চট্টগ্রাম বন্দর প্রসঙ্গে তারেক রহমান

দেশের ভবিষ্যৎ নির্বাচিত সরকারের দ্বারা নির্ধারিত হওয়া উচিত

দেশের ভবিষ্যৎ নির্বাচিত সরকারের দ্বারা নির্ধারিত হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এলডিসি ও চট্টগ্রাম বন্দর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘কেউ বলছে না যে আমরা এলডিসি থেকে উত্তরণ চাই না কিংবা বন্দর সংস্কার চাই না। যুক্তিটি আরো সহজ, আরো মৌলিক : একটি দেশের ভবিষ্যৎ এমন সরকারের দ্বারা নির্ধারিত হওয়া উচিত নয়, যাকে দেশ নির্বাচিত করেনি।’ গতকাল সোমবার রাতে ভেরিফায়েড ফেসবুক পোস্টে তিনি এসব কথা বলেন।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দর বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রবেশদ্বার। সেখানে যা ঘটে তা লাখো মানুষের জীবনে প্রভাব ফেলে, যেকোনো রাজনৈতিক বক্তব্যের চেয়ে বেশি। সম্প্রতি বন্দরের বিষয়ে গৃহীত দীর্ঘমেয়াদি সিদ্ধান্ত সাধারণ সিদ্ধান্ত নয়। এগুলো জাতীয় সম্পদের ওপর কৌশলগত প্রতিশ্রুতি—এগুলোও একটি অনির্বাচিত অন্তর্বর্তী সরকার নিচ্ছে, 
তারেক রহমান বলেন, “চট্টগ্রাম বন্দরে যা দেখা যাচ্ছে তা এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের সঙ্গেও মিলে যায়। কৌশলগত বিকল্পগুলো বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। জনমতকে বিরক্তির বিষয় মনে করা হচ্ছে। যৌক্তিক উদ্বেগকে সরিয়ে রাখা হচ্ছে ‘গতি’ ও ‘অপরিহার্যতা’র নামে।

স্পষ্ট করে বলতে চাই, এটি ব্যক্তিকে আক্রমণ করার বিষয় নয়। এটি প্রতিষ্ঠান রক্ষা এবং এমন নীতিগত নীতির ব্যাপার যে সিদ্ধান্তগুলো বহু দশক প্রভাব ফেলে, সেগুলো জনগণের কাছে দায়বদ্ধ সরকারই নেওয়া উচিত।”

একজন ক্ষুদ্র গার্মেন্টস মালিকের গল্প দিয়ে শুরু করা ফেসবুক পোস্টে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘গাজীপুরের এক ক্ষুদ্র গার্মেন্টস মালিককে কল্পনা করুন। এক দশকের বেশি সময় ধরে তিনি তাঁর ব্যবসা গড়ে তুলেছেন, শতাধিক শ্রমিককে কর্মে রেখেছেন, অতি অল্প মুনাফায় লড়াই করেছেন এবং নির্মম বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার চেষ্টা করেছেন। হঠাৎ একদিন, কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা ছাড়াই তাঁর যেসব শুল্ক সুবিধা রপ্তানিকে টিকিয়ে রাখত, সেগুলো অদৃশ্য হয়ে যায়।

অর্ডার কমতে শুরু করে। আর তখনই শুরু হয় চাপ। কারখানা চালু রাখা, শ্রমিকদের বেতন দেওয়া এবং নিজের পরিবারকে সুরক্ষিত রাখা।’

নারায়ণগঞ্জের এক তরুণীর পরিবারের অনিশ্চয়তার গল্প তুলে ধরে তারেক রহমান বলেন, ‘এবার কল্পনা করুন নারায়ণগঞ্জের এক তরুণীকে। তার পরিবার অনিশ্চয়তায় ডুবে যাচ্ছে। তার বাবা একটি কারখানায় কাজ করেন। সংসার চালাতে তাঁকে নিয়মিত ওভারটাইমের ওপর নির্ভর করতে হয়। কিন্তু রপ্তানির চাপ বাড়লে প্রথমেই ওভারটাইম বন্ধ হয়। এরপর শিফট কমে। তারপর চাকরি যায়। এগুলো খবরের শিরোনাম হয় না। এগুলো সাধারণ ঘরের নিঃশব্দ সংকট।’

