চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলায় একটি মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটেছে। সীতাকুণ্ডগামী সিডিএম পরিবহনের বাস মোটরসাইকেল আরোহীকে বাঁচাতে গিয়ে সামনে থাকা কাভার্ডভ্যানে ধাক্কা দিয়ে খাদে পড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই চারজন নিহত এবং অন্তত ৩০ জন আহত হন। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পর আরও একজনের মৃত্যু হয়।
রোববার (১৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কের মীরেরহাট বটতলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহতদের মধ্যে দুইজনের পরিচয় নিশ্চিত করেছে পুলিশ। তারা হলেন চট্টগ্রাম ইয়াং ওয়ান গার্মেন্টসের কর্মী মো. শাহআলম (৫৫) এবং ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলার বাসিন্দা পুলিশ সদস্য মো. কামাল (৪৫)। অপর তিনজনের পরিচয় এখনো জানা যায়নি। আহতদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা সংকটজনক বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রোববার সন্ধ্যার দিকে সিডিএম পরিবহনের বাসটি মীরেরহাট বটতলা এলাকায় ঢোকার সময় সামনে থাকা একটি মোটরসাইকেলকে সাইড দিতে গিয়ে চালক নিয়ন্ত্রণ হারান। দাঁড়িয়ে থাকা কাভার্ডভ্যানে জোরালো ধাক্কা লাগার পর বাসটির সামনের অংশ দুমড়েমুচড়ে যায় এবং মুহূর্তেই খাদে পড়ে যায়। এতে যাত্রীদের আর্তচিৎকারে পুরো এলাকা ভারী হয়ে ওঠে।
খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস, হাইওয়ে পুলিশ ও স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবীরা দ্রুত উদ্ধার কাজে নামেন। ঘটনাস্থল থেকে চারজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। বাকি আহতদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (চমেক) এবং স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়। চমেকে পৌঁছানোর পর আরও একজনকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। পরে নিহতদের মরদেহ চমেক হাসপাতালের মর্গে আনা হয় এবং আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
হাইওয়ে পুলিশের ইন্সপেক্টর মো. জাকির রাব্বানি গণমাধ্যমকে বলেন, বাসটি একটি মোটরসাইকেলকে বাঁচাতে গিয়ে সামনে থাকা কাভার্ডভ্যানে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই চারজন নিহত হন এবং পরে হাসপাতালে আরও একজন মারা যান। আহতদের অনেকেই চিকিৎসাধীন। ঘটনার তদন্ত চলছে।
চমেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের এক চিকিৎসক বলেন, মোট ২১ জনকে হাসপাতালে আনা হয়েছে। অনেকের মাথায় আঘাত, হাত-পা ভাঙা এবং অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ রয়েছে। ১২ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। দুজনের অবস্থা সংকটজনক।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, মীরেরহাট বটতলা এলাকা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। মহাসড়কের পাশে অবৈধ পার্কিং, কাভার্ডভ্যান লরির সারি, নির্মাণসামগ্রীর স্তূপ এবং দ্রুতগতির বাসের প্রতিযোগিতা সবই দুর্ঘটনার বড় কারণ। তাদের ভাষ্য, এখানে প্রায় প্রতিদিনই দুর্ঘটনা ঘটে; কিন্তু কোনোও ব্যবস্থা নেওয়া হয় না।
আরপি/টিকে