যে যেভাবেই বলেন না কেন, আমি নির্বাচন দেখি না : জিল্লুর রহমান

টিভি উপস্থাপক ও সাংবাদিক জিল্লুর রহমান বলেছেন, আজকে যে পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ যাচ্ছে, এখন বিপ্লবী সরকারের দাবি উঠেছে। আরো অনেক কিছু হয়ত আমাদেরকে দেখতে হবে। এই পরিস্থিতিটা যে হবে, এটা কিন্তু আমি অনেক আগেই পূর্বাভাস করেছি। অনেকে এখনো নির্বাচন নিয়ে খুব আশাবাদী।

এতকিছুর মধ্যে আরো অনেক কিছু হবে। লাখ লাখ মানুষ ঢাকায় আসবে কবে, কী কারণে, কোনটা শোকের, কোনটা আনন্দের- সেই আলোচনায় না-ই-বা গেলাম। বাস্তবতা হচ্ছে, আমি কিন্তু নির্বাচন দেখি না। যে যেভাবেই বলেন না কেন।

আর আমি এ কথা বহুবার বলেছি।

শনিবার (২০ ডিসেম্বর) রাতে নিজের ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত এক ভিডিওতে এসব কথা বলেন তিনি।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সম্মুখভাগের যোদ্ধা, ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির হত্যাকাণ্ড নিয়ে জিল্লুর রহমান বলেছেন, যেকোনো মৃত্যু নিঃসন্দেহে কষ্টের, দুর্ভাগ্যজনক ও শোকাবহ। আমরা স্বীকার করি, আর না করি, মানি, আর না মানি- তাতে কিছুই যায় আসে না, কাকে কতখানি সম্মান দিলাম, কার জানাজা কত বড় হলো, কাকে আমরা কোথায় দাফন করলাম, কার জন্য আমরা রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করলাম, কী করলাম না অথবা কার উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা বা প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি কোনো বিবৃতি দিলেন কি না, কখন বক্তৃতা করলেন- এগুলো কিছু যায় আসে না।

আসলে যে যায়, সে যায় এবং তার যন্ত্রণা, তার চাওয়ার যন্ত্রণাটা, তার পরিবার, তার সন্তান, তার স্ত্রী, তার ভাইবোন, মা-বাবা সবচেয়ে বেশি বোঝে। আমরা যতই বলি না কেন পরিবারের দায়িত্ব নেব, এটা করব, সেটা করব, রাষ্ট্র যত কথা বলুক না কেন- এতে আসলে সমস্যার সমাধান হয় না। আর ওই শোক-কষ্টটাও কাটানো যায় না। আর আমাদের মতো রাষ্ট্র আসলে কী করে শেষ পর্যন্ত, কতখানি করে, আর ক’টা কথা দেয়, আর ক’টা কথা রাখে- সেটা নিয়ে অনেক প্রশ্ন আছে।

তিনি বলেন, কথা বলার তো অনেক বিপদ আছে।

কথা বলতে গেলে অনেকেই পছন্দ করেন না। আমি আগেও বলেছি যে হয়ত আমার কথা যাদের পক্ষে যায়, তারা যদি কখনো দেখেন, এদিক থেকে ওদিক হয়েছে, তখনই তারা ক্ষিপ্ত হয়ে যান। অর্থাৎ তাদের আশার বাইরে কোনো কথা বলা যাবে না। এমনকি এই রাজনৈতিক আলোচনা করতে করতে আমার অনেক ঘনিষ্ঠ জনের সঙ্গেও সম্পর্কের এক ধরনের টানাপড়েন তৈরি হয়েছে। কিন্তু আপনারা যদি কেউ আমার বক্তব্য জাস্ট তৃতীয় মাত্রায় যেটুকু আমার বলবার সুযোগ আছে কিংবা আমার এই ব্লগে কিংবা আমার লেখালেখিতে আমার কনসিসটেন্সির কোনো ঘাটতি নেই। এবং আমি গত কয়েক মাসে বা গত দু-তিন বছরে যা বলেছি দেখবেন, সবগুলো ঘটনা ঘটেছে, নানাভাবে ঘটেছে। আজকে যে পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ যাচ্ছে, এখন বিপ্লবী সরকারের দাবি উঠেছে। আরো অনেক কিছু হয়ত আমাদেরকে দেখতে হবে। এই পরিস্থিতিটা যে হবে, এটা কিন্তু আমি অনেক আগেই পূর্বাভাস করেছি। অনেকে এখনো নির্বাচন নিয়ে খুব আশাবাদী। এতকিছুর মধ্যে আরো অনেক কিছু হবে। লাখ লাখ মানুষ ঢাকায় আসবে কবে, কী কারণে, কোনটা শোকের, কোনটা আনন্দের- সেই আলোচনায় না-ই-বা গেলাম। বাস্তবতা হচ্ছে, আমি কিন্তু নির্বাচন দেখি না। যে যেভাবেই বলেন না কেন। আর আমি এ কথা বহুবার বলেছি।

