লকডাউনে কমে গেছে পৃথিবীর কম্পন

করোনাভাইরাস মহামারির কারণে বিশ্বজুড়ে শত শত কোটি মানুষ এখন কাজকর্ম ছেড়ে ঘরে বসে আছে। এক সময়ের জনাকীর্ণ রাস্তা এখন খালি। রেল বন্ধ, চলছে না গাড়িঘোড়াও। লাখ লাখ ভারি শিল্প-কারখানা এখন বন্ধ। মাইলের পর মাইল রাস্তায় হাতেগোনা কিছু মানুষ পাওয়া যায়। করোনাভাইরাস রুখতে বিশ্বজুড়ে এই লকডাউনের ফলে পৃথিবীর গতিবিধিও বদলে গেছে।

গবেষকদের একটি দল বলছে, মানবসৃষ্ট ভূকম্পন বিশ্বজুড়ে ৫০ শতাংশ কমে গেছে। প্রাকৃতিক উৎস থেকে বিজ্ঞানীরা এখন পরিষ্কারভাবেই সিসমিক সিগন্যাল শুনতে পাচ্ছেন। এসব প্রাকৃতিক উৎসের মধ্যে রয়েছে ছোট ভূকম্পন ও আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত। খবর সিএনএন

পৃথিবীর কাঁপুনি যে কমে গেছে তা প্রথম লক্ষ্য করেন বেলজিয়ামের ব্রাসেলসে অবস্থিত রয়্যাল অবজারভেটরির বিজ্ঞানী টমাস লিকক। অর্থাৎ গাড়িঘোড়া, রেল, বাস ও মানুষের দৈনন্দিন জীবনের চলাচলের কম্পন আগের থেকে অনেক কম প্রত্যক্ষ করেন তিনি। বলেন, ‍“লকডাউনের আগের তুলনায় ১-২০ হার্টস ফ্রিকোয়েন্সিতে (বড় একটি অর্গানের আওয়াজের যে ফ্রিকোয়েন্সি) ভূপৃষ্ঠের দুলুনি এখন অনেক কম।”

ব্রাসেলসের পর্যবেক্ষণ মতে, মার্চ মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে পৃথিবীর কম্পন ৩০ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যেতে দেখা যায়।

শুধু বেলজিয়াম নয়, পৃথিবীপৃষ্ঠের এই পরিবর্তন সারাবিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় ভূকম্পন কমার বিষয়টি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ২৬৮টি সিসমিক স্টেশন থেকে এই তথ্য গ্রহণ করা হয়েছে। সাধারণত মানবসৃষ্ট কম্পনের জন্য প্রাকৃতিক কম্পন রেকর্ড করতে পারে না এই স্টেশনগুলো।

প্যারিস ইন্সটিটিউট অব আর্থ ফিজিক্সের একজন গবেষক বলেছেন, ফ্রান্সের রাজধানীতে ভূকম্পন ‘নাটকীয় মাত্রায়’ কমে গেছে। যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেস শহরে কাঁপুনি কমে যাওয়ার মাত্রা দেখে বিস্মিত হয়েছেন ক্যাল টেক ইউনিভার্সিটির গবেষকরা।

নেপালের ভূকম্পবিদরাও একই প্রবণতা লক্ষ্য করেছেন। মার্চ ও এপ্রিলে ইউরোপসহ পুরো বিশ্ব শান্ত হতে শুরু করে। সে সময় থেকেই মানুষ ’স্টে হোম’ নির্দেশনা মানতে শুরু করেছিল বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। অনেক স্থানে লকডাউন তুলে নেয়ার পরও এই কম্পন খুব একটা বাড়েনি।

তাই অনেকে মনে করছেন, মানুষ এখনও বাড়ির বাইরে যেতে সাহস পাচ্ছে না। লকডাউনে যে ভূকম্পন কমেছে তাই নয়, প্রকৃতিও বদলে গেছে।

স্যাটেলাইটের চিত্রে দেখা গেছে, পরিবেশ দূষণের পেছনে যার বড় ভূমিকা রয়েছে সেই নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড গ্যাস এখন বাতাসে অনেক কম।

 

টাইমস/জিএস

Share this news on:

সর্বশেষ

img
বিশ্বে বায়ুদূষণে শীর্ষ শহর মানামা, ঢাকার অবস্থান ১৪তম Aug 19, 2025
img
নিম্নচাপের কারণে সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত Aug 19, 2025
img
দেশের ৭ অঞ্চলে দুপুরের মধ্যে ঝড়ের আভাস Aug 19, 2025
img
ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে চলমান বৈঠক থামিয়ে পুতিনকে ফোন করলেন ট্রাম্প Aug 19, 2025
img
আজকের পরীক্ষার মধ্য দিয়ে শেষ হচ্ছে এইচএসসির লিখিত পরীক্ষা Aug 19, 2025
img
রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধবিরতি নয়, স্থায়ী শান্তিচুক্তি চান ট্রাম্প Aug 19, 2025
img
ছাত্রদলকে সুবিধা দিতেই মনোনয়নপত্র গ্রহণের সময় বৃদ্ধি : বাগছাস Aug 19, 2025
img
এনবিআরের আরও ৫ কর্মকর্তা সাময়িকভাবে বরখাস্ত Aug 19, 2025
img
পদ্মা নদীতে তীব্র স্রোতে বালুবোঝাই বাল্কহেড ডুবি Aug 19, 2025
img
চমক রেখেই বাছাইপর্বের শেষ দুই ম্যাচের জন্য দল ঘোষণা করল আর্জেন্টিনা Aug 19, 2025
img
ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনা ছিল চমৎকার, তবে ‘সেরা’ নয় : জেলেনস্কি Aug 19, 2025
img
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৪ ঘণ্টা পর স্বাভাবিক হল ট্রেন চলাচল Aug 19, 2025
img
কৌশিকের বিশ্বাস, পুজোয় ফের সাফল্য আনবে শিবপ্রসাদের ‘রক্তবীজ ২’ Aug 19, 2025
img
১৯৪৬ এর বিভীষিকা নিয়ে আসছে বিবেক অগ্নিহোত্রীর ‘দ্য বেঙ্গল ফাইলস’ Aug 19, 2025
img
যশের নতুন সিনেমা ‘টক্সিক’ এ নাম লেখালেন রুক্মিণী বসন্ত Aug 19, 2025
img
সুনামগঞ্জে ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে আহত ৩১ Aug 19, 2025
img
মাহিন সরকার ডাকসু নির্বাচনে অনুমতি নেননি : এনসিপি Aug 19, 2025
img
রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ১৬৪২৯ মামলা প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া শুরু Aug 19, 2025
img
টকশো চলাকালেই বহিষ্কারের খবর জানলেন এনসিপি নেতা মাহিন Aug 19, 2025
img
বিএনপি নেতা ফজলুর রহমানকে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান Aug 19, 2025