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, এই সিদ্ধান্তে তারা কখনো ভোট দিতে পারেনি। তাদের কখনো জিজ্ঞেস করা হয়নি। তাদের সামনে প্রকৃত হিসাবও তুলে ধরা হয়নি। এই কারণেই বাংলাদেশের এলডিসি থেকে উত্তরণের সময়সীমা নিয়ে বিতর্ক সরকারি বিবৃতির চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্ব বহন করে।

সর্বশেষে তারেক রহমান বলেন, “এই কারণে অনেকেই আগামীর জাতীয় নির্বাচন ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির দিকে তাকিয়ে আছে। এটি হবে সুযোগ বাংলাদেশের মানুষের কথা বলার, বেছে নেওয়ার এবং একটি সাধারণ সত্য পুনরায় প্রতিষ্ঠার। এই দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে এই দেশের মানুষই ‘সবার আগে বাংলাদেশ’-এর বিশ্বাসে।”

এবি/টিকে

Share this news on:

সর্বশেষ

img
১০ হাজার নেতাকর্মী নিয়ে বিএনপিতে যোগ দিলেন ড. রেদোয়ান Dec 24, 2025
img
বছরের শেষ, বড়দিনে নিজেকে সাজাতে পারেন সেলিব্রিটি স্টাইলে! Dec 24, 2025
img
গোবিন্দর প্রেমের গুঞ্জন নিয়ে মুখ খুললেন স্ত্রী সুনীতা Dec 24, 2025
img
ঝুঁকিতে ভারতীয় পেসার বুমরাহর শীর্ষস্থান Dec 24, 2025
img
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অনেকে গুলশান-পল্টনে লাইন দিচ্ছে: হাসনাত Dec 24, 2025
img
আরবাজ খান ও সুরার বিয়ের ২ বছর, নাচের ভিডিওতে মলাইকাকে খোঁচা! Dec 24, 2025
img
ফের রিয়ালিটি শোতে জোজো, বিচারক নন তাহলে কোন ভূমিকায় থাকছেন তিনি? Dec 24, 2025
img
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে ভাঙচুর Dec 24, 2025
img
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও সহাবস্থান টেকসই সমাজের পূর্বশর্ত : ধর্ম উপদেষ্টা Dec 24, 2025
img
সিক্যুয়েল আসার আগেই জাপানে মুক্তি পাচ্ছে ‘অ্যানিমেল’ Dec 24, 2025
img
তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে সফরসঙ্গী হচ্ছেন কারা! Dec 24, 2025
ডি ভিলিয়ার্সের রেকর্ড ভাঙলেন সূর্যবংশী, দ্রুততম ১৫০ রানের কীর্তি Dec 24, 2025
img
ভারতীর দ্বিতীয় সন্তানের সঙ্গে আবেগঘন প্রথম সাক্ষাৎ Dec 24, 2025
img
প্রথম আলো-ডেইলি স্টার কার্যালয়ে হামলা, গ্রেপ্তার ৩১ Dec 24, 2025
img
ব্যাডমিন্টনে চমক, চার বাংলাদেশি জুটি কোয়ার্টার ফাইনালে Dec 24, 2025
img
রিয়াজ সুস্থ আছেন, মৃত্যুর খবরের কোনো ভিত্তি নেই Dec 24, 2025
img
কিয়ারার ‘টক্সিক’-এর লুক দেখে মুগ্ধ সিদ্ধার্থ Dec 24, 2025
img
ক্যাটরিনা ‘গৃহবন্দি’ পুত্রসন্তানের আগমনে বদলেছে কৌশল দম্পতির রুটিন Dec 24, 2025
img
রাজধানীতে ককটেল বিস্ফোরণে প্রাণ গেল যুবকের Dec 24, 2025
img
নির্বাচনী ব্যয় কমানো না গেলে দুর্নীতি কমানো যাবে না : দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য Dec 24, 2025