নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থাসংক্রান্ত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল ও এসংক্রান্ত আবেদনের ওপর আজ (বৃহস্পতিবার) রায় দেবেন সর্বোচ্চ আদালত। এই রায়ে জানা যাবে, ১৪ বছর আগে বাতিল ঘোষণা করা নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা আদৌ ফিরছে কি না, ফিরলেও কী আঙ্গিকে ফিরবে, কবে থেকে ফিরবে।
গত ১১ নভেম্বর শুনানি শেষ হলে আজ রায় ঘোষণার জন্য রেখেছিলেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন সাত বিচারপতির আপিল বেঞ্চ। সে অনুযায়ী রায় ঘোষণার জন্য আপিল বিভাগের আজকের কার্যতালিকায় ১ ও ২ নম্বর ক্রমিকে রাখা হয়েছে দুটি আপিল ও আবেদন।
রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামানসহ সংশ্লিষ্ট আইনজীবীদের প্রত্যাশা, চতুর্দশ সংসদ নির্বাচন থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার সম্ভাব্য কার্যকারিতা রেখে আপিল মঞ্জুর করে রায় দেবেন সর্বোচ্চ আদালত। সে রকম রায় হলে চতুর্দশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে কার্যকর হবে কাঙ্ক্ষিত এই সরকারব্যবস্থা।
১৪ বছর আগে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করে সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে রায় দিয়েছিলেন সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকের নেতৃত্বাধীন সাত বিচারপতির আপিল বেঞ্চ। রায়ে বলা হয়, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা অর্থাৎ সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী আইন অগণতান্ত্রিক এবং তা সংবিধানের মৌলিক কাঠামোর সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
ফলে তা বাতিলযোগ্য। তবে প্রয়োজনের নিরিখে দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত হতে পারে।
এই রায় ঘোষণার সাত দিন পর অর্থাৎ ১৭ মে অবসরে যান এ বি এম খায়রুল হক। অবসরে যাওয়ার প্রায় ১৬ মাস পর ২০১২ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করা হয়।
তখন সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের বিরুদ্ধে রায় পরিবর্তনের অভিযোগ ওঠে। পূর্ণাঙ্গ রায় থেকে ‘তবে প্রয়োজনের নিরিখে দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত হতে পারে।’ এই পর্যবেক্ষণ বাদ দেওয়া হয়। পরে এই পূর্ণাঙ্গ রায়কে আশ্রয় করে দলীয় সরকারের অধীনে তিনটি বিতর্কিত নির্বাচন করে ক্ষমতায় টিকেছিলেন শেখ হাসিনা।
এমআর/টিএ