পাকিস্তানে শীর্ষ পর্যায়ে বৈঠক শেষে আগামী বৃহস্পতিবার ভারত সফরে যাচ্ছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি। নয়াদিল্লিতে অবস্থিত ইরানি দূতাবাস এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
এআরওয়াই নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারত শাসিত কাশ্মীরে সাম্প্রতিক হামলার পর ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা বেড়ে যাওয়ায়, উভয় দেশের মধ্যে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছে ইরান। ইসলামাবাদে সফরকালে আরাগচি পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দারের সঙ্গে বৈঠকে ইরানের পক্ষ থেকে উত্তেজনা প্রশমনে ‘সদিচ্ছার প্রচেষ্টা’ অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন।
ইরানি কূটনীতিক জানান, ভারত-পাকিস্তান সংকট নিরসনে ‘ইরান প্রস্তুত তার শুভ উদ্যোগ কাজে লাগাতে’। সোমবার তিনি ইসলামাবাদে সরকারি সফরে ছিলেন।
ভারত ও ইরানের মধ্যে ঐতিহাসিকভাবে উষ্ণ সম্পর্ক রয়েছে, যদিও একইসঙ্গে নয়াদিল্লি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গেও নিরাপত্তা সহযোগিতা জোরদার করছে, যা তেহরানের সঙ্গে ওয়াশিংটনের বৈরিতার প্রেক্ষাপটে গুরুত্বপূর্ণ।
গত বছর ভারত ও ইরান চাবাহার বন্দর উন্নয়ন ও সরঞ্জামায়নের জন্য একটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করে, যা নিয়ে ওয়াশিংটন হুঁশিয়ারি দেয়, এই প্রকল্পে কাজ করা ভারতীয় প্রতিষ্ঠানগুলো নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়তে পারে।
পহেলগাঁওয়ে ২২ এপ্রিলের হামলার পর ভারত ও পাকিস্তান সফরকারী প্রথম কোনো শীর্ষস্থানীয় বিদেশি কূটনীতিক হিসেবে আব্বাস আরাগচি এই উদ্যোগ নিচ্ছেন। হামলায় ২৬ জন নিহত হন, যার জন্য ভারত পাকিস্তানকে দায়ী করেছে।
তবে ইসলামাবাদ এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে এবং এরপর থেকে কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখায় উভয় দেশের মধ্যে গুলি বিনিময়ের ঘটনাও ঘটেছে।
এর আগে সোমবার পাকিস্তান সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল সৈয়দ আসিম মুনীরের সঙ্গে বৈঠক করেন ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানায়, এই বৈঠকে আঞ্চলিক ভূ-রাজনৈতিক পরিবেশ নিয়ে গঠনমূলক আলোচনা হয়, বিশেষ করে নিরাপত্তা সংক্রান্ত চ্যালেঞ্জগুলো নিয়ে।
বৈঠকে পাকিস্তান-ইরান সীমান্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থাও পর্যালোচনা করা হয়, যাতে দ্বিপাক্ষিক সমন্বয় আরও জোরদার করা যায়।
জেনারেল আসিম মুনীর বলেন, পাকিস্তান ও ইরান দুইটি ভ্রাতৃপ্রতিম প্রতিবেশী রাষ্ট্র, যাদের সম্পর্ক ইতিহাস, সংস্কৃতি ও ধর্মীয় বন্ধনে গাঁথা। উভয় পক্ষই আঞ্চলিক বিষয়ে ইতিবাচক অগ্রগতির লক্ষ্যে যৌথভাবে কাজ করতে সম্মত হয় এবং দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা আরও জোরদার রাখার অঙ্গীকার করে।
এসএন