সিলেট-৫ (জকিগঞ্জ-কানাইঘাট) আসনে জামায়াতে ইসলামীর মনোনীত প্রার্থী হাফিজ মাওলানা আনওয়ার হোসাইন খানকে চূড়ান্ত করেছে ৮ দলীয় ইসলামী জোট। জোটের প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িপাল্লা প্রতীকে তিনি সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী। এই আসনটিতে বিএনপি এখনো প্রার্থী দেয়নি। জামায়াতে ইসলামী এই আসনটিকে তাদের অন্যতম শক্তিশালী ও সম্ভাবনাময় আসন হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
সিলেটের রাজনৈতিক সূত্র বলছে সিলেট-৫ আসন ঐতিহাসিকভাবে জামায়াতে ইসলামীর একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। ২০০১ সালে এই আসন থেকে জামায়াত প্রার্থী মাওলানা ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
এবার নতুন প্রার্থী এবং একইসঙ্গে প্রার্থীও প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য পদে নির্বাচন। ক্লিন ইমেজের অধিকারী হাফিজ মাওলানা আনওয়ার হোসাইন খান জামায়াতের জেলা আমির। তার বাড়ি কানাইঘাটে। গত কয়েক বছর ধরে তিনি নিয়মিতভাবে জকিগঞ্জ ও কানাইঘাট উপজেলায় অবস্থান করে তৃণমূল পর্যায়ে গণসংযোগ ও সাংগঠনিক কার্যক্রম জোরদার করেছেন। সবশেষ ৮ দলীয় জোটের প্রার্থী হিসেবে চূড়ান্ত মনোনয়ন পেয়েছেন।
আনোয়ার হোসেনের ঘনিষ্ঠজন সংবাদমাধ্যমকে জানান, বন্যা ও খরা মোকাবিলায় সহযোগিতা, শীতবস্ত্র বিতরণ, অসহায় ও নির্যাতিত মানুষের পাশে দাঁড়ানো, মসজিদ ও মাদ্রাসার উন্নয়নসহ দীর্ঘদিনের মানবিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে তিনি এলাকাবাসীর কাছে একজন ‘নীরব সেবক’ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন। স্থানীয়দের সুখ-দুঃখে, সামাজিক আনুষ্ঠানে ধারাবাহিক উপস্থিতি তাঁকে ভোটারদের আস্থার কাছাকাছি নিয়ে গেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
রাজনৈতিক জীবনের শুরুতে তিনি ইসলামী ছাত্রশিবিরের সিলেট ও মৌলভীবাজার জেলা শাখার সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে জামায়াতে ইসলামীতে যোগ দিয়ে মৌলভীবাজার জেলা এবং সিলেট জেলা জামায়াতের উত্তর শাখার সেক্রেটারি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এরপর টানা ১৫ বছর জেলা আমীর হিসেবে নেতৃত্ব দেওয়ার পর বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও সিলেট জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
শিক্ষাক্ষেত্রেও তাঁর রয়েছে দীর্ঘ অভিজ্ঞতা। প্রায় এক দশক মৌলভীবাজারের শাহ মোস্তফা একাডেমির প্রিন্সিপাল হিসেবে দায়িত্ব পালন করার পাশাপাশি সিলেটের ঐতিহ্যবাহী শাহজালাল জামেয়া মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করেছেন তিনি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনা, মেধাবৃত্তি প্রদান ও শিক্ষার্থীদের মানোন্নয়নে বিভিন্ন উদ্যোগের কারণে শিক্ষা অঙ্গনে তিনি একজন গ্রহণযোগ্য ও সম্মানিত ব্যক্তিত্ব হিসেবে পরিচিত।
ছাত্রজীবনে হিফজ সম্পন্ন করার পর দাখিল, আলিম, ফাজিল ও কামিল প্রতিটি স্তরে কৃতিত্বের সঙ্গে উত্তীর্ণ হন আনোয়ার হোসেন খান। ফুলবাড়ি আজিরিয়া আলিয়া মাদ্রাসা ও সিলেট সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা থেকে কামিল (মাস্টার্স) ডিগ্রি অর্জনের মাধ্যমে তিনি একজন মেধাবী আলেম হিসেবেও সুপরিচিত।
স্থানীয় সূত্র বলছে, তৃণমূলে বিএনপি'র প্রতিদ্বন্দ্বী শক্ত প্রার্থী না থাকা এবং অন্য দলগুলোর মধ্যেও পরিচিত প্রার্থী না থাকায় সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছেন এই জামায়াত নেতা। যে কারণে জামায়াত বিপুল ব্যবধানে জয়ের আশা করছে।
ইউটি/টিএ