ভূমিকম্প আমাদের অহংকার মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে আসে : আজহারী

দুইদিনে তিনবার ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে ঢাকায়। শুক্রবার সকালে প্রথমবার ভূমিকম্প অনুভূত হয়। এরপর শনিবার সকালও সন্ধায় দুইবার ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে ঢাকায়। ভূমিকম্প নিয়ে দেশের জনপ্রিয় ইসলামী আলোচক মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারী বলেছেন, সকালের ভূমিকম্পে যখন আমাদের বিল্ডিংটা দুলছে, তখন কিছু মূহূর্তের জন্য একেবারে স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। আতঙ্কে বুকটা কাঁপছিলো। আর কয়েকটা ঝাঁকুনি দিলে ঢাকায় হয়তো আজকে লাশের মিছিল হতো। নিমেষেই গোটা শহর পরিণত হতো নিস্তব্ধ এক গোরস্থানে! দয়াময় এই যাত্রায় আমাদের রক্ষা করেছেন। প্রভু হে, তুমি বড়ই মেহেরবান!

তিনি বলেন, এমন অপরিকল্পিত নগরী, সারি সারি ঝুঁকিপূর্ণ ভবন, দূর্বল ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট; আল্লাহর দয়া ছাড়া বাঁচার কোনো উপায় আমাদের নাই। এই দুর্যোগগুলো আমাদের জন্য গভীর সতর্কবার্তা। গোটা জনপদবাসীকে সামান্য এক ঝাঁকুনি দিয়ে তিনি রিমাইন্ডার দিচ্ছেন। বোঝাতে চাচ্ছেন বাড়াবাড়ি সীমালঙ্ঘন যা-ই করো না কেন, নাটাই কিন্তু আমার হাতে। চাইলে-ই যে কোনো মুহূর্তে তোমাদেরকে আমি ধুলিস‍্যাৎ করে দিতে পারি। তছনছ করে দিতে পারি তোমাদের এই চোখ ধাঁধানো সভ্যতা।

তিনি বলেন, কোরআনের ভাষ‍্যমতে মানুষকে দুর্বল করে সৃষ্টি করা হয়েছে। আসলে ভূমিকম্প আমাদের অহংকার মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে আসে। আমাদের অক্ষমতা দেখিয়ে দিতে আসে। আসে মহাশক্তিধর, মহাপ্রতাপশালী রাজাধিরাজ আল্লাহর সামনে আমরা কতোটা অসহায় আর নিরুপায় তার নমুনা হিসেবে। তিনি তো সেই মহাপরাক্রমশালী সত্তা যার মোকাবেলায় কেউ মাথা তুলতে পারে না, যার সিদ্ধান্তসমূহের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ানোর সাধ্য করো নেই এবং যার ক্ষমতার সামনে সবাই অসহায় ও শক্তিহীন৷ আল্লাহু আকবার!

তিনি আরও বলেন, জুমার দিনের (শুক্রবার, ২১ নভেম্বর) কতো প্ল্যান নিয়ে কিছু লোক আজ ঘর থেকে বেরিয়েছিলো। কিন্তু এখন তারা না ফেরার দেশে। আমাদের বেঁচে থাকাটাই যে আমাদের প্রতি আল্লাহর কত বড় দয়া; তা আমরা উপলব্ধি করি না। আচ্ছা বলুন তো, মৃত্যু কি আমাদের জীবনের পরিকল্পনায় থাকে? জীবনের এতো এতো কাজ, ব্যস্ততা, নানা পরিকল্পনা এগুলো কি আমরা মৃত্যুকে স্মরণ রেখে করি? অথচ মৃত্যুর নির্ধারিত সময় আসলে তো আমাদের সকল ব্যস্ততাই শেষ হয়ে যাবে। আমিহীন দুনিয়ায় সবকিছু চলবে ঠিক আগের মতোই।

মৃত্যুর কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, কার মৃত্যু কখন, কীভাবে আসবে সেটা কেউ জানে না। আমাদের উচিত সর্বদা প্রস্তুত থাকা। তওবা করে রবের কাছে ফিরে আসা। একনিষ্ঠভাবে তার-ই কাছে সমর্পিত হওয়া।

তিনি শেষে বলেন, এ ভূমিকম্প তো কিছুই না। আসল ভূমিকম্প তো সেটা যখন জমীন প্রকম্পিত হবে প্রবল প্রকম্পনে। আর পর্বতমালা চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে পড়বে। অত:পর তা বিক্ষিপ্ত ধূলিকণায় পরিণত হবে। (সুরা আল ওয়াকিয়াহ : ৪-৬)

আরপি/টিকে


Share this news on:

সর্বশেষ

img
হাদির ঘটনায় আসামি শনাক্তের বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার মন্তব্য Dec 13, 2025
img
ওসমান হাদির অবস্থা ‘ক্রিটিক্যাল’: রাশেদ খাঁন Dec 13, 2025
img
ফুটবলের রাজপুত্রের সঙ্গে সাক্ষাৎ বলিউড বাদশার Dec 13, 2025
img
নতুন বছরের শুরুতেই ‘গোলাপ’ নিয়ে পর্দায় ফিরছেন পরী Dec 13, 2025
img
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করতে যমুনায় হাদির পরিবার Dec 13, 2025
img
আজ ঢাকায় আসছেন শোয়েব আখতার Dec 13, 2025
img
ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করে ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ Dec 13, 2025
img

দেশে চলমান সংকট ইস্যু

যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি Dec 13, 2025
img
৪০ মিনিট অপেক্ষা করেও পুতিনের দেখা পেলেন না শেহবাজ শরীফ Dec 13, 2025
img
মনোনয়ন দাখিলে বিস্তারিত পদ্ধতি জানিয়ে পরিপত্র-২ জারি করেছে ইসি Dec 13, 2025
img
নির্বাচনী প্রচারে সর্বাধিক ২০টি বিলবোর্ড, লাউড স্পিকারে বিধিনিষেধ Dec 13, 2025
img
ওসমান হাদির বাড়ির জানালা ভেঙে চুরি Dec 13, 2025
img
কাস্পিয়ান সাগরে রুশ তেল অবকাঠামোয় ফের হামলা কিয়েভের Dec 13, 2025
img
বিষণ্ণতা কতটা ভয়াবহ আমি বুঝি : শুভশ্রী Dec 13, 2025
img
জমেলা টাওয়ারে আগুন নিয়ন্ত্রণে চ্যালেঞ্জ বেজমেন্টের দোকান: ফায়ার সার্ভিস Dec 13, 2025
img
দুর্নীতির অভিযোগে বরখাস্ত ভারতের ৪ ক্রিকেটার Dec 13, 2025
img
যুক্তরাজ্যে নাগরিকত্ব হারানোর ঝুঁকিতে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূতসহ লাখো মানুষ Dec 13, 2025
img
দূষিত শহরের তালিকায় শীর্ষে দিল্লি, ঢাকার বাতাসও ‘অস্বাস্থ্যকর’ Dec 13, 2025
img
ওসমান হাদির গুলিবিদ্ধের ঘটনায় ছাত্র মৈত্রীর প্রতিবাদ Dec 13, 2025
img
সূর্যবংশীকে ছাপিয়ে পাকিস্তানি ব্যাটারের রেকর্ড Dec 13, 2025