বলিউডের স্বর্ণযুগে রাজেশ খন্না মানেই ছিল একচ্ছত্র আধিপত্য। চোখের কোণ থেকে তাকানো, সংলাপ বলার ভঙ্গি কিংবা হালকা হাসি—সব মিলিয়ে তিনি ছিলেন সময়ের অপ্রতিদ্বন্দ্বী সুপারস্টার। সেই রাজেশ খন্নার সঙ্গেই অল্প বয়সে বিয়ে হয় ডিম্পল কাপাডিয়ার। বয়সের বিস্তর ফারাক, খ্যাতির ভারসাম্যহীনতা আর ক্ষমতার অদৃশ্য রেখা—সব মিলিয়ে এই দাম্পত্যের ভেতরে জমেছিল বহু না বলা গল্প।
ডিম্পল তখন মাত্র ষোলো। প্রেম, বিয়ে আর সংসার সবকিছুই খুব দ্রুত ঘটে যায়। বাইরে থেকে ঝলমলে মনে হলেও ভিতরে ভিতরে সম্পর্কের সমীকরণ যে কতটা জটিল ছিল, তা ডিম্পল পরে নানা সাক্ষাৎকারে ইঙ্গিত দিয়েছেন। সেই তিক্ততার শুরু নাকি হয়েছিল এক ছোট্ট পরামর্শকে ঘিরেই।
১৯৯০ সালে এস এ চন্দ্রশেখরের পরিচালনায় ‘জয় শিব শঙ্কর’ ছবির শুটিং চলাকালীন রাজেশ খন্না শারীরিকভাবে অসুস্থ ছিলেন। তবু মিডিয়ার সামনে এসে ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে ভক্তদের উদ্দেশে হাত নাড়তে হতো তাঁকে। সেই মুহূর্তে স্বামীর পাশে দাঁড়িয়ে ডিম্পল নরম স্বরে একটি কথা বলেছিলেন সোজাসুজি না তাকিয়ে পাশ ফিরে দাঁড়ালে নাকি তাঁকে আরও ভালো দেখাবে।
এই সামান্য কথাতেই নাকি মুহূর্তে বদলে যায় পরিস্থিতি। রাজেশ খন্না ক্ষুব্ধ হয়ে ডিম্পলের দিকে ফিরে প্রশ্ন করেন, এখন তুমি আমাকে শেখাবে? ডিম্পলের কথায়, সেই মুহূর্তে তিনি এতটাই ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন যে হাত জোড় করে ক্ষমা চাইতে হয়েছিল। তাঁর মতে, ওই একটি বাক্যই যেন তাঁদের দাম্পত্যে ক্ষমতার অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়েছিল।
এই ঘটনাই ডিম্পলের মনে প্রথমবার আশঙ্কা জাগিয়েছিল, তাঁদের সম্পর্ক হয়তো দীর্ঘস্থায়ী হবে না। ছোট একটি মুহূর্ত, কিন্তু তার অভিঘাত ছিল গভীর। তারকা আর স্ত্রীর মধ্যেকার সূক্ষ্ম দূরত্ব, অভিজ্ঞতা আর আত্মসমর্পণের ভারসাম্য সবকিছু একসঙ্গে ধরা পড়েছিল সেই কথোপকথনে।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে রাজেশ-ডিম্পলের সম্পর্ক নানা মোড় নিয়েছে, ভেঙেছে সংসার, থেকেছে দূরত্ব। তবু এই ছোট্ট ঘটনার মধ্যেই যেন লুকিয়ে ছিল তাঁদের দাম্পত্য জীবনের ভবিষ্যৎ ছায়া।
এমকে/টিএ