কায়সার কামাল

রাষ্ট্রপতির ক্ষমা নয়, আদালতে নির্দোষ প্রমাণিত হন খালেদা জিয়া

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর খালেদা জিয়ার ‘জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট’ মামলার সাত এবং ‘জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট’ মামলার ১০ বছরের কারাদণ্ড রাষ্ট্রপতি মওকুফ করেছিলেন। কিন্তু বিএনপি চেয়ারপারসন রাষ্ট্রপতির ক্ষমায় মুক্ত থাকতে রাজি হননি। তিনি আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণিত করার সিদ্ধান্ত নেন। শেষ পর্যন্ত দেশের সর্বোচ্চ আদালতে দুটি মামলাতেই বেকসুর খালাস পান তিনি।

মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) খালেদা জিয়ার আইনজীবী ও বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতির মওকুফের পরও তারা কেন আপিল শুনানি করেছেন, তা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন ছিল। কারণ, রাষ্ট্রপতির মওকুফে ‘ক্ষমার’ বিষয়টি যুক্ত থাকে, কিন্তু খালেদা জিয়া বিশ্বাস করতেন তিনি কোনো অপরাধ করেননি। তাই তিনি ক্ষমা চাননি এবং আইনজীবীদের নির্দেশ দিয়েছিলেন আইনি পথেই এটি মোকাবিলা করতে।

জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের মহাসচিব কায়সার কামাল বলেন, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। ৬ আগস্ট রাষ্ট্রপতি নির্বাহী আদেশে খালেদা জিয়াকে সব দণ্ড থেকে পুরোপুরি মুক্তি দেন। কিন্তু তিনি দেশের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে সর্বোচ্চ আদালতের মাধ্যমে খালাস পান। ২০১৭ সালের ১৯ আগস্ট থেকে জব্দ করা ব্যাংক অ্যাকাউন্টও পরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড দ্বারা অবরোধমুক্ত করা হয়।

৮০ বছর বয়সী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস এবং চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছিলেন। তিনি উন্নত চিকিৎসার জন্য গত ৭ জানুয়ারি রাতে কাতারের আমিরের পাঠানো বিশেষ বিমানের মাধ্যমে ঢাকা ত্যাগ করেন এবং ৮ জানুয়ারি লন্ডনে পৌঁছান। চিকিৎসা শেষে গত ৬ মে তিনি দেশে ফেরেন।

গত ২৩ নভেম্বর শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে খালেদা জিয়াকে দ্রুত রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। তারপর থেকে সেখানেই তার চিকিৎসা চলছিল। তাকে বিদেশে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হলেও শেষ পর্যন্ত স্বাস্থ্যের অবনতির কারণে নেওয়া যায়নি। এভারকেয়ারে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার সকালে তিনি মারা যান।

এবি/টিকে

Share this news on:

সর্বশেষ

img
দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা গোপালগঞ্জে, বিপর্যস্ত জনজীবন Dec 31, 2025
img
হলফনামায় বিবরণ দিলেন সারজিস আলম Dec 31, 2025
img
শেষবার গুলশানের বাসায় খালেদা জিয়া Dec 31, 2025
img
১ জানুয়ারি থেকে বন্ধ হচ্ছে অতিরিক্ত মোবাইল সিম Dec 31, 2025
img
ঢাকায় আজ সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৩.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস Dec 31, 2025
img
ইয়েমেনে সৌদি হামলার পর আমিরাত সেনা প্রত্যাহার শুরু Dec 31, 2025
img
অন্যায়ের সঙ্গে আপস না করার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত বেগম খালেদা জিয়া: ড. কামাল Dec 31, 2025
img
উলভারহ্যাম্পটনের বিপক্ষে ১-১ এ ড্র ইউনাইটেডের Dec 31, 2025
img
বেগম জিয়া নিথর দেহে শেষবার ফিরছেন গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় Dec 31, 2025
img
ম্যাডাম আমাকে মিনু বলে ডাকতেন: মিজানুর রহমান মিনু Dec 31, 2025
img
আজ সাধারণ ছুটি Dec 31, 2025
img
এবার খল নায়িকার চরিত্রে কারিনা কাপুর! Dec 31, 2025
img
খালেদা জিয়ার জানাজা-দাফন ঘিরে নিরাপত্তায় ২৭ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন Dec 31, 2025
img
কক্সবাজারে থার্টি ফার্স্ট নাইট : আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় প্রশাসনের কঠোর বিধি-নিষেধ Dec 31, 2025
img
নতুন করে নিষেধাজ্ঞা দিল যুক্তরাষ্ট্র Dec 31, 2025
img
বায়ুদূষণের শীর্ষে লাহোর, ঢাকার অবস্থান ১২তম Dec 31, 2025
img
রাজশাহীতে মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রার রেকর্ড ৮.৪ ডিগ্রি Dec 31, 2025
img
ফের জুটি বাঁধছেন শন-সৃজলা! Dec 31, 2025
img
খালেদা জিয়ার রুহের মাগফিরাত কামনায় ছারছীনা পীরের দোয়া Dec 31, 2025
img
২য় বিয়ে নিয়ে জল্পনার অবসান ঘটালেন মালাইকা! Dec 31, 2025