বলিউডে নারীদের উপস্থিতি বহুদিন ধরেই অভিনয়, নাচ আর রোমান্সের চরিত্রে ঘুরপাক খেত। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ের চলচ্চিত্র আর ওয়েবসিরিজে দেখা যাচ্ছে ভিন্ন দৃশ্য। নারীরা শুধু কেন্দ্রীয় চরিত্রই নন, ক্ষমতা আর দায়িত্বের আসনে দাঁড়িয়ে অপরাধের বিরুদ্ধে লড়াই করছেন পুলিশ অফিসার হিসেবে। এই পরিবর্তন শুধু গল্পের মোড় নয়, দর্শকের চোখে নারীশক্তির নতুন ব্যাখ্যাও।
রানি মুখার্জির মারদানি এ পরিবর্তনের প্রথম জোরালো ধাক্কা। সেখানে শিবানি রায়ের চরিত্রে শিশু পাচারের বিরুদ্ধে তাঁর অটল লড়াই, নীরব ক্রোধ আর দৃঢ়তা দেখিয়েছে নারী চরিত্র কতটা শক্তিশালী হতে পারে গল্পের কেন্দ্রে দাঁড়ালে।
কারিশমা তন্নার হাশ হাশ চরিত্রও দর্শকদের চোখে আলাদা স্থান করে নেয়। গীতা তেহলান চরিত্রে ছিল দৃঢ়তা, তবে সেই কঠোরতার আড়ালে ছিল আবেগ আর ভাঙা মন। এই দুই দিক মিলিয়ে চরিত্রটি হয়ে ওঠে বাস্তবসম্মত ও স্পর্শকাতর।
রবীণা টান্ডনের আরণ্যক চরিত্রে কস্তুরি ডোগরার লড়াই ছিল দায়িত্ব, ন্যায়বোধ আর প্রবল অন্তর্দ্বন্দ্বের সমন্বয়। রহস্যময় কাহিনিকে সামনে টেনে নেওয়ার পাশাপাশি তিনি নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেন এক স্বাভাবিক, মানবিক পুলিশ হিসেবে।
কারিনা কাপুর খানের দ্য বাকিংহাম মার্ডার্স চরিত্রে দেখা যায় ভাঙা মন, শোক আর দৃঢ় সত্তা। জাস বামরা চরিত্রে তিনি দেখিয়েছেন কেমন করে একজন নারী ব্যক্তিগত বেদনা পেরিয়ে দায়িত্বের জায়গায় উঠে দাঁড়ায়।
সবশেষে শেফালি শাহর দিল্লি ক্রাইম চরিত্রে ভর্তিকা চতুর্বেদী প্রমাণ করে দেন, শক্তি শুধু রূঢ়তা নয়। স্থিরতা, বোঝাপড়া, নেতৃত্ব আর সহমর্মিতা মিলেও শক্তি তৈরি হয়। এই চরিত্র বলিউডে নারী নেতৃত্বের সংজ্ঞা বদলে দিয়েছে।
এই নারী পুলিশ চরিত্রগুলো শুধু গল্পে অপরাধ দমন করছে না, তারা দর্শককে নতুনভাবে ভাবতে বাধ্য করছে। এখানে নারী মানে শুধু রোমান্স বা শৌর্য নয়, বরং দায়িত্ব, নীতি, নেতৃত্ব এবং গভীর মানবিকতা। বলিউডের এই রূপান্তর দেখাচ্ছে ভবিষ্যতের গল্পগুলোতে নারী ফুটে উঠবে আরও বহুমাত্রায়, আরও প্রভাবশালীভাবে।