণ নিজেদের টাকায় কেনা বিমান তারা যুক্তরাষ্ট্রের নির্দেশনা অনুযায়ী পরিচালনা করতে চাইবে না।
এছাড়া সৌদি আরবের ওপর বিদেশি হামলার হুমকিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সুরক্ষা নিশ্চিত করে ট্রাম্প প্রশাসন একটি দ্বিপাক্ষিক প্রতিরক্ষা চুক্তির প্রতিশ্রুতি দিতে পারে। সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইকেল র্যাটনির মতে, এটি এমন স্থায়ী নিশ্চয়তা দেবে যা ভবিষ্যতের কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাহী আদেশে বাতিল করতে পারবেন না।
এছাড়া সৌদি আরব যুক্তরাষ্ট্রের কাছে পারমাণবিক অস্ত্র চাইবে। সূত্র বলছে, দেশটি যুক্তরাষ্ট্রকে প্রস্তাব দেবে তাদের পারমাণবিক অস্ত্র যেন সৌদিতে মোতায়েন করা হয়। এতে করে পারমাণবিক সুরক্ষার ছায়ায় আসবে তারা।
সামরিক সরঞ্জামের পাশাপাশি সৌদি আরব তাদের বেসামরিক পারমাণবিক জ্বালানি কর্মসূচি বিকাশের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সহযোগিতা চাইছে।
এছাড়া ট্রাম্প ও প্রিন্স সালমানের মধ্যে দখলদার ইসরায়েলের সঙ্গে সৌদির কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন নিয়ে আলোচনা হতে পারে। যদিও রিয়াদ স্পষ্ট করেছে যে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠনের একটি স্পষ্ট কাঠামো ছাড়া ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ সম্ভব নয়, ট্রাম্প প্রশাসন পারমাণবিক চুক্তির বিষয়টিকে স্বাভাবিকীকরণ থেকে আলাদা করেছে বলে জানা যায়।
অন্যদিকে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং সেমিকন্ডাক্টর প্রযুক্তিও আলোচনায় প্রধান্য পাবে। সৌদি আরব চায় যুক্তরাষ্ট্র শুধু তথ্য কেন্দ্র স্থাপনে সাহায্য না করে, বরং তাদের নিজস্ব এআই ইকোসিস্টেম, মেধাসম্পদ এবং সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহযোগিতা করুক। সৌদি আরব ইতিমধ্যেই বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সরবরাহকারী হওয়ার লক্ষ্য ঘোষণা করেছে।
টিজে/এসএন