উনিশ বছর বয়সেই ফুটবল ও শিক্ষার মধ্যে এক কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হলো হ্যান উইলহফট কিংকে। ম্যানচেস্টার সিটির আন্ডার-২১ দলে খেলার সম্ভাবনা থাকা এই মিডফিল্ডার দীর্ঘদিন ধরে স্বপ্ন দেখেছিলেন প্রফেশনাল ফুটবলার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার। টটেনহাম একাডেমি থেকে শুরু করে সিটি পর্যন্ত তার ফুটবল যাত্রা নজরকাড়া, কিন্তু সবকিছুর মধ্যেও অন্তর থেকে অন্য কিছু আকর্ষণ করেছিল-অ্যাকাডেমিক জীবন।
টটেনহামের-এর আন্ডার-১৬ দলে খেলার সময় তার প্রথম বড় চোট তাকে কিছু সময়ের জন্য মাঠ থেকে দূরে ঠেলে দেয়। পরবর্তী বছরগুলোতেও ধারাবাহিকভাবে চোটের কারণে খেলার সময় সীমিত হয়। সিটি আন্ডার-২১ দলে সুযোগ পাওয়া সত্ত্বেও হ্যান বুঝতে পারে যে, শারীরিক সীমাবদ্ধতা এবং বারবার চোটের ঝুঁকি তার দীর্ঘমেয়াদি ফুটবল ক্যারিয়ারকে প্রভাবিত করতে পারে।
ফুটবলের প্রতি ভালোবাসা থাকলেও, হ্যান সবসময় অনুভব করতেন যে তিনি আরও কিছু করতে পারেন। টটেনহাম-এ স্কলার হিসেবে দ্বিতীয় বছরে কষ্টকর সময় পার করার সময়ই প্রথমবারের মতো তিনি ভাবতে শুরু করেন বিদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সম্ভাবনা নিয়ে। ইউনাইটেড স্টেটসের কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ও তাকে খোঁজে, কিন্তু হ্যানের সিদ্ধান্ত পড়ে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে। আইন শিক্ষার জন্য ব্রেজেনোস কলেজে ভর্তি হওয়া এবং অক্সফোর্ড-এর জীবনের নতুন চ্যালেঞ্জ তার নতুন যাত্রা শুরু করে।
ফুটবল থেকে দূরে সরে যাওয়া মানেই হতাশা নয়, বরং নতুন আগ্রহ ও বুদ্ধিবৃত্তিক উদ্দীপনা তাকে আকৃষ্ট করে। গার্দিওলা, কেভিন ডি ব্রুইন, হলা্নডের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকা সত্ত্বেও হ্যান উপলব্ধি করেন যে, ফুটবল তার মেধার সর্বোচ্চ ব্যবহার করতে দিচ্ছে না। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা, বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটানো এবং কলেজ ফুটবলে খেলা-সব মিলিয়ে তার জীবন এখন বহু বেশি পূর্ণ ও উদ্দীপনাময়।
হ্যান উইলহফট কিং নিজের সিদ্ধান্তকে সহজভাবে বর্ণনা করেন, “আমি সবসময় অনুভব করতাম, আমি আরও করতে পারি। ফুটবল ভালো লাগলেও আমি অনুভব করি, আমি সময় নষ্ট করছি। অক্সফোর্ড আমাকে সেই সুযোগ দিল, যেখানে আমি বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে উদ্দীপ্ত থাকব এবং দীর্ঘমেয়াদি স্বপ্নের পথ খুঁজে পাব।” চোট এবং ফুটবল জীবনের সীমাবদ্ধতা তাকে এই সিদ্ধান্তে সাহায্য করেছে, তবে মূল কারণ তার শিক্ষাগত আকাঙ্ক্ষা এবং ভবিষ্যতের পরিকল্পনা।
টিকে/