আমাদের সকলকে এখন ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে : তারেক রহমান

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, আমাদের সকলকে এখন ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। সেটি আমরা বিএনপির নেতাকর্মীরাই হই, সেটি অন্য দলের নেতাকর্মী- যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে তারাও।

রোববার (২১ ডিসেম্বর) বিকেলে বগুড়ায় শহীদ টিটু মিলনায়তনে জুলাই শহীদদের স্মরণে স্থাপিত ডিজিটাল স্মৃতিস্তম্ভের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

শহীদ হওয়া ওসমান হাদির স্মৃতিচারণ করে তারেক রহমান বলেন, আজকে এই যে শহীদ ওসমান হাদি শহীদ হয়েছেন, যে মানুষটি শহীদ হয়েছেন, এই মানুষটিও কিন্তু গণতন্ত্রের পথেই ছিলেন। এই মানুষটিও কিন্তু আগামী নির্বাচনের একজন প্রার্থী ছিলেন। অর্থাৎ উনি একজন প্রার্থী ছিলেন। ঢাকা-৮ আসনের উনি প্রার্থী ছিলেন এবং এটির মাধ্যমে প্রমাণিত হয় যে শহীদ ওসমান হাদী নিজেও গণতন্ত্রের বা ভোটের রাজনীতিতে বিশ্বাস করতেন। বিশ্বাস করতেন উনি এবং সেই জন্যই উনি প্রার্থী ছিলেন। কাজেই আজকে শহীদ ওসমান হাদির প্রতি যদি সম্মান রাখতে হয় আমাদেরকে। আজকে আমাদের জুলাই শহীদদের প্রতি যদি সম্মান রাখতে হয়, জুলাই যোদ্ধাদের প্রতি যদি সম্মান রাখতে হয়, আজকে আমাদের ৭১ এর শহীদদের প্রতি যদি সম্মান রাখতে হয়, ৭১ এর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি যদি সম্মান রাখতে হয়, তাহলে আমাদের একটাই লক্ষ্য হতে হবে- দেশের মানুষের জন্য যেভাবে হোক শান্তি প্রতিষ্ঠা করা এবং দেশের জন্য কাজ করা দেশকে সামনে নিয়ে যাওয়া।

তারেক রহমান বলেন, জুলাই শহীদদের স্মরণে স্থাপিত ডিজিটাল স্মৃতিস্তম্ভ। জুলাই আন্দোলনে আমরা আমাদের যে সকল ভাইদেরকে হারিয়েছি যারা, শহীদ হয়েছেন, স্বাভাবিকভাবেই তারা এই প্রজন্মের তরুণ সদস্য ছিলেন। এই প্রজন্মের বা এই যুগের অন্যতম আবিষ্কার বা অন্যতম খুব পপুলার একটি মাধ্যম হচ্ছে আইটি মাধ্যম। ইন্টারনেট যেটিকে আমরা বলি। স্বাভাবিকভাবে এই ইন্টারনেটের সাথে আমাদের তরুণ প্রজন্ম যারা এখন তাদের একটা খুব নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে, কিন্তু এই ইন্টারনেটের একটি সমস্যা হয়তো রয়ে গেছে। সেটা হচ্ছে ব্যয়বহুল। সবার জন্য অনেক সময় এফোর্ড করা সম্ভব হয়ে ওঠে না।

ইন্টারনেট সুবিধা তরুণদের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার অঙ্গীকার করে তিনি বলেন, আল্লাহর রহমতে আগামী নির্বাচনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বাংলাদেশের মানুষের সমর্থনে ইনশাআল্লাহ সরকার গঠনে সক্ষম হলে আমরা এই ইন্টারনেট সেবাটাকে আরও ইজি করে আনতে চাই মানুষের জন্য। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের জন্য। যেমন আজ আজিজুল হক কলেজে যে কানেকশনটা দেওয়া হয়েছে এটি ফ্রি কানেকশন। যে কোনো সদস্য এক থেকে দেড় ঘণ্টা ফ্রি ইন্টারনেট পাবে। এক দেড় ঘণ্টা পরে সেটা ডিসকানেক্ট হয়ে যাবে। তখন আবার নতুন করে সে ওটাতে লগইন করতে পারবে। অর্থাৎ তার যতক্ষণ সময় সেটি করতে পারবে এবং এটির জন্য তাকে কোন পে করতে হবে না।

স্বাস্থ্য খাতের সংস্কার নিয়ে তারেক রহমান বলেন, স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগের মাধ্যমে আমরা দেশে মোটামুটিভাবে পরিকল্পনা যে আমরা এক লাখ স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ করতে চাই এই স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ করে একদিকে যে রকম কর্মসংস্থান হবে আবার একইভাবে আমরা নারীদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে চাই। এক লাখের মধ্যে অন্তত ৮০ থেকে ৮৫ শতাংশ আমরা নারী স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ করতে চাই।

