সিনেমার ইতিহাসে এমন কিছু গান আছে যা প্রজন্মের পর প্রজন্মকে মোহিত করে রাখে। ঠিক তেমনই একটি গান হলো ‘এক দো তিন’। ১৯৮৮ সালে মুক্তি পাওয়া এন.চন্দ্র পরিচালিত ‘তেজাব’ সিনেমার এই গান আজও হিন্দি সিনেমার অন্যতম আইকনিক নৃত্য সংগীত হিসেবে বিবেচিত।

মুক্তির ৩৬ বছর পরেও গানটি নিয়ে আলোচনা ও উদযাপন এখনো থেমে নেই। এই গানের প্রাণকেন্দ্র ছিলেন মাধুরী দীক্ষিত যার পারফরম্যান্স গানটিকে সাংস্কৃতিক মাইলফলকে পরিণত করেছে।
‘তেজাব’ ছবিতে তিনি অভিনয় করেন ‘মোহিনী’ চরিত্রে। এক তরুণী যাকে তার ঋণগ্রস্ত বাবা মঞ্চে নাচতে বাধ্য করেন। বাইরে থেকে গানটি আনন্দময় মনে হলেও এর অন্তরালে রয়েছে গভীর আবেগ। মোহিনী পুরুষ দর্শকদের সামনে নৃত্য পরিবেশন করে আর গুণে গুণে বলে কত দিন ধরে সে তার প্রিয় মানুষের অপেক্ষায় আছে। এই আবেগী প্রেক্ষাপট গানটিকে শুধু নাচের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখেনি বরং দিয়েছে আলাদা গভীরতা।
গানটির কোরিওগ্রাফি করেন কিংবদন্তি সারোজ খান। ১৯৮৯ সালে সারোজ খান ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ডে ‘সেরা কোরিওগ্রাফার’র পুরস্কার পান এই গানের জন্য । জানা যায়, মাধুরী দীক্ষিত টানা ১৬ দিন অনুশীলন করেন এবং প্রায় এক সপ্তাহ ধরে ‘এক দো তিন’র শ্যুটিং চলে।
গানটির লেখার পেছনেও রয়েছে বিশেষ গল্প। গীতিকার জাবেদ আখতার জানান, ‘সংখ্যা দিয়ে গান লেখার ধারণাটি পেয়েছিলেন সঙ্গীত পরিচালক লক্ষ্মীকান্তের কাছ থেকে যিনি গণপতি পূজার একটি সুরকে ‘১, ২, ৩, ৪, ৫, ৬’ এভাবে গেয়ে শুনিয়েছিলেন আর জাবেদ সেই সংখ্যাগুলোকেই গানের মূল ভিত্তি করে অসাধারণ লিরিক্স তৈরি করেন যা প্রাণ পায় মাধুরীর দুর্দান্ত নাচের দৃশ্যে।’
পুরোনো এক সাক্ষাৎকারে মাধুরী দীক্ষিত গানটির জনপ্রিয়তা নিয়ে বলেন, ‘‘এই গানটি সবাই জানে। আজও গানটির জনপ্রিয়তা এতটুকু ম্লান হয়নি যা আমার জন্য বড় সৌভাগ্যের।’
মুক্তির ৩৬ বছর পরেও ‘এক দো তিন’ শুধু একটি গান নয় বরং বলিউডের এক আইকনিক সৃষ্টি। কোরিওগ্রাফি, গান আর মাধুরী দীক্ষিতের অনবদ্য পারফরম্যান্স সব মিলিয়ে এটি আজও সিনেমাপ্রেমীদের কাছে এক নস্টালজিয়া।
এসকে/টিকে