ক্রমবর্ধমান নাইট্রাস অক্সাইডের নিঃসরণ জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিচ্ছে

বিশ্বজুড়ে দ্রুত বদলে যাচ্ছে জলবায়ু, এভাবে চলতে থাকলে ক্রমেই তা হুমকি হয়ে উঠবে জীববৈচিত্রের প্রতি। এরই মধ্যে সম্প্রতি গবেষকরা দাবি করেছেন ক্রমেই বেড়ে চলা নাইট্রাস অক্সাইডের নিঃসরণ জলবায়ু পরিবর্তনের হুমকি বাড়িয়ে দিচ্ছে।

গত ৭ অক্টোবর এ সংক্রান্ত গবেষণাপত্রটি ‘ন্যাচার’ জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের অওবার্ন ইউনিভার্সিটি কর্তৃক পরিচালিত এই গবেষণায় মোট ১৪টি দেশের ৪৮টি গবেষণা প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করেছে।

গবেষণায় দেখা গেছে, নাইট্রাস অক্সাইডের নিঃসরণ আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে চলেছে, এভাবে চলতে থাকলে বিশ্বের তাপমাত্রা শিল্প পূর্ববর্তী মাত্রার থেকে ৩ ডিগ্রী সেলসিয়াস বেড়ে যাবে। কিন্তু বিশ্বের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে ইন্টারগভরমেন্টাল প্যানেল অন ক্লাইমেট কন্ট্রোলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এই মাত্রা  ১.৫ থেকে ২ ডিগ্রী সেলসিয়াসের মধ্যে রাখতে হবে। কিন্তু এর বিপরীতে বর্তমানে নাইট্রাস অক্সাইড নিঃসরণের পরিমাণ শিল্প পূর্ববর্তী সময়ের তুলনায় প্রায় ২৭ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।

ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ক্লাইমেট এন্ড গ্লোবাল চেঞ্জ রিসার্চের পরিচালক প্রফেসর হানকিন টিয়ান এই গবেষণাপত্রটির সহ-লেখক। তিনি বলেন, “বায়ুমণ্ডলে নাইট্রাস অক্সাইড বৃদ্ধির প্রভাবশালী নিয়ামক কৃষি খাত থেকে এসেছে এবং প্রাণীদের খাদ্য সরবরাহের ক্রমবর্ধমান চাহিদা বিশ্বব্যাপী নাইট্রাস অক্সাইড নিঃসরণকে আরও বাড়িয়ে তুলবে।”

কৃষি খাতে নাইট্রোজেন সারের ব্যবহার বায়ুমণ্ডলে নাইট্রাস অক্সাইড বৃদ্ধির জন্য অনেকাংশেই দায়ী। নাইট্রাস অক্সাইড গ্যাসটি কার্বন-ডাই-অক্সাইডের তুলনায় প্রায় ৩০০ গুণ শক্তিশালী এবং এটি বায়ুমণ্ডলে ১০০ বছর পর্যন্ত টিকে থাকতে পারে।

সমীক্ষায় দেখা গেছে, বিশ্বব্যাপী নাইট্রাস অক্সাইড নির্গমনে এগিয়ে রয়েছে পূর্ব এশিয়া, দক্ষিণ এশিয়া, আফ্রিকা এবং দক্ষিণ আমেরিকা। বিশেষত ব্রাজিল, চীন এবং ভারতের মতো উদীয়মান অর্থনীতিগুলিতে নাইট্রাস অক্সাইড  নির্গমন হার সর্বাধিক বৃদ্ধি পেয়েছে। কারণ এসব দেশে ফসলের উৎপাদন এবং পানিসম্পদের সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্যদিকে ইউরোপের কৃষি ও শিল্পখাতে এই ক্ষতিকর গ্যাসটির নির্গমন হ্রাস ঘটেছে।

গবেষকদের পরামর্শ, বিশ্বব্যাপী জলবায়ুর অস্বাভাবিক পরিবর্তন ঠেকাতে অবিলম্বে নাইট্রাস অক্সাইডের নির্গমন কমিয়ে আনতে হবে।

তথ্যসূত্র: সাইন্স ডেইলি

 

টাইমস/এনজে/এসএন

Share this news on:

সর্বশেষ

img
নারীর মুক্তি ও সমতার জন্য অন্তর থেকে পরিবর্তন আনতে হবে : মঈন খান Aug 18, 2025
img
আজ দেশে কত দামে স্বর্ণ ও রুপা বিক্রি হচ্ছে? Aug 18, 2025
img
খেলাধুলায় যুক্ত থাকলে যুবসমাজ বিপথগামী হবে না : সেনা প্রধান Aug 18, 2025
img
আসন্ন এশিয়া কাপে ভারতকে হারাবে পাকিস্তান, বিশ্বাস আকিব জাভেদের Aug 18, 2025
img
প্রথমবার সিনেমার নায়িকা চরিত্রে রুনা খান Aug 18, 2025
img
ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে যোগ দিতে ওয়াশিংটনে যাচ্ছেন জেলেনস্কি Aug 18, 2025
img
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় একদিনে প্রাণ গেল আরও অন্তত ৪৭ জনের Aug 18, 2025
img
১ যুগ পর নাসিরুদ্দিনের অপমানের জবাব দিলেন ফারহান Aug 18, 2025
img
বাহরাইনের বিপক্ষে আজ মাঠে নামছে বাংলাদেশ Aug 18, 2025
img
'ইউক্রেনকে শক্তিশালী নিরাপত্তা নিশ্চয়তা দিতে রাজি পুতিন' Aug 18, 2025
img
জাতীয় দল থেকে বাদ পড়লেন সুনীল ছেত্রী Aug 18, 2025
img
বিশ্বে বায়ুদূষণে শীর্ষ শহর রিয়াদ, ঢাকার অবস্থান ২৭তম Aug 18, 2025
img
দুপুরের মধ্যে দেশের ৭ জেলায় ৬০ কি.মি. বেগে ঝড়ের পূর্বাভাস Aug 18, 2025
img
মাত্র তিন দিনেই ৭ কোটি রুপির ঘরে ‘ধূমকেতু’ Aug 18, 2025
img
ঢাকায় হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা, আকাশ থাকবে আংশিক মেঘলা Aug 18, 2025
img
টাঙ্গাইলে যুবলীগ নেতাসহ গ্রেপ্তার ৩ Aug 18, 2025
img
জয় দিয়ে নতুন মৌসুম শুরু করল পিএসজি Aug 18, 2025
img
চট্টগ্রামে পিকআপ ও কাভার্ডভ্যানের সংঘর্ষে প্রাণ গেল ৪ জনের, আহত ৩ Aug 18, 2025
img
নির্বাচনের হাওয়া সারা বাংলাদেশে বইছে : গিয়াস উদ্দিন Aug 18, 2025
img
জেআরপিতে ৪৫৫ মিলিয়ন ডলারের প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে : পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় Aug 18, 2025