দেশের আইটি পার্কগুলোর অব্যবস্থাপনা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, গত স্বৈরাচারের আমলে জনগণের অর্থ তসরুপ করার মাধ্যমে তারা কতগুলো ডিজিটাল পার্ক তৈরি করেছে দেশের বিভিন্ন জায়গায়, কিন্তু ডিজিটাল পার্কগুলোর কিন্তু কোনো কাজ হয় না। এখানে ম্যাক্সিমাম বন্ধ হয়ে পড়ে আছে। আমরা এগুলোকে রিফাবলিশ করবো। রিফাবলিশ করার মাধ্যমে আমাদের যে তরুণ সমাজের যারা সদস্য আছে. যারা অনলাইনে বিভিন্ন রকম কাজ করে কন্টেন্ট মেক করে অথবা ডিজাইনের কাজ করে- এই মানুষগুলোকে আমরা এখানে জায়গা করে দেব।

বিদেশে কর্মসংস্থান বৃদ্ধি সম্পর্কে তারেক রহমান বলেন, আমরা তাদেরকে ভাষা শিক্ষা দেব। তাদেরকে বিভিন্ন প্রকার ট্রেনিং আমরা দেব, ওখানে সহজে যাতে সে চাকরি পেতে পারে। আমরা এভাবে পুরা পরিকল্পনা সাজাচ্ছি।

বক্তব্যের শেষে দলের ৩১ দফা ও নতুন স্লোগানের ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, মূল কথা হচ্ছে আমাদেরকে এখন সামনে যেই সময় এসেছে, এই সময়ে আমাদের মূল কাজ একটাই- করবো কাজ গর্ব দেশ, সবার আগে বাংলাদেশ। এটাই হতে হবে আমাদের মূল লক্ষ্য। এটাই হতে হবে মূল টার্গেট।

অনুষ্ঠানে বগুড়া জেলা বিএনপির সভাপতি জিয়াউল করিম বাদশার সভাপতিত্বে দলটির কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ এবং অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

এসএন

Share this news on:

সর্বশেষ

img
বিএনপি ধ্বংসের কিনারা থেকে দেশকে রক্ষা করবে: তারেক রহমান Dec 21, 2025
img
‘বার্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদন’ নিয়ে মাউশির নতুন নির্দেশনা Dec 21, 2025
img
দুই দফা না মানায় কর্মসূচি নিয়ে ইনকিলাব মঞ্চের সংবাদ সম্মেলন কাল Dec 21, 2025
img
নিধির পর এবার ভক্তদের হেনস্তার শিকার সামান্থা Dec 21, 2025
img
২৫ লাখ ডলার উপহার পেলেন ‘বন্ডাই হিরো’ আহমেদ Dec 21, 2025
img
প্রকাশ্যে ধর্মেন্দ্রর শেষ ভিডিও! Dec 21, 2025
img

হাদি হত্যাকাণ্ড

ফয়সালসহ সংশ্লিষ্টদের ব্যাংক হিসাবে ১২৭ কোটি টাকার ‘লেনদেন’ Dec 21, 2025
img
ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগের মাধ্যমে আফগানিস্তানে ক্রিকেটের নতুন অধ্যায় শুরু Dec 21, 2025
img
‘কঠিন হয়ে পড়েছে’ পুলিশ, প্রশাসন ও বিচার পরিচালনা : আইন উপদেষ্টা Dec 21, 2025
img
প্রতিদিন গ্রেপ্তার ২ হাজার, নির্বাচনে উৎসবের আমেজ ফিরবে : ইসি Dec 21, 2025
img
বিশ্বের প্রথম ৭০০ বিলিয়ন ডলার সম্পদের মালিক ইলন মাস্ক Dec 21, 2025
img
ভবিষ্যতে বিএনপি শিক্ষার ওপর কোনো ভ্যাট বসাবে না : মাহদী আমিন Dec 21, 2025
img
ওসমান হাদি ছিলেন আধিপত্যবাদ-দুর্নীতির বিরুদ্ধে আপসহীন বীর : শিবির সভাপতি Dec 21, 2025
img
‘অস্ট্রেলিয়ান দল সবচেয়ে বাজে দল’ মন্তব্যে অজি তারকার জবাব Dec 21, 2025
img
দুর্দান্ত বোলিংয়ে দুবাইকে জিতিয়ে ম্যাচসেরা মোস্তাফিজ Dec 21, 2025
img
হাদি হত্যার বিচারের দাবিতে ৪ ঘণ্টা মহাসড়ক অবরোধ, তীব্র যানজট Dec 21, 2025
img
চূড়ান্তভাবে নিবন্ধন পেল তারেক রহমানের আমজনতার দল Dec 21, 2025
img
জেমস বন্ড এবার নেটফ্লিক্সে Dec 21, 2025
img
নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডে রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি : ইসি Dec 21, 2025
img
সরফরাজের পাকিস্তানের কাছে ফের ভারতের পরাজয় Dec 21, 2025