পার্বত্য বান্দরবানের দুর্গম সীমান্ত এলাকায় মায়ানমারে অবৈধ পাচার রোধে তৎপরতা জোরদার করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। এরই ধারাবাহিকতায় থানচি উপজেলার বলিপাড়া ব্যাটালিয়ন (৩৮ বিজিবি) এলাকায় পরিচালিত এক অভিযানে বিপুল পরিমাণ মশারি ও নৌকার প্রপেলার জব্দ করা হয়েছে। এ সময় পাচারের সঙ্গে জড়িত পাঁচজনকে আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) রাত ৯টার দিকে বলিপাড়া জোন (৩৮ বিজিবি)-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. ইয়াসির আরাফাত হোসেন স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ডিসেম্বর গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়—থানচি বাজার পোস্টের বিপরীত পাশে সীমান্তবর্তী জিনয়ং পাড়া এলাকায় একটি ট্রাক থেকে সাদা বস্তাবন্দি মালামাল সীমান্ত অতিক্রম করে মায়ানমারে পাচারের উদ্দেশ্যে দুটি নৌকায় তোলা হচ্ছে। এ তথ্য পাওয়ার পরপরই ৩৮ বিজিবি সীমান্ত এলাকার সব নৌ চেকপোস্টকে সতর্ক অবস্থায় থাকার নির্দেশ দেয়।
পরবর্তীতে বিকেল আনুমানিক সাড়ে ৩টার দিকে বলিপাড়া ব্যাটালিয়নের টেন্ডমুখ নৌ চেকপোস্টে সন্দেহভাজন দুটি ইঞ্জিনচালিত নৌকাকে থামিয়ে তল্লাশি চালানো হয়। তল্লাশিতে ১৯টি বস্তায় রাখা মোট ১ হাজার ৫০০ পিস মশারি এবং একটি বস্তায় ১০৮টি নৌকার প্রপেলার উদ্ধার করা হয়।
পাচারের কাজে ব্যবহৃত দুটি ইঞ্জিনচালিত নৌকাও জব্দ করা হয়।
এ সময় নৌকায় থাকা পাঁচজনকে আটক করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক ব্যক্তিরা স্বীকার করেন, উদ্ধারকৃত মালামালগুলো মায়ানমারে পাচারের উদ্দেশ্যেই পরিবহন করা হচ্ছিল।
পরবর্তীতে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আটক পাঁচজন ও জব্দকৃত মালামাল থানচি থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
সীমান্ত সংশ্লিষ্টরা জানান, থানচি ও পার্শ্ববর্তী সীমান্ত এলাকা নদীনির্ভর হওয়ায় পাচারকারীরা প্রায়ই নৌপথ ব্যবহার করে থাকে। বিশেষ করে শীত মৌসুমে মশারি, নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ও বিভিন্ন যন্ত্রাংশ পাচারের প্রবণতা বৃদ্ধি পায়। তবে সাম্প্রতিক সময়ে বিজিবির নজরদারি ও টহল জোরদারের ফলে এসব অপচেষ্টা অনেকাংশেই ব্যাহত হচ্ছে।
বলিপাড়া জোন (৩৮ বিজিবি)-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. ইয়াসির আরাফাত হোসেন, ‘সীমান্ত এলাকায় অবৈধ পাচার, চোরাচালান ও অপরাধ দমনে বিজিবি নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে। সীমান্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে ভবিষ্যতেও এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।’
স্থানীয়দের মতে, বিজিবির এই তৎপরতা সীমান্ত এলাকার নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। একই সঙ্গে অবৈধ পাচার রোধে প্রশাসনের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের সচেতনতা বৃদ্ধি করাও জরুরি বলে মনে করছেন তারা।
টিজে/টিকে