মহাকাশচারীদের অন্যতম সঙ্গী কনডম, কিন্তু কেন?

একসময় মহাকাশচারীদের অন্যতম সঙ্গী ছিল কনডম। তবে যৌন মিলন বা আত্মতৃপ্তির জন্য নয় মহাকাশ ভ্রমণে কনডমের কাজ ছিল মুত্র সংগ্রহ করা। প্রথমদিকে মহাকাশ ভ্রমণে যাওয়া নভোচারীদের মুত্র ব্যবস্থাপনায় এটিকেই সবচেয়ে বিজ্ঞানসম্মত সমাধান বলে মনে করতেন গবেষকরা। 

নাসার পুরোনো মিশনগুলোর দিকে তাকালে দেখা যায়, মহাকাশ যানের ভেতর ওজনহীন অবস্থায় শরীরের তরল নির্গমন বা মুত্র ত্যাগ একটি বড় চ্যালেঞ্জ। আর সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আবিষ্কার করা হয় ‘কন্ডোম ক্যাথেটার’। 

এটি রবারের তৈরি এক ধরনের ডিভাইস যা দেখতে অনেকটা কন্ডোমের মতো। এটি পুরুষ মহাকাশচারীদের পুরুষাঙ্গে পরিয়ে দেয়া হতো। একটি টিউবের মাধ্যমে সেটি যুক্ত থাকতো ইউরিন কালেকশন ডিভাইসে।
 
কিছুদিনের পরীক্ষায় এই ডিভাইস মহাকাশচারীদের আস্থা অর্জন করে নেয়। মহাকাশযানের ভেতর তাদের মূত্র ভেসে বেড়াবে না এটিই ছিল সবচেয়ে বড় স্বস্তি। তবে মজার বিষয়, নাসা প্রথমে ডিভাইসটি ‘ছোট’, ‘মাঝারি’ ও ‘বড়’ সাইজে আনলেও বেশিরভাগ মহাকাশচারী চাইতেন ‘বড়’ ডিভাইসটি। তাদের দাবি ছিল, ছোট কিংবা মাঝারি ডিভাইসে তাদের পুরুষাঙ্গ জায়গা পাচ্ছে না। 

এমনকি যাদের বড় ডিভাইসদের প্রয়োজন ছিল না, তারাও সেটিই চাইতেন। পরে এক মহাকাশ প্রকৌশলী মজা করে বলেছিলেন, ‘সবাই জানে, কেউই মিডিয়াম নিতে চায় না। ছোট পুরুষাঙ্গের কারণে কেউ হাসির পাত্র হতে চায় না।’

ব্যতিক্রমী এই ডিভাইস ব্যবহারের সময় মাঝেমধ্যে ফিটিংয়েও সমস্যাও দেখা দিত। একাধিক মিশনে লিক হয়ে গোটা ক্যাপসুলে মূত্র ভেসে থাকার মতো ঘটনাও ঘটে কয়েকবার। এরপর থেকে কনডমের আদলে তৈরি মূত্র সংগ্রাহকের বিকল্প খুঁজতে থাকে নাসা। 

ধীরে ধীরে উন্নত স্পেস টয়লেট প্রযুক্তি চালু করে এই মহাকাশ গবেষণা সংস্থা। যেখানে আর কন্ডোমের মতো ডিভাইসের প্রয়োজন পড়েনি। তবে কথায় আছে, বিজ্ঞানে লজ্জা নেই। মহাকাশে বেঁচে থাকার জন্য যে প্রযুক্তি দরকার, তা যতই অদ্ভুত হোক—সেটি নিয়েই বাঁচতে হয়। আর তাই মহাকাশে ‘কন্ডোম’ ব্যবহারের গল্প আজও রয়ে গেছে বিজ্ঞানের এক মজার গল্প হিসেবে।


এসএস/টিএ

Share this news on:

সর্বশেষ

img
৩ মন্ত্রণালয়ের ৩ সচিবকে বদলি Oct 12, 2025
img
আহাদের ৫ জনপ্রিয় ওয়েব সিরিজ: ‘এহদ-এ-ওয়াফা’ থেকে ‘মীম সে মোহাব্বত’ Oct 12, 2025
img
৫ দফা দাবি আদায়ে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা জামায়াতে ইসলামীর Oct 12, 2025
img
শেরপুর-ঢাকা রুটে বাস চলাচল বন্ধ, ভোগান্তিতে যাত্রীরা Oct 12, 2025
img
বিশ্বকাপে জায়গা পেতে জটিল সমীকরণের মুখে বাংলাদেশ Oct 12, 2025
img
যেখানে-সেখানে থামা বন্ধে বাসে আসছে কাউন্টারভিত্তিক ব্যবস্থা Oct 12, 2025
img
‘গ্লোবাল স্টার অ্যাওয়ার্ড’ পেলেন অভিনেত্রী হানিয়া আমির Oct 12, 2025
img
লজ্জার হারের পর বাছাইপর্বে অনিশ্চিত মিরাজ বাহিনী Oct 12, 2025
img
উত্তর কোরিয়ার সাথে কৌশলগত সহযোগিতা বাড়াতে প্রস্তুত চীন : রিপোর্ট Oct 12, 2025
img
পরোয়ানাভুক্ত সেনা কর্মকর্তাদের বিচারের ক্ষমতা রয়েছে ট্রাইব্যুনালের : তাজুল ইসলাম Oct 12, 2025
img
শ্বশুরের জন্মদিনে ঐশ্বরিয়ার শুভেচ্ছা বার্তা Oct 12, 2025
img
টোল আদায়ে অনিয়মের অভিযোগে হাসিনাসহ ১৭ জনের নামে মামলা Oct 12, 2025
img
আফগানিস্তানের সঙ্গে সীমান্ত বন্ধ করল পাকিস্তান Oct 12, 2025
img
আন্দোলনরত শিক্ষকদের কর্মবিরতির ডাক Oct 12, 2025
img
শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশের লাঠিচার্জ ফ্যাসিবাদের বহিঃপ্রকাশ : সাইফুল হক Oct 12, 2025
img

দাবি পাকিস্তানের

আফগানিস্তানের ২০০ জনের বেশি সৈন্য ও যোদ্ধা নিহত Oct 12, 2025
img
ডেঙ্গুতে একদিনে প্রাণ গেল ৫ জনের, হাসপাতালে ভর্তি ৯৫৩ Oct 12, 2025
img
ভবিষ্যৎ ‘ফেভ ফোরের’ নাম জানালেন ভারতের সাবেক ব্যাটার Oct 12, 2025
img
ফলোঅনে পড়েও লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে ক্যারিবীয়রা Oct 12, 2025
img
মেসিদের ভারত সফর ঘিরে শঙ্কা বাড়ছে Oct 12, 2025