নব্বইয়ের দশকের টেলিভিশন নাটকের এক পরিচিত মুখ আফসানা মিমি আজ (২০ ডিসেম্বর) জন্মদিন উদযাপন করছেন। স্বাভাবিক অভিনয়, সংযত উপস্থিতি এবং চরিত্রের মধ্যে ঢুকে যাওয়ার ক্ষমতায় তিনি দর্শকের কাছে দীর্ঘদিনের জন্য প্রিয় হয়ে উঠেছেন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অভিনেত্রী থেকে নির্মাতায় রূপান্তরিত হওয়া এই যাত্রার কথা আজ স্মরণ করা হয়ে উঠেছে বিশেষভাবে।
অভিনয়জীবনের শুরু টেলিভিশন নাটক থেকেই। বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেসরকারি চ্যানেলের নাটকগুলো তখন পারিবারিক বিনোদনের প্রধান মাধ্যম। আফসানা মিমি অভিনয় করেছেন ‘একদিন হঠাৎ’, ‘অপেক্ষা’, ‘শেষ বিকেলের মেয়ে’, ‘নির্জন দ্বীপ’ প্রভৃতি জনপ্রিয় নাটকে, যেখানে সম্পর্ক ও মানবিক টানাপোড়েনের গল্পে তিনি ছিলেন অত্যন্ত বিশ্বাসযোগ্য। সাধারণ নারীর অনুভূতি, নীরব কষ্ট এবং আত্মসম্মানের লড়াই তিনি পরিমিত অভিব্যক্তিতে ফুটিয়ে তুলেছিলেন, যা দর্শকের সঙ্গে গভীর সংযোগ তৈরি করেছিল।
অভিনয়সাফল্যের মাঝেই জন্ম নেয় গল্প বলার অন্য আকাঙ্ক্ষা। ক্যামেরার সামনে কাজ করতে করতে অনুভব করেন, অনেক গল্প আরও গভীরভাবে বলা প্রয়োজন। সেই জায়গাটিই তার নির্মাণের পথপ্রদর্শক হয়।
নির্মাতা হিসেবে আফসানা মিমি পরিচিত হয়েছেন ‘ময়ূরপঙ্খী’, ‘সন্ধ্যা মালতী’, ‘নীল রোদ্দুর’ ও ‘একাকিত্ব’ নাটকের মাধ্যমে। এসব নাটকে নারীজীবনের জটিলতা, সম্পর্কের ভাঙাগড়া, একাকিত্ব ও আত্মঅনুসন্ধানকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। অতিনাটকীয়তার বদলে তিনি গুরুত্ব দিয়েছেন নীরবতা, সংলাপের গভীরতা ও দৃশ্যের ভাষায়। বিশেষ করে ‘ময়ূরপঙ্খী’ নাটকটি তার নির্মাণে সংবেদনশীলতার পরিচয়কে আরও দৃঢ় করেছে।
সময় বদলেছে, টেলিভিশন নাটকের ধারা ও দর্শকের রুচিও বদলেছে। আফসানা মিমি সেই পরিবর্তনের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিয়েছেন। নিয়মিত আলোচনায় না থাকা সত্ত্বেও কাজের মানকেই প্রাধান্য দিয়েছেন। ব্যক্তিজীবনে প্রচারবিমুখ হলেও সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ইস্যুতে তার সচেতনতা মাঝে মাঝে আলোচনায় এসেছে।
জন্মদিন উপলক্ষে সামাজিক মাধ্যমে ভক্ত ও সহকর্মীরা তাকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন। নব্বইয়ের দশকের দর্শকের কাছে আফসানা মিমি আজও নস্টালজিয়ার এক আবেগী নাম, আর তার নির্মাণের মাধ্যমে সংবেদনশীলতা ও শিল্পীভাবের উপস্থিতি বজায় রেখেছেন।
এমকে/টিএ