বলিউডের ইতিহাসে ‘সুপারস্টার’ তকমাটি প্রথম রাজেশ খান্নার পাশেই বসেছিল। কিন্তু রূপালি পর্দার সেই বর্ণিল জীবনের আড়ালে শেষ দিনগুলো ছিল চরম বিষাদ আর একাকীত্বের। জীবনের অন্তিম লগ্নে এসে এই অভিনেতা এতটাই ভেঙে পড়েছিলেন যে, প্রেমিকার কাছেই মুক্তি চেয়েছিলেন ।
সফলতার তুঙ্গে থাকা কালীন রাজেশ খান্নাকে ডাকা হতো ‘কাকাজি’ নামে। ‘আরাধনা’ থেকে ‘অমর প্রেম’ টানা ব্লকবাস্টার হিট দিয়ে তিনি নিজেকে নিয়ে গিয়েছিলেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। এমনকি খোদ অমিতাভ বচ্চনও একসময় মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকতেন রাজেশের পর্দার জাদুর দিকে। কিন্তু আকাশছোঁয়া সেই সাফল্যের মধ্যেই লুকিয়ে ছিল পতনের বীজ।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে রাজেশের শেষ জীবনের ছায়াসঙ্গী অনিতা আডবাণী তুলে ধরেছেন সেই যন্ত্রণার কথা। অনিতার বয়ানে উঠে এসেছে এক অসহায় সুপারস্টারের আর্তনাদ। অসুস্থ অবস্থায় শয্যাশায়ী রাজেশ প্রায়ই অনিতাকে বলতেন, ‘আমি এই অবস্থা আর সহ্য করতে পারছি না। এর চেয়ে আমাকে মেরে ফেলো।’
রাজেশ খান্নার জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিল তার বিলাসবহুল বাংলো ‘আশীর্বাদ’। তার স্বপ্ন ছিল, মৃত্যুর পর এই বাড়িটি হবে একটি মিউজিয়াম, যেখানে সংরক্ষিত থাকবে তার রাজকীয় ইতিহাসের স্মৃতি। জীবনের শেষ মুহূর্তে এক ক্রেতা যখন ১৫০ কোটি টাকায় বাড়িটি কেনার প্রস্তাব নিয়ে আসেন, তখন ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন তিনি। মানসিকভাবে ভেঙে পড়লেও টাকার মোহে নিজের ‘স্বপ্ন’ বিক্রি করতে রাজি হননি এই কিংবদন্তি।
পেশাদার জীবনের ব্যর্থতা আর স্ত্রী ডিম্পল কাপাডিয়ার সঙ্গে তিক্ত সম্পর্কের টানাপোড়েন রাজেশের ব্যক্তিগত জীবনকে ছারখার করে দিয়েছিল। যদিও শেষ সময়ে ডিম্পল ও তার দুই মেয়ে দেখা করতে আসতেন, কিন্তু হৃদয়ের গভীরে জমে থাকা একাকীত্বের ক্ষত তাতে উপশম হয়নি। বলিউড সম্রাট থেকে এক নিঃসঙ্গ পথিক হিসেবে ২০১২ সালের ১৮ জুলাই বিদায় নেন রাজেশ খান্না, যার শেষ দিনগুলো ছিল কেবলই দীর্ঘশ্বাসের গল্প।
এসএন