গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ীতে শ্রমিকদের আন্দোলনের মুখে দুটি পোশাক কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।
বুধবার (৩০ এপ্রিল) সকাল ৮টার দিকে কারখানা দুটির প্রধান ফটকে কারখানা বন্ধ সংক্রান্ত নোটিশ সাঁটিয়ে দেওয়া হয়।
এদিকে কারখানা বন্ধের নোটিশ দেখে শ্রমিকদের মাঝে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে। বন্ধ কারখানা দুটি হলো- এম এম নিটওয়্যার লিমিটেড ও মামুন নিটওয়্যার লিমিটেড।
এম এম নিটওয়্যার লিমিটেডের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. মনোয়ার হোসেন জানান, অনির্দিষ্টকালের জন্য কারখানার গার্মেন্টস ডিভিশনের সকল সেকশন (শাখা) বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, একটি গুজব ছড়িয়েছে মালিকপক্ষের লোকজন ছাঁটাইকৃত এক শ্রমিককে মারধর করেছে, যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।
মামুন নিটওয়্যার লিমিটেড কারখানার সহকারী ব্যবস্থাপক (প্রশাসন ও মানব সম্পদ বিভাগ) আরিফুর রহমান স্বাক্ষরিত বন্ধের নোটিশে বলা হয়েছে, এম এম ও মামুন নিটওয়্যার লিমিটেডে কর্মরত সকল কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শ্রমিকদের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে, ২৯ এপ্রিল সকাল ৮টার সময় কারখানা চালু হলে গার্মেন্টস ডিভিশন, স্ক্রিন প্রিন্টিং ও এমব্রয়ডারি ডিভিশনের শ্রমিকরা কারখানায় প্রবেশ করে তাদের কাজের প্রতি ইচ্ছাকৃতভাবে অবাধ্যতা প্রকাশ করে। অবৈধভাবে কাজ বন্ধ করে উচ্ছৃংখলতা করে। কারখানা কর্তৃপক্ষ ওই সকল ডিভিশনের শ্রমিকদেরকে তাদের কাজ শুরু করার জন্য বারবার অনুরোধ করে। তারপরও যৌক্তিক কারণ ছাড়া কারখানাতে উপস্থিত হয়েও কাজ করা থেকে বিরত থাকে।
নোটিশে কারখানা কর্তৃপক্ষ আরও উল্লেখ করে, গার্মেন্টস ডিভিশনের শ্রমিকরা কারখানার অভ্যন্তরে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে ও একপর্যায়ে অস্থিতিশীল অবস্থা সৃষ্টি করে কারখানা থেকে তারা বেরিয়ে যায়। এর ফলে কারখানা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। শ্রমিকদের এরূপ আচরণ বে-আইনি ধর্মঘটের সামিল।
এমতাবস্থায় কারখানা কর্তৃপক্ষ বাধ্য হয়ে বুধবার সকাল ৮টা থেকে বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ (সংশোধনী - ২০১৩ ও ২০১৮) এর ১৩ (১) ধারা মোতাবেক অনির্দিষ্টকালের জন্য অত্র কারখানার গার্মেন্টস ডিভিশনের সকল সেকশন (শাখা) বন্ধ ঘোষণা করলো। পরবর্তিতে অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি হলে কারখানার উক্ত ডিভিশনের সেকশনগুলো খোলার তারিখ নোটিশের মাধ্যমে জানানো হবে।
এম এম নিটওয়্যার লিমিটেডের সুয়িং অপারেটর নিলুফা আক্তার বলেন, কারখানার কিছু শ্রমিককে ছাঁটাই করা হয়েছে। তাদের পাওনাও পরিশোধ করেছে। কিন্তু মালিক পক্ষের লোকজন ছাঁটাইকৃত কয়েকজন শ্রমিককে মারধর করায় শ্রমিকরা সঙ্গবদ্ধভাবে কাজ বন্ধ করে বসে থাকে। পরে মঙ্গলবার রাত ১০টার সময় শুনি কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কোনাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সালাউদ্দিন বলেন, কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হলেও শ্রমিকরা শান্ত রয়েছে। কিছু কিছু শ্রমিক সকালে কারখানা গেটে জড়ো হয়েছিল। এখনো পরিবেশ শান্ত রয়েছে। যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় পুলিশ প্রস্তুত রয়েছে।
এসএম/টিএ