গত চার দশক ধরে ভারতীয় সংগীতশিল্পী অলকা ইয়াগনিক সুরের জাদু দিয়ে লাখো সংগীতপ্রেমীদের মধ্যে ভালোবাসার দ্যুতি ছড়িয়ে আসছে। যেমন তার মিষ্টি গলা ও সুন্দর গান তেমনই মাধুর্যময় তার প্রেম ও বিয়ের গল্প।
বলিউডে প্রায় সময় জৌলুসের আড়ালে সম্পর্কের ভাঙন দেখা যায়। কিন্তু ‘কাহো না প্যায়ার হ্যায়’ খ্যাত এই গায়িকা বিগত ৩৫ বছর ধরে টিকিয়ে রেখেছেন তার লং ডিসট্যান্স বিয়ে।
অলকা ইয়াগনিকের প্রেম কাহিনী কোনো সিনেমার থেকে কম নয়। ঠিক সিনেমার দৃশ্যের মতো অলকার সাথে ট্রেনে দেখা হয় শিলং’র ব্যবসায়ী নীরাজ কাপুরের সাথে। সেখান থেকেই বন্ধুত্ব। সম্পূর্ণ ভিন্ন পেশায় থাকা সত্ত্বেও তারা একে অপরের সঙ্গে ডেটিং শুরু করেন। প্রায় দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে একে অপরকে ডেট করার পর ১৯৮৯ সালে বিয়ে করেন তারা। সাইশা কাপুর নামে একটি কন্যা রয়েছে।
তবে গায়িকার বাবা-মার সম্মতি ছিল না এই সম্পর্কে। তারা মনে করেছিলেন, লং ডিসট্যান্স এই বিয়েতে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। তাই অলকাকে বিয়ের পর নীরাজ কাপুর মুম্বাইয়ে তার ব্যবসা শুরু করেন।
কিন্তু নীরাজ ছোট শহরের সাদামাটা লোক হওয়ায় মুম্বাইয়ে এসে বিপুল পরিমাণ আর্থিক প্রতারণার মুখে পড়তে হয়। যার কারণে অলকা নিজেই স্বামীকে শিলংয়ে ফিরে যেতে বলেন এবং সেখানেই নিজের পুরোনো ব্যবসা ফের চালু করার পরামর্শ দেন।
দূরত্বের কারণে শীঘ্রই তাদের বিয়েতে ফাটল দেখা দিতে শুরু করে এবং এই দম্পতি চার থেকে পাঁচ বছর ধরে একে অপরের সঙ্গে দেখা করা এবং কথা বলা পর্যন্ত বন্ধ করে দেন।
তবে ধীরেধীরে অলকা এবং নীরাজ বুঝতে পারেন, তারা একে অপরকে ছাড়া বাঁচতে পারবেন না। একে অপরের প্রতি খাঁটি ভালবাসা উপলব্ধি করার পরে অলকা মুম্বাইয়ে থাকার সিদ্ধান্ত নেন এবং নীরজ শিলংয়ে ব্যবসা চালিয়ে যান। এই দম্পতি গত ৩৪ বছর ধরে লং ডিসট্যান্স বৈবাহিক সম্পর্ক চালিয়ে যাচ্ছেন।
সব বাধা পেরিয়েও যে ভালোবাসা ও বিয়ে টিকিয়ে রাখা যায় তা প্রমাণ করেছন অলকা ইয়াগনিক। তার প্রেম ও বিয়ের গল্প অনুপ্রেরণা জোগায় বর্তমান প্রজন্মকে।
অলকা ইয়াগনিক ২৫টি বিভিন্ন ভাষায় ২০,০০০ এরও বেশি গান রেকর্ড করা থেকে শুরু করে ৭ বার সেরা প্লেব্যাক সিঙ্গারের জন্য ফিল্মফেয়ার পুরস্কার জেতেন তিনি। ভারতীয় সংগীতাঙ্গনের এক অনন্য শিল্পী অলকা।
আরপি/এসএন