সোমবার বিদায় নিচ্ছে স্কাইপ

একটা সময় ভিডিও কলিংয়ের সমার্থক ছিল স্কাইপ। অফিস মিটিং থেকে শুরু করে দূর দেশে থাকা প্রিয়জনের সঙ্গে দেখা করার একমাত্র ভরসা ছিল এই অ্যাপ। কিন্তু সময় বদলেছে, প্রযুক্তি আরও বহুদূর এগিয়েছে। সেই পরিবর্তনের তোড়ে অবশেষে দু’দশকের পথচলার পর বন্ধ হয়ে যাচ্ছে স্কাইপ।

মাইক্রোসফটের ঘোষণা অনুযায়ী, সোমবার থেকেই স্কাইপের পরিষেবা সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে যাবে। এই ঘটনার মধ্য দিয়ে প্রযুক্তি জগতের এক উজ্জ্বল অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি ঘটতে চলেছে।
২০০৩ সালে স্কাইপের যাত্রা শুরু। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই এটি বিশ্বের মানুষের কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। সেই সময় ইন্টারনেটের গতি ধীর হলেও স্কাইপ ভিডিও ও ভয়েস কলের মাধ্যমে বিপ্লব ঘটায়।

২০১১ সালে স্কাইপ কিনে নেয় মাইক্রোসফট, প্রায় ৮.৫ বিলিয়ন ডলার খরচ করে। স্কাইপ তখন প্রতিদিন ব্যবহার করতেন প্রায় ৩ কোটি ৬০ লাখ মানুষ। মাইক্রোসফট এরপর একাধিকবার অ্যাপটির ডিজাইন পরিবর্তন করে, নতুন ফিচার যেমন- স্কাইপ ক্লিপস ও এআই-ভিত্তিক কো-পাইলট যুক্ত করেও আগের জনপ্রিয়তা ধরে রাখতে পারেনি।

স্কাইপের পতনের মূল কারণ ছিল যোগাযোগ প্রযুক্তিতে হঠাৎ পরিবর্তন। হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুক, জুম, গুগল মিট—এসব প্ল্যাটফর্ম একদিকে যেমন সহজে ব্যবহারের সুযোগ দিয়েছে, অন্যদিকে দ্রুত উন্নত ফিচার এনে স্কাইপকে ছাপিয়ে গেছে।

মাইক্রোসফটেরই আরেক পরিষেবা টিমস এখন কর্পোরেট মিটিং ও অফিস কমিউনিকেশনের জনপ্রিয় মাধ্যম। ফলে ধীরে ধীরে স্কাইপ হয়ে পড়ে এক প্রকার অপ্রয়োজনীয়। শেষমেশ এই “প্রযুক্তি আইকন” বিদায়ের পথে।
স্কাইপ শুধু একটি অ্যাপ ছিল না। এটি ছিল দূরত্ব ঘোচানোর মাধ্যম। বিদেশে থাকা প্রিয়জনের সঙ্গে দেখা, দূরদর্শনের যুগে বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে ভিডিও আড্ডা, আন্তর্জাতিক ক্লায়েন্টের সঙ্গে ব্যবসার আলোচনা এই সবই স্কাইপের মাধ্যমে সম্ভব হয়েছিল এক সময়।

বহু মানুষের জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে আছে স্কাইপের স্মৃতি। তাই এই বিদায় কেবল একটি অ্যাপের নয়, প্রযুক্তির একটি আবেগঘন যুগেরও অবসান।

মাইক্রোসফট জানিয়েছে, বর্তমান ব্যবহারকারীদের চিন্তার কোনো কারণ নেই। সকল চ্যাট, কনট্যাক্ট ও তথ্য মাইক্রোসফট টিমস-এ স্থানান্তরের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। ব্যবহারকারীরা সহজেই তাদের তথ্য সেখানেই সংরক্ষণ করতে পারবেন।

প্রযুক্তির জগতে কিছু নাম ইতিহাস হয়ে যায়—স্কাইপ তারই একটি উদাহরণ। প্রায় ২২ বছরের ইতিহাস শেষে বিদায় নিচ্ছে এই অ্যাপ, রেখে যাচ্ছে স্মৃতিভরা যুগ, ডিজিটাল সংযোগের এক বৈপ্লবিক অধ্যায়।

এসএন 

Share this news on:

সর্বশেষ

img
সাউন্ড গ্রেনেডে উত্তেজনা, প্রেস ক্লাব থেকে সরে শহীদ মিনারে শিক্ষকরা Oct 12, 2025
img
রাতের অন্ধকারে ভোট চাই না : সিইসি Oct 12, 2025
img
এনসিপি দেশপ্রেমিক, গণতন্ত্রে বাধা হবে না : সিইসি Oct 12, 2025
img
আসিয়ান সম্মেলনে ট্রাম্পের সম্ভাব্য যোগদানের প্রতিবাদে কুয়ালালামপুরে বিক্ষোভ Oct 12, 2025
img

ট্রাইব্যুনালে চিফ প্রসিকিউটর

দানবীয় সরকারের পতনে চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান অনিবার্য হয়ে পড়েছিল Oct 12, 2025
img
'সৌদি আরব ও কাতারের হস্তক্ষেপের পর হামলা বন্ধ করা হয়েছে' Oct 12, 2025
img
আমরা সবাই কাঞ্চন ভাইয়ের পাশে আছি : শাকিব খান Oct 12, 2025
img
সেনাবাহিনীর উদ্যোগে প্রশংসা করলেন জামায়াতের আমির Oct 12, 2025
img
শাহরুখ, সালমান, আমির একসাথে এক মঞ্চে! Oct 12, 2025
img
পাকিস্তান সীমান্তে ট্যাংক-অস্ত্র নিচ্ছে আফগানিস্তান Oct 12, 2025
img
মাইলস্টোনের ৭১ শতাংশ শিক্ষক-শিক্ষার্থীর এখনও ঘুমে সমস্যা হচ্ছে Oct 12, 2025
img
দীপিকা পাডুকোন ভারতের প্রথম মানসিক স্বাস্থ্য দূত! Oct 12, 2025
img
রাজধানী থেকে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আ.লীগের ৭ নেতাকর্মী গ্রেপ্তার Oct 12, 2025
img
জাতীয় নির্বাচনে ১০০ আসনে লড়বে এবি পার্টি Oct 12, 2025
img
সারজিসকে ঘুমের ওষুধ খেতে বললেন সংগীতশিল্পী প্রিন্স মাহমুদ Oct 12, 2025
img
ভোটার এলাকা পরিবর্তন করেছেন প্রধান উপদেষ্টা Oct 12, 2025
img
উচ্ছেদের পরও ফের দখলে ঢামেকের ফুটপাত Oct 12, 2025
img
সমালোচনা থেকে শক্তি নেওয়া শিখেছে জাহ্নবী: শশাঙ্ক খাইতান Oct 12, 2025
img
ছেলে-মেয়ে সবাই দেশে, একা ‘সেফ এক্সিট’ নিয়ে কী করব : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা Oct 12, 2025
img
ময়মনসিংহে এনসিপি ও পরিবহন শ্রমিকদের দ্বন্দ্ব, বন্ধ মহাসড়কে বাস চলাচল Oct 12, 2025