নতুন বছর মানেই নতুন শুরুর আশা। অতীতকে পেছনে ফেলে স্বচ্ছ আর শান্ত জীবনের পথে হাঁটার সংকল্প। কিন্তু সেই সংকল্প সব সময় সমাজের চোখে গ্রহণযোগ্য হয় না। নতুন বছরের প্রথম দিনেই উত্তরপ্রদেশের মথুরায় ঘটে যাওয়া এক ঘটনায় তা আবারও স্পষ্ট হয়ে উঠল।
পয়লা জানুয়ারিতে মথুরার একটি পানশালায় অনুষ্ঠান করার কথা ছিল অভিনেত্রী সানি লিওনির। আয়োজনের খবর ছড়িয়ে পড়তেই উত্তাল হয়ে ওঠে মথুরার সাধুসন্ত ও বিভিন্ন ধর্মীয় সংগঠন। প্রতিবাদের মুখে শেষ পর্যন্ত বাতিল হয়ে যায় নতুন বছরের সেই অনুষ্ঠান।
খবর প্রকাশ্যে আসার পর একাধিক ধর্মীয় সংগঠন প্রকাশ্যে আপত্তি তোলে। উদ্যোক্তাদের উপর চাপ সৃষ্টি করা হয় অনুষ্ঠান বাতিলের জন্য। তাদের দাবি, মথুরা ধাম শুধুই একটি শহর নয়, এটি এক পবিত্র তীর্থভূমি, যার সঙ্গে জড়িয়ে আছে বহু শতাব্দীর ধর্মীয় ঐতিহ্য। এই ব্রজভূমিতে এমন একজন অভিনেত্রীর অনুষ্ঠান আয়োজন করলে তা ভূমির পবিত্রতা নষ্ট করবে এবং শ্রীকৃষ্ণের অবমাননা হবে বলেও অভিযোগ তোলা হয়। দ্রুতই এই প্রতিবাদ তীব্র আকার নেয়।
চাপের মুখে পড়ে শেষ পর্যন্ত অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তারা পিছু হটতে বাধ্য হন। বাতিল করা হয় সানি লিওনির নতুন বছরের অনুষ্ঠান। মথুরার মতো ধর্মীয় শহরে বিনোদনমূলক অনুষ্ঠানের সীমা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে।
এক সময় নীল ছবির জগতের পরিচিত মুখ সানি লিওনি পরে মূলধারার হিন্দি সিনেমায় জায়গা করে নেন মহেশ ভাট-এর ছবির মাধ্যমে। টেলিভিশনের জনপ্রিয় রিয়েলিটি শো বিগ বস-এ অংশ নিয়ে তিনি আরও বড় পরিসরে পরিচিত হয়ে ওঠেন দর্শকদের কাছে। অতীতকে পেছনে ফেলে স্বাভাবিক পারিবারিক জীবনে ফেরার চেষ্টা, স্বামী ও তিন সন্তানকে নিয়ে তাঁর সংসার, সব মিলিয়ে অনেকেই ভেবেছিলেন বিতর্কের অধ্যায় বুঝি শেষ।
কিন্তু ব্রজভূমির এই ঘটনায় আবারও মনে করিয়ে দিল, সমাজের একাংশের চোখে অতীত কখনোই পুরোপুরি মুছে যায় না। সময় বদলায়, জীবন বদলায়, কিন্তু দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন সব ক্ষেত্রে সমান গতিতে আসে না। মথুরার এই ঘটনা তাই শুধু একটি অনুষ্ঠান বাতিলের খবর নয়, বরং গ্রহণযোগ্যতা আর ক্ষমার সীমা নিয়েও নতুন করে প্রশ্ন তুলে দিল।