এ সাংবাদিক বলেন, আবু সাঈদ জুলাই আগস্টের অভ্যুত্থানের মূল নায়ক, যারা জীবন দিয়েছে প্রত্যেকটা জীবন মূল্যবান। প্রত্যেকের অবদান আছে। আবু সাঈদ যদি বন্দুকের নলের সামনে সাহস করে সেদিন না দাঁড়াতো, এই অভ্যুত্থান অভ্যুত্থানের রূপ নিতো কি না সেটা একটা বড় প্রশ্ন। আমরা জানি না, তার জন্য আমরা কতখানি কী করতে পেরেছি।

তিনি আরো বলেন, আবার এখন দেখেন, অনেক সময় কথা বলি, কখনো জামায়াত-শিবির, কখনো বিএনপি, কখনো আওয়ামী লীগ, কখনো এনসিপি আমাদের উপরে ঝাপিয়ে পড়ে কথায় কথায়। আওয়ামী লীগের সময় যেটা অন্যায় হয়েছে, সেটা বলি। এখনো যেটা অন্যায়, সেটা অন্যায়। আর কারো দোষ-ত্রুটি থাকলে সেটাও আমরা বলা বাদ দিই না। কিন্তু যে কথা নিজেরা, নিজের অধিকারের কথা যারা বলতে সাহস পায় না কখনো, তারা যখন পুরো দায়টাই অন্যের উপরে চাপায়, তখন খুব একটা হাসি লাগে। এখনো এই যে অনেকে অনেক কথা বলেন, বড় বড় কথা বলছেন, এখন এখন অনেকে বীর সেজেছেন। শেখ হাসিনার আমলে তাদের নাম-গন্ধ, কথাবার্তা কেউ আমরা শুনিনি। কিন্তু এখন তো অনেকে অনেক কিছু বলছেন।

পিএ/টিএ 

Share this news on:

সর্বশেষ

img
বাপ স্বতন্ত্র, বেটিও স্বতন্ত্র, সময়ই উত্তর দেবে : রুমিন ফারহানা Dec 21, 2025
img
খেলোয়াড় ও কোচ সরবরাহে সৌদির প্রস্তাবে আপত্তি বিসিবির Dec 21, 2025
img
সুনামগঞ্জে ইজিবাইকের ভাড়া নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ৩০ Dec 21, 2025
img
ফেনীতে হাদির ঘটনায় জড়িতদের বিচারের দাবিতে এনসিপির মশাল মিছিল Dec 21, 2025
img
'ধুরন্ধর'-এর প্রশংসায় পরিচালক সন্দীপ রেড্ডি Dec 21, 2025
img
এভারটনকে ১-০ গোলে হারিয়ে শীর্ষস্থান পুনরুদ্ধার করল আর্সেনাল Dec 21, 2025
img
সুদানে নিহত ৬ সেনার জানাজা আজ Dec 21, 2025
img
একটি মাছির কারণেই বদলে গেল গল্ফার টমির ভাগ্য Dec 21, 2025
img
গিলের উপর কারও কুনজর পড়েছে : গাভাসকর Dec 21, 2025
img
বাড্ডায় কারখানায় আগুন, নিয়ন্ত্রণে ৮ ইউনিট Dec 21, 2025
img
হাদির নিথর দেহ জন্মভূমিতে না নেওয়ায় মর্মাহত এলাকাবাসী Dec 21, 2025
img
পথদুর্ঘটনায় আহত নোরা, তবু চিকিৎসকদের কথা না শুনে ছুটলেন কোথায়? Dec 21, 2025
img
৪১ বছর বয়সে ফের ইউরোপিয়ান ফুটবলে চিয়াগো সিলভা Dec 21, 2025
img
শীত নিয়ে আবহাওয়া অফিসের নতুন বার্তা Dec 21, 2025
img
ফেরি থেকে ট্রাকসহ ৫ যান ধলেশ্বরী নদীতে, ৩ নিথর দেহ উদ্ধার Dec 21, 2025
img
চাকরিতে যোগ দিলেন না ভারতে হিজাব টেনে খুলে দেয়া সেই নারী চিকিৎসক Dec 21, 2025
img
প্রিয় হাদি, তুমি থাকবে সব বাংলাদেশির বুকের ভেতর : জানাজায় প্রধান উপদেষ্টা Dec 21, 2025
img
হান্নান মাসউদকে হত্যার হুমকি দেওয়া সেই যুবক আটক Dec 21, 2025
img
ভোটের সময় ৫ দিন মাঠে থাকবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী Dec 21, 2025
img
যে যেভাবেই বলেন না কেন, আমি নির্বাচন দেখি না : জিল্লুর রহমান Dec 21, 2025